উত্তর: আলোচ্য পদটি ‘চর্যাগীতিকা’র ৬ নং পদের অন্ত র্গত। পদটির রচয়িতা ভুসুকুপাদ। এই পদটিতে ইঙ্গিতে মানবজীবনের চিরন্তন সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে।

হরিণের আপন মাংসই তার চির শত্রু। আর হরিণের এই সুস্বাদু মাংসের জন্য শিকারি সুযোগ পেলেই তাকে শিকার করে। ` এই উক্তির মধ্য দিয়ে শাশ্বত এক মানবসত্য প্রকাশিত হয়েছে। হাজার বছর আগে চর্যাকারদের মনে এমন ভাবনা আসা সত্যিই বিস্ময়কর। মানুষের জীবন দুঃখ-দুর্দশা, আনন্দ-বেদনা, হতাশা- ব্যর্থতার সামষ্টিক ফল। মানুষ ইচ্ছে করলে সৎকর্ম দ্বারা জীবনকে নিরাপদ ও সুখী সমৃদ্ধ করতে, আবার অসৎকর্মের কারণে জীবনে দুঃখ-যন্ত্রণা ডেকে আনতে পারে। চর্যাগীতির কবিগণ যে সৌন্দর্য ও জীবনচিত্র এঁকেছেন তা সাধারণ পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এটি একালের পাঠককেও মুগ্ধ করে। বাংলা ভাষার প্রবাদ প্রবচনগুলো হাজার বছরের পুরানো। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে ধারণ করে এসব প্রবাদগুলো। চর্যাপদের ভাষাকে কেউ কেউ সন্ধ্যাভাষা বলেছেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এ ভাষা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, ‘আলো আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না। যারা সাধন ভজন করেন তারাই এ ভাষা বুঝতে পারেন। এ কারণে অনেকে চর্যার ভাষাকে সন্ধ্যাভাষা বলেছেন। কিন্তু উপরিউক্ত পঙ্ক্তিতে কবি সরল ভাষায় জীবনের বাস্তব সত্য তুলে ধরেছেন।