অনুবাদ 

অনুবাদ বলতে বােঝায় ভাষান্তর। এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় রূপান্তর বা পুনর্বিবৃতি। বিভিন্ন ভাষাগােষ্ঠীর মধ্যে তথ্য বিনিময়ের প্রধান উপায় হচ্ছে অনুবাদ। পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্য-সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সেসবের পরিচয় পেতে হলে সেসব ভাষা থেকে সেগুলি নিজের ভাষায় অনুবাদ করে নিতে হয়। বিশ্বের প্রায় সব তথ্য ও জ্ঞান ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে পাওয়া যায়। তাই ইংরেজি ভাষা থেকে অনুবাদের ওপর অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদে দুটো ভাষাতেই যথেষ্ট পারদর্শিতা থাকা দরকার। বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য ও জ্ঞানের বই, পত্র-পত্রিকা ইত্যাদি পড়ার অভ্যাস করলে এ ধরনের দক্ষতা গড়ে ওঠে। 

অনুবাদে ধরুন 

অনুবাদ প্রধানত দু-ধরনের : 

ক. আক্ষরিক অনুবাদ, খ. ভাবানুবাদ। 

ক. আক্ষরিক অনুবাদ 

এক ভাষার শব্দের বদলে অন্য ভাষার শব্দ বসিয়ে অনুবাদ করাকে বলা হয় আক্ষরিক অনুবাদ। আক্ষরিক অনুবাদ মূলানুগ হয়ে থাকে। এ ধরনের অনুবাদ প্রায় ক্ষেত্রেই কৃত্রিম হয়। আক্ষরিক অনুবাদে ভাষার সৌন্দর্য ও মাধুর্য থাকে না বললেই চলে। যেমন : “There was no reply’-এর আক্ষরিক অনুবাদ : ‘সেখানে কোনাে উত্তর ছিল না।’ এ জাতীয় অনুবাদ গ্রহণযােগ্য হয় না। গ্রহণযােগ্য অনুবাদ হচ্ছে : কোনাে উত্তর এল না। সাবলীল হয় না বলে সাধারণত আক্ষরিক অনুবাদ পরিহার করা হয়। তবে দলিল-দস্তাবেজ, বিজ্ঞান ও আইনের বিষয়ের অনুবাদ অনেক ক্ষেত্রে আক্ষরিক হয়ে থাকে। 

খ. ভাবানুবাদ 

মূলের অর্থ ঠিক রেখে নিজের ভাষার রীতি অনুযায়ী স্বাধীন অনুবাদকে বলা হয় ভাবানুবাদ। এ ধরনের অনুবাদ মূলানুগ হয় না, কিন্তু প্রাঞ্জল, সুখপাঠ্য ও হৃদয়গ্রাহী হয়ে থাকে। আক্ষরিক অনুবাদ রস উপলদ্ধির পক্ষে বাধা হয় বলে সাহিত্যের অনুবাদ সাধারণত ভাবানুবাদ হয়ে থাকে।