অনুচ্ছেদ রচনা : শিশুশ্রম

শিশুশ্রম

আজকের শিশুই আগামী দিনের যােগ্য নাগরিক । কিন্তু সেই শিশুই যদি উপযুক্ত শিক্ষা, স্বাস্থ্য— এসব থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে তা জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। যে বয়সে একটি শিশুর বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সে বয়সেই বেঁচে থাকার জন্য আমাদের দেশের অনেক শিশুকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। দারিদ্রপীড়িত এদেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা অনেক। অপরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যাবৃদ্ধি মূলত এর প্রধান কারণ। সন্তানসংখ্যা বেশি হওয়ায় বাবা-মা তাদের ভরণপােষণ করতে ব্যর্থ হয়ে কাজে লাগিয়ে দেয় । অন্যদিকে স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষ কম মজুরি, অনেক সময় খাওয়ার বিনিময়ে কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করিয়ে নেয় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে। শিশুরা বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন কারখানায় কাজ করে থাকে । অল্প বয়সে অধিক পরিশ্রমের কাজ এবং প্রয়ােজনীয় খাদ্য-পুষ্টি না পাওয়ায় অনেক শিশুর জীবনই অকালে ঝরে যায়। যে শিশু তার প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে পারত, সে সুযােগ থেকে বঞ্চিত হয়ে তা সে করতে পারে না। বিকলাঙ্গ হয় অনেকে। ভিক্ষাবৃত্তি, চুরি, পকেট কাটা এসব খারাপ কাজেও এই শিশুরা জড়িয়ে পড়ে। দেশের সরকার, জনকল্যাণমূলক সংস্থা, সচেতন নাগরিক সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে শিশুশ্রম রােধ করতে, ফুলের মতাে পবিত্র শিশুর দুঃখের গ্লানি মুছে দিয়ে তার মুখে হাসি ফোটাতে । সে হাসি এই জাতিকে শিশুশ্রম নামক অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারে । আমাদের সবার অঙ্গীকার হােক প্রতিটি শিশুর অধিকার নিশ্চিত করা।