ভূমিকা

ফুটবল বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি জনপ্রিয় খেলা। যদিও এই খেলার জন্ম হয়েছিল চীনে। ফুটবল অত্যন্ত চমৎকার এবং উত্তেজনা পূর্ণ খেলা। তাই এই খেলা সকলের মন কেড়ে নিয়েছে। গ্রাম-গঞ্জ, শহর, নগর সবখানে ফুটবল খেলা হয়ে থাকে। তাই আমার প্রিয় খেলা হলো ফুটবল। প্রতি চার বছর পর পর বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সহ ইউরোপ – আমেরিকায় ও ফুটবল জাতীয় খেলা হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে।

পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকেই মানুষ অবসর বিনোদনের নিমিত্তে কিছু প্রতিযোগিতামূলক শারীরিক কসরত বা শরীরচর্চা আবিষ্কার করেছিল। আর এই ফুটবল খেলা শরীরচর্চা বা অন্যতম কসরত হিসেবেই পরিচিত। মানব মনের আনন্দদানের ও প্রশান্তির জন্য বর্তমানে বিশ্বে যত ধরনের খেলা প্রচলিত রয়েছে ফুটবল তাদের মধ্যে অন্যতম। ছোট থেকে বড় সবার কাছে এই খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয়।

ফুটবল খেলার ইতিহাস

ফুটবল খেলার জন্ম চীনে হলেও এই খেলার অনেক সুপ্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। ফুটবল খেলার অপর নাম হল “সাকার”। তবে চীনে ফুটবল খেলার জন্ম হলেও এই ফুটবল খেলা এখন পুরো বিশ্ববাসীর কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। পঞ্চদশ শতাব্দীতে আধুনিক ফুটবল খেলার উদ্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ৩৫০ খ্রিস্টাব্দে ফুটবল খেলার ইতিহাস শুরু হয়। তবে সর্বপ্রথম ফুটবল খেলার উদ্ভব ঘটে প্রাচীন গ্রিক যুগের রোমান সৈন্যদের মধ্যে।

গ্রিক ও রোমান সৈন্যরা বল দিয়ে পা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতেন। সেই খেলাগুলির কয়েকটির মধ্যে বর্তমান ফুটবলের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন বা ফিফার তথ্য মতে, কুজু খেলা থেকে আধুনিক ফুটবল খেলার জন্ম হয়েছে। কুজু শব্দের অর্থ হলো বলে লাথি মারা। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকেই ফুটবল খেলাটি সমগ্র বিশ্বে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে।

চীন ,জাপান এবং কোরিয়ার মতো দেশগুলিতেও কুজু খেলা নতুন নতুন পদ্ধতিতে বিকাশ লাভ করে এবং পরবর্তীতে এই খেলায় আস্তে আস্তে নিয়মের বিবর্তন ঘটে। অবশেষে বিংশ শতাব্দীর প্রথম নাগাদ ফুটবল খেলা বর্তমান রূপে পৌঁছায়।

ফুটবল খেলার উপাদান

ফুটবল খেলার অন্যতম উপাদান হল একটি বল। ফুটবল খেলার এই বলটি সাধারণত চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে এবং এর ব্যাস বাইশ ২২ সেন্টিমিটার। এছাড়াও ফুটবল খেলার আরেকটি অতিপ্রয়োজনীয় উৎপাদন হল ফুটবল মাঠ। তবে ফুটবল মাঠ বিভিন্ন আকার বিশিষ্ট হতে পারে। তবে ফুটবল মাঠ সাধারণত আয়তকার হয়ে থাকে। এছাড়াও ফুটবল খেলার আবশ্যকীয় দুইটি উপাদান হলো গোলপোস্ট।

আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলায় গোলপোস্ট নিয়ম ভেদে তৈরি করা হয় কিন্তু অন্যান্য সময় গোলপোস্টের আকার ভিন্ন হতে পারে। এছাড়াও ফুটবল খেলার জন্য প্রয়োজন দুটি দল এবং দুটি দলে ১১ জন করে মোট ২২ জন খেলোয়াড়। একটি ফুটবল ম্যাচে একজন রেফারি এবং দুইজন লাইন্স ম্যান থাকা আবশ্যক। প্রত্যেকটি খেলারই কিছু নির্দিষ্ট উপাদান রয়েছে।

