প্রশ্নঃ আন্তর্জাতিক আদালত অনুচ্ছেদ ৩৮ অনুযায়ী কিভাবে বিরোধ নিষ্পত্তি করে? কখন এই আদালতের রায় পুনঃপরীক্ষা পূর্বক সংশোধন করা যায়?
ভূমিকাঃ জাতিসংঘের অন্যতম একটি অঙ্গ হলো আন্তর্জাতিক আদালত। এটি জাতিসংঘের প্রধান বিচারবিভাগীয় অঙ্গ। কিছু রাষ্ট্র ব্যতীত পৃথিবীর প্রায় সকল রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আইনগত বিষয়ে কোন বিরোধ দেখা দিলে এই সংস্থা তার বিচার করে।
অনুচ্ছেদ ৩৮ অনুযায়ী কিভাবে এই আদালত বিরোধ নিষ্পত্তি করে : আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধির অনুচ্ছেদ ৩৮(১) অনুযায়ী কোন বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালতের নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করতে হয় :
(১) আন্তর্জাতিক প্রথা অনুসরণ করতে হয়, যেগুলি আইন হিসেবে স্বীকৃত,
(২) যে সকল আন্তর্জাতিক চুক্তি বা কনভেনশন বিরোধী পক্ষ কর্তৃক স্বীকৃত সেগুলির উপর নির্ভর করতে হয়,
(৩) উন্নত জাতি কর্তৃক স্বীকৃত সাধারণ নীতি অনুসরণ করতে হয়,
(৪) বিভিন্ন দেশের আইনবিশারদদের মতামতকে বিবেচনা করা,
(৫) পক্ষ সমূহের আপত্তি না থাকলে যুক্তির উপর নির্ভর করা। [অনু-৩৮(২)]
কখন এই আদালতের রায় পুনঃপরীক্ষা পূর্বক সংশোধন করা যায়ঃ আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধির ৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী-
(i) বাস্তব তথ্য আবিস্কার হলে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পুনঃপরীক্ষা করা যায়,
(ii) উক্ত বাস্তব তথ্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি হতে হবে,
(iii) রায় প্রদানের সময় উক্ত তথ্য দাবি উত্থাপনকারী পক্ষের নিকট অজ্ঞাত থাকতে হবে,
(iv) উক্ত অজ্ঞতা অবহেলা প্রসূত নয়,
(v) আবেদনটি গ্রহণযোগ্য এই ঘোষণা থাকতে হবে,
(vi) নতুন তথ্য আবিস্কারের ক্ষেত্রে ৬ মাসের মধ্যে রায় পুনঃপরীক্ষার জন্য আবেদন করতে হবে,
(vii) অন্যান্য রায়ের ক্ষেত্রে রায় প্রদানের পর ১০ বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ১০ বছর অতিবাহিত হলে উক্ত রায় পুনঃপরীক্ষা বা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা যাবে না।
উপসংহারঃ আন্তর্জাতিক আদালত জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এই আদালতের উপদেশ কারো জন্য বাধ্যতামূলক না হলেও এর বিচারের রায় বাধ্যকর। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Leave a comment