আধুনিক রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্র কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। তারফলে আমলাতন্ত্র কার্যত অপ্রত্যাশিত প্রাধান্য এবং ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী হয়েছে। আমলারা হলেন অ-রাজনীতি শাসক। অথচ রাজনীতিক ক্ষেত্রেও তাঁরা গুরুত্ব লাভ করেছেন। অনেক দেশেই রাজনীতিক ও অরাজনীতিক প্রশাসকদের মধ্যে আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতাও পরিলক্ষিত হয়। আবার কোথাও অ-রাজনীতিক ও রাজনীতিক প্রশাসকদের মধ্যে পার্থক্য ক্রমশ অপসৃত হওয়ার প্রবণতাও পরিলক্ষিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্র অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকার কায়েম করেছে। কিন্তু আমলাতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা নয়। আমলাতন্ত্রের বহুবিধ ত্রুটি-বিচ্যুতি বর্তমান।

আমলাতন্ত্রের বিভিন্ন দোষ-ত্রুটির জন্য প্রত্যেক রাজনীতিক ব্যবস্থাতেই এর নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়। বল তাঁর Modern Politics and Government শীর্ষক গ্রন্থে বলেছেন: “The need for controlling bureaucratic discreation and power is apparent in every political system.” সাধারণত উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়। বল বলেছেন: “This has been emphasised in liberal democratic systems because of the representative and responsible aspects of political leadership.” বলের অভিমত অনুসারে ব্যাপক ও উন্নত সেবামূলক সরকারী কার্যাবলীর জন্য দাবি উদারনীতিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেও দলীয় সরকারকে অভিজাততান্ত্রিক সরকারে পরিণত করতে পারে। বল বলেছেন: “The demands for more extensive and standardised government services may gradually transformi party government into more oligarchic patterns even in the more representative liberal democracies.” বলের আরও অভিমত হল আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ক্ষেত্রে জনকল্যাণমূলক কাজকর্মের ধারণা হল একটি উপায় বিশেষ (“One form of protection is the development of a concept of public service…”)।

আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিসমূহকে বল তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। এগুলি হল: 

  • (১) আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ, 

  • (২) রাজনীতিক নিয়ন্ত্রণ এবং 

  • (৩) আইনগত নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। 

রাজনীতিক ও আইনগত নিয়ন্ত্রণকে বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসাবে অভিহিত করা যেতে পারে। অ্যালান বল বলেছেন: “There are problems of protecting the individual from over-zealous public officials not accountable in the usual legal and political ways, and there is also the possibility of corruption within the administrative machine itself. The controls may be divided into three broad divisions: internal, political and legal.”

(১) আমলাতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ:

আমলাতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ হল প্রশাসনিক কাঠামোর ভিতরে কার্যকর আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক পদ্ধতি বা ব্যবস্থা। আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ আমলাদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও সামাজিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সহযোগিতা সৃষ্টি, শৃঙ্খলা প্রয়োগ, ক্রমোচ্চ শ্রেণীবিন্যস্ত কাঠামোর স্বীকৃতি ইত্যাদির দ্বারা এই ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থিরীকৃত হয়ে থাকে। আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য হল আমলাতন্ত্রের কাঠামোর ভিতর থেকেই নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সৃষ্টি করা। বল তাঁর Modern Politics and Government শীর্ষক গ্রন্থে বলেছে: “The internal machinery for controlling bureaucracies consists of the self-regulatory means within the administrative structure itself. These are aimed at internal co-ordination self discipline and a recognition of the hierarchical structure.” উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বা সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্বিশেষে সকল রাজনীতিক ব্যবস্থাতেই অর্থদপ্তর সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীদের সংখ্যা, বেতন, ভাতা, পদোন্নতি প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন প্রভৃতি দেশের উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এবং গণ-প্রজাতন্ত্রী চীন প্রভৃতি সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থায় অর্থদপ্তর অন্যান্য দপ্তরের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। তা ছাড়া নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যাপারে যথাযথ পদ্ধতি, আচার-আচরণের উন্নত পদ্ধতি, অপ্রয়োজনীয় নিয়মকানুনের গুরুত্ব হ্রাস প্রভৃতির মাধ্যমেও আমলাদের স্বৈরাচারী মানসিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কোন নিরপেক্ষ ও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে আমলাদের মনোনয়নের দায়িত্ব ন্যস্ত থাকা আবশ্যক। যথাযথ লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার-মূলক ব্যক্তিত্বজ্ঞাপক পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করা আবশ্যক। তা ছাড়া যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমলাদের দায়িত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গি, কর্তব্য ও উদ্যোগ এবং এক্তিয়ার ও মূল্যবোধ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। তা ছাড়া আমলাদের মধ্যে কঠোর নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলাবোধ জাগ্রত করা আবশ্যক। এই ধারণার সৃষ্টি করতে হবে যে আমলারা নিয়মশৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে নন। অন্যথায় প্রশাসনে নৈরাজ্য দেখা দেবে এবং আমলাতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ অকার্যকর হয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে রাজনীতিক প্রশাসকদের ভূমিকাও ইতিবাচক হওয়া বাঞ্ছনীয়। রাজনীতিক প্রশাসকদের ব্যক্তিত্ব, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, অভিজ্ঞতা প্রভৃতি গুণগত যোগ্যতা আমলাতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। আমলাতন্ত্রের কাঠামোর মধ্যে শ্রেণীগত চিন্তা-চেতনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ভারসাম্য থাকা আবশ্যক। আমলারা কোন নির্দিষ্ট শ্রেণী-সম্ভৃত হওয়া অনুচিত। তা হলে আমলাদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শ্রেণীগত ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রাধান্য সৃষ্টি হবে। তাই আমলারা যদি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী থেকে আসেন তা হলে এই আশংকা থাকে না। প্রকৃত প্রস্তাবে অর্থদপ্তর ইচ্ছা করলে আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু এ ধরনের ব্যবস্থাদির দ্বারা অর্থদপ্তরের আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তার জন্য দরকার বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের।