তবে পৃথিবীতে যত খেলা রয়েছে সেসব খেলা যতগুলোর  উপাদান প্রয়োজন হয় ফুটবল খেলায় সবচেয়ে কম  উপাদান প্রয়োজন হয়। তাই একটি দেশ যতই দরিদ্র হোক না কেন ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করতে তাদের কোন আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।

ফুটবল খেলার মাঠের বর্ণনা

ফুটবল খেলার যত উপাদান রয়েছে তার মধ্যে অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান হল একটি আয়তাকার মাঠ। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ ছাড়া অন্যান্য ফুটবল খেলায় মাঠের আকার ভিন্ন হতে পারে। ফুটবল মাঠ হল একটি সমতল মাঠ। নির্দিষ্ট সীমারেখা দ্বারা মাঠের চারপাশে চিহ্নিত করা হয়। ফুটবল মাঠের দুই প্রান্তে থাকে দুইটি লম্বা গোল পোস্ট এবং একটি আদর্শ মাঠের প্রস্থ হল ৮০ হাত এবং দৈর্ঘ্য হল ১২0 হাত।

আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে ফুটবল মাঠের দৈর্ঘ্য ১০০ থেকে ১২০গজ এবং প্রস্থ ৫০ থেকে ৫৬ গজ হতে পারে। মাঠের দুই পাশে দুটি যে গোল পোস্ট থাকে তার উচ্চতা থাকে সাধারণত ৮ ফুট এবং একটি খুঁটি থেকে ওপর খুঁটির দূরত্ব হলো আট ৮ গজ। ফুটবল খেলায় যে বল ব্যবহার করা হয় তা সাধারণত চামড়া দিয়ে তৈরি।

 এবং এর ব্যাস হল ২২ তবে সাধারণত এর ওজন হয় ১৪ থেকে ১৬ আউন্স। ফুটবল মাঠের চারপাশে চার কোনায় চারটি পতাকা পোঁতা থাকে। গোল পোস্টে দুটি নেট বা জাল দেওয়া থাকে আর জালগুলোর কালার সাধারণত সাদা হয়ে থাকে। আর ফুটবলমাঠের চার পাশে থাকে চারটি পতাকা এবং সেগুলো আড়াআড়িভাবে পোতা থাকে।

ফুটবল খেলোয়াড়ের বর্ণনা

আমরা জানি, প্রতিটি খেলায় দুটি করে দল থাকে তেমনি ফুটবল খেলায় ও দুটি দল থাকে এবং প্রত্যেক দলে থাকে ১১ জন করে খেলোয়াড়।ফুটবল খেলা পরিচালনা করার জন্য থাকেন একজন রেফারি এবং মাঠের দুই পাশে থাকেন দুই জন লাইনস ম্যান। তবে ফুটবল খেলায় মোট ১১ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে দশ জন থাকেন খেলোয়াড় এবং একজন থাকেন গোল রক্ষক। এজন্যই হয়তো বলা হয়ে থাকে – একটি বল নিয়ে ২৫ জনের দৌড়াদৌড়ি আর দুইজনের কাড়াকাড়ি আর ভাল লাগেনা।

ফুটবল খেলার বর্ণনা

ফুটবল খেলা শুরু হওয়ার পূর্বে একটি বল মাঠের মাঝামাঝি স্থাপন করা হয় এবং দুটি দলের অধিনায়ক এবং রেফারি সেখানে অবস্থান করেন। এরপরে দুই দলের অধিনায়কের সম্মতিতে রেফারি টস করেন। টসে যে দল জিতে যায় সে দল আগে বলে আঘাত করে। রেফারি বাঁশিতে ফু দেয়ার সাথে সাথে বিজয়ী দল বলে আঘাত করে খেলা শুরু করেন। এরপর খেলোয়াড় তার নিজের অবস্থানে চলে যান। দুই পাশের দুই গোল পোস্টে দুইজন গোলরক্ষক থাকেন।

