বাংলার সংস্কৃতি 

‘সংস্কৃতি’ হলাে পরিশীলিত জীবনবােধ । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, কমল হীরের পাথরটাকে বলে বিদ্যে আর তা থেকে যা ঠিকরে বেরােয় তাকে বলি কালচার। মােতাহার হােসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘সংস্কৃতি মানে বাচা, সুন্দরভাবে বাঁচা। ড. আহমদ শরীফ সংস্কৃতির সংজ্ঞা দিয়েছেন- “পরিশীলিত ও পরিশ্রুত জীবন চেতনাই সংস্কৃতি। হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য ও ধর্মীয় ভাবের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বাংলার সংস্কৃতি। এই বাংলায় অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জাতি-গােষ্ঠীর মানুষ এসেছে, কেউ ব্যবসায়-বাণিজ্য করতে, কেউ ধর্ম প্রচার করতে, কেউ এদেশের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে। তাদের আচার-সংস্কৃতির সংমিশ্রণে গড়ে . উঠেছে নিজস্ব সংস্কৃতি; যা জীবনাচরণ, শিল্প-সাহিত্যে প্রকাশ পেয়েছে। বাঙালির মানস গঠনেও সংস্কৃতি বড়াে ভূমিকা রেখেছে। সহজ, সরল ও ভাবুক বাঙালিই প্রয়ােজনে হয়ে ওঠে সাহসী, একনিষ্ঠ, নির্ভীক; নিজস্ব ধর্মবােধ বজায় রেখেও বাঙালি অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী হতে পারে। বাঙালির নিজস্ববােধের পরিচয় ফুটে ওঠে তার মানবতাবাদী চেতনায়; যা বাঙালি পেয়েছে সুফি ও বৈষ্ণব ভাবের মিলিত রূপ বাউল ভাবনায়। বাংলার বৃহৎ জাতিগােষ্ঠীর পাশাপাশি ক্ষুদ্র জাতিগােষ্ঠীর সংস্কৃতিও সমৃদ্ধ করেছে বাংলার সংস্কৃতিকে বাঙালির শিল্প-সাহিত্য, উৎসব-অনুষ্ঠান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐতিহ্যঋদ্ধ সংস্কৃতিকে বৈচিত্র্য দান করেছে। সংস্কৃতি বহমান, তাই বাংলার সংস্কৃতি নিজস্বতা বজায় রেখে সময়ের দাবিকে পূরণ করে স্বমহিমায় বয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে