কোঠারি কমিশনে, মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারের আর-একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল আংশিক সময়ের শিক্ষার চাহিদা। কমিশন এ সম্পর্কে কতকগুলি বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা বা সুপারিশ করেছে।
নিম্ন মাধ্যমিক স্তর:
(১) যে সকল শিক্ষার্থী মাধ্যমিক শিক্ষা পূর্ণ সময়ের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হবে না, তাদের জন্যই মূলত এই শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। তারা ইচ্ছা করলে, দশম শ্রেণির শেষ পর্যায়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বসতে পারবে।
(২) এই শিক্ষার ব্যবস্থা পূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই থাকবে। তারা এক্ষেত্রে একই উপকরণ ব্যবহার করতে পারবে। তবে এদের জন্য পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের অতিরিক্ত বেতন দিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
কমিশনের মতে, এই আংশিক সময়ের শিক্ষা সাধারণ সেইসব শিক্ষার্থী গ্রহণ করে যারা তাদের বৃত্তিমূলক দক্ষতা কি আরও উন্নতমানের করে তুলতে চায়। তাই প্রথমত, কৃষিবিদ্যার কোর্স, যেখানে শিক্ষার্থীরা কৃষির কীভাবে উন্নতি করা যায় সে সম্পর্কে শিক্ষালাভ করবে। দ্বিতীয়ত, মেয়েদের জন্য বিশেষ ধরনের কোর্স, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, পোলট্রি, ডেয়ারি, সেলাই প্রভৃতি সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করবে। এই কোর্সগুলো মুখ্য উদ্দেশ্য হবে শিক্ষার্থীদের যে-কোনো ধরনের শিক্ষায় সাহায্য করা।
উচ্চমাধ্যমিক স্তর :
(১) প্রথম ধরনের আংশিক শিক্ষা হবে সম্পূর্ণভাবে সাধারণ পূর্ণ সময়ের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে।
(২) যেসকল শিক্ষার্থীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হবে, তারা এখানে কৃষিবিদ্যার কোর্সে ভর্তি হবে।
(৩) যারা শিল্প কারখানায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য এই ধরনের শিক্ষার বিশেষ সুযোগ থাকবে।
(৪) মেয়েদের জন্য পৃথক ধরনের আংশিক শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে।
(৫) এ ছাড়া যারা স্বনির্ভর কোনো বৃত্তি গ্রহণ করবে তাদের জন্য এই আংশিক শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
মেয়েদের জন্য শিক্ষা :
কমিশন মেয়েদের শিক্ষার প্রসারের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে। নিম্নমাধ্যমিক স্তরের মেয়েদের শিক্ষার হার বৃদ্ধির জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা দানের কথা বলা হয়। এক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ গুলি হল—
(১) মেয়েদের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ করা হবে। যেখানে কিছু মহিলা শিক্ষক, প্রতিনিধি এবং কর্মী থাকবে।
(২) মেয়েদের জন্য ছাত্রীবাসের ব্যবস্থা থাকবে।
(৩) মেয়েদের জন্য স্কলারশিপ বা বৃত্তির ব্যবস্থা থাকবে। কমিশন মেয়েদের জন্য—
- (a) আংশিক সময়ের শিক্ষা ব্যবস্থা,
- (b) বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থার কথা বলে।
Leave a comment