(২) আমলাতন্ত্রের রাজনীতিক নিয়ন্ত্রণ:

রাজনীতিক উপায়েও আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যায়। রাজনীতিক নিয়ন্ত্রণ হল বাহ্যিক স্তরে আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণের একটা পদ্ধতি। রাজনীতিক নিয়ন্ত্রণ বলতে আইনসভা, মন্ত্রিসভা, রাজনীতিক দল এবং চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহের মাধ্যমে আরোপিত নিয়ন্ত্রণকে বোঝায়। অ্যালান বল তাঁর Modern Politics and Government গ্রন্থে বলেছেন: “In the second category of controls, these exerted through assemblies, government, parties and pressure groups, the supply of money is also important.”

আইনসভার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ: আইন-বিভাগ আমলাদের নিয়োগ, দায়িত্ব, কার্যকাল প্রভৃতি বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতাযুক্ত। আমলাদের নিয়োগ বা নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষমতা আইনসভার হাতে থাকলে আমলাদের সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রধানত প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ সরকারী কর্মচারীদের নিযুক্ত করলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষমতা আইনসভার (কংগ্রেস) উপর ন্যস্ত আছে। এই কারণে মার্কিন কংগ্রেস আমলাদের নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বিশেষ ক্ষমতা পেয়েছে। বল বলেছেন: “It is the key to the oversight exercised over the administrative agencies by the American Congress,. especially bearing in mind the rivalry between congress and the presidency. Yet even where assemblies lack the independence of the American Congress, they often have various opportunities to act as watchdog over the bureaucracy.” ব্রিটেনে ও ভারতের আইন-বিভাগ আমলাদের নিয়োগ সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণ করতে পারে বটে, কিন্তু নিয়োগ বা নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষমতা আইন-বিভাগের নেই। তবে এই দুটি দেশে আইনসভা বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে আমলাদের কাজকর্মের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে পারে এবং তাদের কিছুটা সংযত রাখতে ও আইনানুসারে কাজ চালাতে বাধ্য করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কমন্সসভার ও ভারতের লোকসভার সিলেক্ট কমিটি (Select Committee), সরকারী গণিতক কমিটি (Public Accounts Committee) এবং নিয়ন্ত্রক ও মহাগণনা পরীক্ষক (Comptroller and Auditor General)-এর ভূমিকা উল্লেখ করা যেতে পারে। তা ছাড়া দপ্তরসমূহের ক্ষমতা সম্পর্কে নিয়মকানুন প্রবর্তন করার ব্যাপারেও আইনসভার ভূমিকাকেও অস্বীকার করা যায় না। আবার আইনসভা ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদন না করলে সরকারের কোন দপ্তরের কোন অর্থ ব্যয় করার অধিকার বা ক্ষমতা থাকে না।