গোল রক্ষক খেলা চলাকালীন নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে তাকে অবস্থান করতে হয় এবং একমাত্র তিনি হাত দিয়ে বল ধরতে পারেন। আর বাকি ১০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে পাঁচ ৫ জন খেলোয়াড় সামনে ভাগে দাঁড়ান এবং এই পাঁচ ৫ জন খেলোয়ার কে বলা হয় ফরোয়ার্ড। আবার তিন ৩ জন পেছনে এবং দুই ২ জন খেলোয়াড় থাকে যাদের বলা হয় ফুল ব্যাক বা ডিফেন্স। আর গোলরক্ষক সারাক্ষণ গোল হওয়া থেকে তার নিজের দলকে রক্ষা করে।

ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয় পুরো ৯0 মিনিট। ৪৫ মিনিট খেলা হওয়ার পর দশ ১০ মিনিট বিরতি থাকে। ৯০ মিনিট খেলা শেষ হলে যে দল বেশি গোল করতে পারে সেই দল বিজয়ী হয়। তবে অনেক সময় যদি ৯০ মিনিটের মধ্যে কোন গোল সংঘটিত না হয় সে ক্ষেত্রে খেলা ১০ মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হয় অথবা প্লানটির মাধ্যমে  ফুটবল খেলা শেষ হয়।

ফুটবল খেলার পরিচালক বা রেফারি

ফুটবল খেলা পরিচালনা করার জন্য একজন পরিচালক থাকেন যাকে রেফারি বলা হয়। ফুটবল খেলা চলাকালীন সময়ে রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে প্রত্যেক খেলোয়াড় কে মেনে নিতে হয়। কোন খেলোয়াড় যদি নিয়ম ভঙ্গ করেন তাহলে রেফারি বাঁশি বাজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাকে সতর্ক করে দেন। আর রেফারিকে সহযোগিতা করার জন্য ফুটবল মাঠের দুই পাশে দুইজন লাইনস ম্যান থাকেন।

ফুটবল খেলার নিয়ম কানুন

এই পৃথিবীতে যতগুলো খেলা রয়েছে প্রত্যেক খেলারই নির্ধারিত কিছু নিয়ম রয়েছে। তেমনি ফুটবল খেলারও কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে যা প্রত্যেক খেলোয়াড় কে মেনে চলতে হয়। তবে ফুটবল খেলার এই নিয়ম নীতিগুলোকে ফুটবল নিয়ন্ত্রক বা ফিফা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। ফিফা ফুটবল খেলায় যে নিয়ম নীতি নির্ধারণ করে থাকেন সেগুলো হল-

  • অহেতুক কাউকে ধাক্কা বা লাথি মেরে ফেলে দেওয়া যাবে না আর যদি কেউ তা করে তাহলে রেফারি তাকে হলুদ বা লাল কার্ড দেখান
  • খেলা চলাকালীন সময়ে একমাত্র গোলরক্ষক ছাড়া কেউ হাত দিয়ে বল ধরতে পারবেন না আর যদি কেউ তা ধরে তাহলে তাকে হ্যান্ডবল ধরা হবে
  • গোল রকম নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে হাত দিয়ে বল ধরতে পারবেন
  • কেউ হাত দিয়ে বল ধরলে অর্থাৎ হ্যান্ডবল হলে বিপরীত পক্ষের দিকে ফ্রি কিক মারা হবে
  • বল সীমানার বাইরে চলে গেলে আউট ধরা হবে
  • যদি কোন খেলোয়ারকে লাল কার্ড দেখানো হয় তাহলে ওই প্রতিযোগিতায় আর ওই খেলোয়াড় খেলতে পারবেন না
  • কোন পক্ষ নিজ নিজ গোল পোস্টের সীমানায় হ্যান্ডবল করলে তা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে ফাউল করলে প্লান্টি দেওয়া হয়।
  • প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে যদি বল গোল পোস্টের সীমানার বাইরে চলে যায় তবে অপরপক্ষ কর না লাভ করে
  • কোন খেলোয়াড় যদি অন্য কোন খেলোয়ারকে পা লাগিয়ে ফেলে দেয় তাহলে তাকে ফাউল ধরা হবে
  • ১৯৩৫ সাল থেকে খেলোয়ারদের তিনটে জার্সি নাম্বার চালু করা হয়
  • ১৯৮৪ সাল থেকে কার্ড দেখানোর নিয়ম প্রচলিত হয়
  • বল যদি গোল পোস্টে প্রবেশ করে তাহলে সেটিকে গোল হিসাবে ধরা হবে

