অথবা, আচরণবাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
ভূমিকাঃ রাজনীতি বিশ্লেষণের অগ্রগতির ইতিহাসে যে সকল মতবাদ ও পর্যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ তার মধ্যে আচরণবাদ অন্যতম। রাজনৈতিক বিশ্লেষণে আচরণবাদ প্রবেশের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে- রাষ্ট্রবিজ্ঞানে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির পথ প্রশস্ত করে সমাজবিজ্ঞান এবং ভৌত বিজ্ঞানের সহায়তায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক ধ্যান-ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিতকরণ।
আচরণবাদের বৈশিষ্ট্যঃ আচরণবাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে আলােচনা করা হলােঃ
(১) একরূপতাঃ বিভিন্ন অবস্থা ও পরিবেশভেদে কিছুটা পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও মানুষের কার্যকলাপ ও আচরণে একরূপতা রয়েছে। এরূপ একরূপতার ভিত্তিতে মানব আচরণ সম্পর্কে সাধারণ নিয়ম ও তত্ত্ব গঠন করা যায়। যেগুলাে রাজনীতির বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যদ্বাণী করতে সাহায্য করে।
(২) যাচাইকরণঃ রাজনৈতিক আচরণের একরূপতা সম্পর্কে সাধারণ সূত্রগুলাে পরীক্ষাযোগ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে সে সূত্রের সত্যতা যাচাই করা সম্ভবপর হবে। তাই বলা যায়, যাচাইকরণ আচরণবাদের একটি অপরিহার্য উপাদান।
(৩) কৌশলঃ আচরণবাদ মূলত তথ্যনির্ভর পদ্ধতি। পর্যাপ্ত ও নির্ভরযােগ্য তথ্য সংগ্রহ এবং এগুলাের বিশ্লেষণের জন্য আচরণবাদীরা বিভিন্ন ধরনের কৌশল প্রয়ােগ করেন। সুতরাং কৌশল আচরণবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
(৪) মূল্যবােধঃ মূল্যবোধ আচরণবাদের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। নীতিভিত্তিক মূল্যায়ন ও পরীক্ষালব্ধ ব্যাখ্যাকে বিশ্লেষণের সুবিধার্থে স্বতন্ত্র রাখতে হবে। যে কারণে মূল্যবোধ এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
(৫) সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনাঃ গবেষণার ক্ষেত্র সুশৃঙ্খল ও প্রণালীবদ্ধ ধারাবাহিকতা অবলম্বন করতে হয়। গবেষণা ও তত্ত্ব সুসমন্বিত ও সুশৃঙ্খলিত জ্ঞানমণ্ডলের দু’টি অংশ। যে গবেষণা তত্ত্বভিত্তিক নয় তা অসম্পূর্ণ আর যে তত্ত্ব গবেষণা দ্বারা সমর্থিত নয় তা অহেতুক।
পরিশেষঃ উপরোক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আচরণবাদ ব্যক্তি ও গােষ্ঠীর আচরণের মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যবস্থা পর্যালােচনা করতে চায়। কেননা রাজনৈতিক আচরণ ব্যক্তি আচরণের সাথে বিশেষভাবে সম্পৃক্ত।
Leave a comment