প্রশ্নঃ আইনসভার ক্ষমতা হ্রাসের কারণ কী?

অথবা, কী কারণে আইনসভার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে?

অথবা, তুমি কি মনে কর বর্তমানে অইনসভার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে? ক্ষমতা হ্রাসের কারণগুলো কী কী?

ভূমিকাঃ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে আইন বিভাগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী হলেও বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে আইনসভা তার ক্ষমতা হারাচ্ছে। আইনসভার বিভিন্ন কার্যাবলি আইন বিভাগ অন্য বিভাগ তথা শাসন বিভাগ ছাড়া সম্পাদন করতে পারে না। তাই বর্তমানে আইনসভা তার স্বীয় ক্ষমতা হারাতে বসেছে।

অইনসভার ক্ষমতা হ্রাসের কারণঃ যে সমস্ত কারণে আইনসভার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে তা নিম্নে আলােচনা করা হলাে-

১. দলীয় ব্যবস্থার কঠোরতাঃ বর্তমানে আইনসভার সদস্যরা সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সদস্য। যারা নির্বাচনে জয় লাভ করে ক্ষমতায় আসে। ফলে দলীয় কঠোরতার কারণে আইনসভার সদস্যরা অনেক সময় দুলীয় স্বার্থে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দেয়।

২. সদস্যদের অযোগ্যতাঃ দেশের শিক্ষিত ও জ্ঞানী সমাজ আমাদের দেশে প্রচলিত প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি থেকে দূরে থাকে। ফলে অশিক্ষিত ও মূখ শ্রেণি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়। এসব অশিক্ষিত লােক সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।

৩. ক্ষমতার লোভঃ আইনসভার সদস্যদের অতিমাত্রায় ক্ষমতার লােভ। জনগণের স্বার্থ না দেখে তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়ে তৎপর। এজন্য দিন দিন আইনসভার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।

৪. জরুরি অবস্থায় ব্যর্থঃ সরকারের যে কোন প্রয়ােজনীয় মুহূর্তে আইনসভা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ। আইনসভার মমতা হ্রাসের এটি অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত।

৫. গণসংযোগের অভাবঃ বর্তমানে শাসন বিভাগ জনস্বার্থে বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে ফলে জনগণের সাথে শাসন বিভাগের সদস্যদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এবং আইন বিভাগের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক বিছিন্ন হচ্ছে। ফলে আইনসভার ক্ষমতার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

উপসংহারঃ আলােচনার শেষ প্রান্তে এসে আমরা বলতে পারি, আইনসভার ক্ষমতা হ্রাস কোন গণতান্ত্রিক শাসনের জন্য সুখবর নয়। তাই আইনসভার সকল দোষত্রুটি দূর করে তার স্বাভাবিক ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে হবে।