বর্তমান যুগ ও বিশ্ব ফুটবল

বর্তমান বিশ্বে আন্তর্জাতিক ফুটবল বা বিশ্বকাপ ফুটবল ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। ফিফার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সমগ্র পৃথিবীতে প্রায় ২00 টি দেশের ২৪ কোটিরও বেশি মানুষ নিয়মিত ফুটবল খেলার সঙ্গে যুক্ত আছেন। প্রতি চার ৪ বছর পর পর একবার কোন একটি নির্দিষ্ট দেশে সেরা ৩২ টি দেশকে নিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও ফুটবলের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক, মহাদেশীয় এবং বিভিন্ন দেশ ও টুর্নামেন্টের  আয়োজন করা হয়।

এই সকল টুর্নামেন্টের মধ্যে রয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, ইউরো কাপ, বুন্দেস লীগা, স্প্যানিশ লিগ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলা বা বিশ্বকাপ ফুটবল খেলায় ফিফা নির্ধারিত নিয়ম নীতি অনুযায়ী ভুল ত্রুটি সংশোধনের জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটেছে।

ফুটবল ও বাংলাদেশ

ফুটবল খেলার জন্ম যদিও চীনে তবুও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই ফুটবল খেলা বুঝতে সক্ষম হন যার কারণে ফুটবল খেলা এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে। বিশ্বকাপ খেলা শুরু হলেই সারাদেশব্যাপী যেন উন্মাদনার ঝড় বয়ে যায়। বাঙালিরা নিজ নিজ পছন্দ দলের পতাকা-টাঙ্গিয়ে এবং জার্সি পরে তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে প্রতিবছরই অংশগ্রহণ করে কিন্তু বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ ৯০৩ সালের সাপ গেমসে মালদ্বীপকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় এছাড়াও ১৯৯৯ সালে এবং ১৯১০ সালে বাংলাদেশ এস এ গেমস এ চ্যাম্পিয়ন হয় এবং স্বর্ণপদক লাভ করে। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে ফুটবলের অগ্রগতির জন্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আয়োজন করে।

বাংলাদেশের অন্যতম ফুটবল ক্লাব গুলোর মধ্যে রয়েছে আবাহনী, মহামেডান ,শেখ জামাল ফুটবল, ফেনীর সকার কাপ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একদিন বাংলাদেশ ও বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

ফুটবল ও বিশ্বকাপ

১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় উরুগুয়ে তে। তবে বিশ্বকাপ ফুটবলফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বা ফিফার অধীনে প্রতি চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয় ফুটবল বিশ্বকাপ। ফুটবল খেলার পরে যে ট্রফি দেওয়া হয় প্রথম অবস্থায় এই ট্রফির নাম ছিল জুলেরিমেকাপ। ১৯৭৪ সালে ফিফা এই ট্রফির নাম পরিবর্তন করে দেন বিশ্বকাপ। ১৯১৪ সালে ব্রাজিলে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২০ তম আসর অনুষ্ঠিত হয় আর এই খেলায় আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিজয়ী হয় জার্মানি।

 তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ ফুটবলের সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল। ব্রাজিল মোট পাঁচবার বিশ্বকাপ লাভ করেছে। ফুটবলের সেরা খেলোয়াড় কে গোল্ডেন বল এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা কে গোল্ডেন বুট প্রদান করা হয়। বিশ্বকাপ ফুটবলের ২১ তম আসর অনুষ্ঠিত হয় রাশিয়ায় এবং ২০২২ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় কাতারে এবং এই আসরে আর্জেন্টিনা বিজয় লাভ করে।

বিশ্বের সেরা ফুটবল তারকা এবং ক্লাব সমূহ

ফুটবল জগতের জীবন্ত এবং কিংবদন্তি ফুটবলার ছিলেন ব্রাজিলের প্লে যাকে আজও আমরা ভুলতে পারিনি। আর আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় ম্যারাডোনাকে বলা হয় ফুটবলের রাজপুত। এছাড়া ও ফুটবল জগতে যারা বিখ্যাত হয়েছেন তারা হলেন – মেসি, রোনালদো, নেইমার, জিদান প্রমুখ। আর বিশ্বের সেরা ফুটবল ক্লাবগুলো হলো-

