অনুচ্ছেদ রচনা : বাংলাদেশের গ্রাম |
বাংলাদেশের গ্রাম
বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থান জুড়ে আছে এর গ্রামগুলাে। গ্রামকে ভিত্তি করেই এদেশের অস্তিত্ব গড়ে উঠেছে। নদীমাতৃক কৃষিপ্রধান বাংলাদেশ এখনাে গ্রামের ওপর নির্ভরশীল। গ্রামের কৃষকরাই এদেশের মানুষের ক্ষুধার অন্ন যােগায়। এক সময় গ্রামের কৃষকদের। উৎপাদিত পাটই ছিল বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। ছায়া-ঢাকা, পাখি-ডাকা সবুজ শ্যামল গ্রামগুলাে এদেশের সৌন্দর্যের অন্যতম। উৎস। ফুলে, ফলে, ফসলে এক একটি গ্রাম বাংলাদেশের এক একটি রূপের খনি। অধিকাংশ গ্রামের ঘরবাড়ি বৃক্ষ-লতায় ঘেরা। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে কম বেশি ফলদ বৃক্ষ। বাড়ির পাশেই সবুজ ফসলের মাঠ। গ্রামের প্রান্ত দিয়ে বয়ে চলেছে নদী কিংবা খাল । বিল-ঝিলে ফুটে থাকে নানা রঙের শাপলা ও বাহারি পদ্মফুল । খালে-বিলে-নদীতে চলে ছােটো বড়াে অসংখ্য নৌকা । নিচু এলাকায় নৌকাই হলাে প্রধান যানবাহন। গ্রামের অধিকাংশ রাস্তা কাঁচা । পাকা রাস্তাও আছে, তবে প্রয়ােজনের তুলনায় অল্প । ইদানীং গ্রামের যােগাযােগব্যবস্থা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। ঘর-বাড়িসহ চারপাশের পরিবেশের উন্নয়ন ঘটেছে। গ্রামে দারিদ্র্যের হার কমতে শুরু করেছে। তবে এখনাে গ্রামে অসংখ্য দরিদ্র আছে যারা পুষ্টিকর খাদ্য ও উন্নত বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছে না। | গ্রামে শিক্ষার হার কম হলেও নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ফলে গ্রামের স্কুল ও মাদ্রাসাগুলাে এখন ছাত্র-ছাত্রীতে পরিপূর্ণ। গ্রামের মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি হাসপাতাল স্থাপন করা হলেও গ্রামের মানুষ এসব হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। তবে আগের চেয়ে গ্রামের মানুষ এখন অনেক স্বাস্থ্য-সচেতন। ফলে গ্রামে এখন মৃত্যুহার কমে এসেছে। দেশের সব অঞ্চলে না হলেও অধিকাংশ গ্রামে এখন বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। কোনাে কোনাে অঞ্চলে গ্রামের মানুষ গ্যাসের চুলায় রান্না করতে পারছে। শহরের তুলনায় বাংলাদেশের গ্রামগুলাে পিছিয়ে থাকলেও আগের তুলনায় বর্তমানে অবস্থার অনেক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।
Leave a comment