রাজনীতিক দল ও স্বার্থ-গোষ্ঠীর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ: আবার রাজনীতিক দল ও চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আমলাদের রাজনীতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। গণ-প্রজাতন্ত্রী চীন ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহে রাজনীতিকভাবে আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা বিশেষভাবে সংগঠিত। এখানে আমলাদের উপর কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি (Central Committee) গণ-নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলি (Organs for Peoples Control)-র মাধ্যমে প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা হয়। তবে অনেকে অভিযোগ করেন যে এখানে সরকারী প্রশাসনিক স্তরে আমলারা নিয়ন্ত্রিত হলেও দলীয় স্তরে অবাধ ও ভয়াবহ আমলাতান্ত্রিকতা লক্ষ্য করা যায়। উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনীতিক দল ও স্বার্থগোষ্ঠী অসহযোগী আমলাদের বিরুদ্ধে বিরূপ সমালোচনা করে। আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজনীতিক দল ও চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহের সমালোচনামূলক প্রচার জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এই প্রতিক্রিয়া আমলাতন্ত্রের উপর রাজনীতিক নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে সাহায্য করে।

(৩) আমলাতন্ত্রের আইনগত নিয়ন্ত্রণ:

আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনগত নিয়ন্ত্রণও প্রয়োগ করা যায়। প্রশাসনিক দুর্নীতি দূর করার জন্য এবং দক্ষ ও নিরপেক্ষ প্রশাসন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। তার জন্য বিভিন্ন আইনানুগ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। অ্যালান বল বলেছেন: “The third area of control is legal/judicial. This includes the machinery and procedure for dealing with administrative corruption as well as controls to ensure impartial and efficient administration.” আমলাদের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্য কর্মে অবহেলা প্রভৃতি দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালতের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে বলের অভিমত অনুসারে দুর্নীতি ও অযোগ্যতার মধ্যে সহজে পার্থক্য নির্ধারণ করা সব সময় সম্ভব হয় না। তাই আমলাদের কৃতকর্মের বিচার সাধারণ আদালতের মাধ্যমে করা উচিত নয়। বল বলেছেন: “However the ordinary law courts may not provide an adequate degree of control of civil servants since the dividing line between corrupt and inefficient administration is not a rigid one.” এই কারণে বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আমলাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে বিশেষ সংস্থা বা কর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা দেখা যায়। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে সুইডেন, নিউজিল্যাণ্ড, ফিনল্যাণ্ড, নরওয়ে, ডেনমার্ক, গ্রেট ব্রিটেন প্রভৃতি দেশের কথা বলা যায়। আমলাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পর্যালোচনার জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের ‘ও্যুডসম্যান’ (Ombudsman) বলা হয়। এই ব্যবস্থার অনুকরণে ভারতে ‘লোকপাল’ (Lokpal) নিয়োগের কথা হয়েছে। অপরদিকে সমাজতান্ত্রিক দেশ গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনে ‘গণ-প্রকিউরেটার’ (People’s Procurator) -এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা ছাড়া ফ্রান্সে আমলাদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য আছে প্রশাসনিক আদালত। ব্রিটেনে বিভাগীয় অভিযোগ বিচার করার জন্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল (administrative tribunals) আছে। গ্রেট ব্রিটেনের এই প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলিকে বল বলেছেন: “… a halfway house between executive and judicial supervision….”

উপসংহার: প্রকৃত প্রস্তাবে আমলাতন্ত্রের ভূমিকার প্রকৃতি দেশের প্রচলিত রাজনীতিক ব্যবস্থার উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। সাধারণত ধনতান্ত্রিক রাজনীতিক কাঠামোতে আমলারা প্রতিপত্তিশালী শাসক শ্রেণীর স্বার্থের অনুকূলে ভূমিকা গ্রহণ করে এবং তারা পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় নিজেদের স্বার্থ সাধনে উদ্যোগী হয়। তার ফলে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের মধ্যে দুর্নীতি প্রশ্রয় পায় এবং জনস্বার্থ উপেক্ষিত হয়। অপরদিকে সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিক কাঠামোতে সমাজ গঠনে এবং জনগণের স্বার্থসাধনে আমলাতন্ত্রকে দায়বদ্ধ থাকতে হয়। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনসাধারণের প্রতি আমলাদের দায়-দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট। এই কারণে এখানে আমলাতন্ত্র জনস্বার্থের ব্যাপারে উদাসীন থাকতে পারে না। সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় জনসাধারণ আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে; আমলাতন্ত্রের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকে না।