বার্সেলোনা, রিয়েল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি, মিউনিখ, রিয়াল মাদ্রিদ,ডটমুন্ডু, সেলসি প্রভৃতি। এছাড়াও ফেডারেশন কাপ, এশিয়া কাপ, কোপা আমেরিকা প্রভৃতি খেলার মাধ্যমে ফুটবল সারা পৃথিবীতে আজও উন্মাদনা ছড়িয়ে যাচ্ছে।

ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা

আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বা ফিফা প্রতিষ্ঠা করা হয় পুরো বিশ্বব্যাপী ফুটবল খেলার নিয়ম নীতি প্রচলন করার জন্য। ১৯০৪ সালের ২১ শে মে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তবে বর্তমানে সুইজারল্যান্ড এর জুরিখে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। ফিফার বর্তমান সভাপতি হলেন সেফ ব্লাটার। আর বর্তমানে ফিফার সদস্য দেশ হলো ২০৯ টি।

প্রতি চার বছর পর পর এই সংস্থা বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এই সংস্থাটি শুধু পুরুষদের জন্য নয় নারীদের জন্য ও ফুটবল খেলার প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। এছাড়া ফিফা প্রতি বছর বর্ষসেরা ফুটবলার ও দলগত রেংকিং করে থাকে।

ফুটবল খেলার উপকারিতা

ফুটবল খেলা যেমন আনন্দদায়ক তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ও ভালো। ফুটবল খেলে যেমন আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি এটি শারীরিক ব্যায়ামের ও কাজ হয়ে থাকে। কারণ ফুটবল খেললে দেহের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উত্তম রূপে পরিচালিত হয় এবং যার কারণে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলো সবল ও সুদৃঢ় হয়। এছাড়াও ফুটবল খেলা আজ বিশ্বব্যাপী বিশাল লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আমেরিকার ক্লাবগুলো এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

খেলার মাধ্যমে এক দেশের সাথে অন্য দেশের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে যার কারণে খেলোয়াড়দের বলা হয় সম্পর্কের দুত। একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় তার খেলার মাধ্যমে বিশ্বের খ্যাতি অর্জন করে থাকে এবং সম্পদেরও মালিক হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী খেলোয়াড় হলেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি। এছাড়াও খেলোয়াড়দের নিয়মের অধীনে খেলতে হয় বলে তারা নিয়ম অনুবর্তী, কর্ম তৎপরতা এবং একাত্মবদ্ধতা হওয়ার শিক্ষা লাভ করে থাকে।

ফুটবল এবং আমি

ফুটবল আমার প্রিয় খেলা তাই আমি নিয়মিত ফুটবল খেলে থাকি। আমি আমাদের স্থানীয় একটি ক্লাবের একজন প্রশিক্ষকের অধীনে নিয়মিত ফুটবল খেলার প্র্যাকটিস করে থাকি। অনেক ছোট বয়স থেকেই আমি ফুটবল খেলার সাথে যুক্ত আছি। বাংলাদেশ যদিও বিশ্বকাপ ফুটবলে স্থান দখল করতে পারেনি তারপরেও ফুটবলকে আমি মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি। আমার প্রিয় ফুটবল তারকা হলেন আর্জেন্টিনার লিওলেন মেসি। আর বার্সেলোনা হলো আমার প্রিয় ফুটবল ক্লাব।

উপসংহার

ফুটবল আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলা তাই আমি নিয়মিত ফুটবল খেলে থাকি। পড়াশোনার পর আমার কাছে ফুটবল হল জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। যদিও আমি ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক হতে চাই কিন্তু চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি আমি ফুটবল খেলা কেউ চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই কারণ ফুটবল খেলা একদিকে যেমন শরীর গঠনে সাহায্য করে অন্যদিকে তেমনি মন কেউ সতেজ রাখে।

আর ফুটবল খেলার এই আনন্দকে উপলব্ধি করে হয়তো স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলিলে তোমারা স্বর্গের আরো নিকটবর্তী হইবে”।