পদ্মা নদী

পদ্মা বাংলাদেশের একটি প্রধান নদী। ভারতের গঙ্গা নদীর ধারা বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময়ে পদ্মা নাম গ্রহণ করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চাঁদপুরের কাছে মেঘনা নদীতে মিলিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি পদ্মা নামে পরিচিত। উৎপত্তি ও প্রবাহ বিবেচনায় পদ্মা আন্তর্জাতিক একটি নদীর অংশবিশেষের নাম। মূল নদীটির নাম গঙ্গা। গঙ্গা নদীর উৎস হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ। বাংলাদেশে প্রবেশের সময়ে গঙ্গার দক্ষিণমুখী একটি শাখা ভাগীরথী নাম নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে সাগরে মেশে। মূল ধারাটি পদ্মা নাম নিয়ে গােয়ালন্দের কাছে পৌঁছানাের পর সেখানে উত্তর দিক থেকে আসা যমুনা নদী তার সঙ্গে মেশে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী পদ্মা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত। পদ্মা নদীর সর্বোচ্চ গভীরতা দেড় হাজার ফুটের বেশি এবং গড় গভীরতা প্রায় এক হাজার ফুট। মালদহ জেলার ফারাক্কাবাদে পদ্মা নদীর সূচনায় একটি বাধ দিয়ে ভারত সরকার পদ্মা নদীর পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে। পদ্মা নদীর উপরে তৈরি হয়েছে একাধিক রেল ও সড়ক সেতু: একটি ঈশ্বরদীর কাছে এবং অন্যটি মাওয়ার কাছে। পদ্মা নদীর ইলিশের স্বাদ বিশ্বজোড়া। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাঙালির আত্মপরিচয়ের অন্যতম উপাদান হিসেবে পদ্মা নদীর নাম উচ্চারিত হতাে।

পদ্মা নদীর আন্তর্জাতিক অংশবিশেষের নাম পদ্মা। আর মূল নদীর নাম গঙ্গা। পদ্মা নদীর কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর বন্যা সংগঠিত হয় এই জন্য পদ্মা নদীকে সর্বনাশা পদ্মা নদী নিচে বলেও অভিহিত করা হয় নিচে পদ্মা নদী – বাংলা অনুচ্ছেদ বিস্তারিত লেখা হল-

পদ্মা নদী – বাংলা অনুচ্ছেদ 

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পদ্মা নদী সম্পর্কে বলেছেন তাঁর কবিতার মাধ্যমে-

সেদিনের পর হতে হে পদ্মা আমার,

তোমায় আমার দেখা শত শতবার।

বাংলাদেশের একটি প্রধান নদী হল পদ্মা নদী। পদ্মা নদীর উৎপত্তি হয়েছে ভারতের হিমালয়ে। ভারতের গঙ্গা নামে উৎপত্তি এই পদ্মা নদী বাংলাদেশের পদ্মা নামে পরিচিত এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। এই নদী চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চাঁদপুরে এসে মিলিত হয়েছে মেঘনা নদীর সাথে। পদ্মা নদীর দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটার প্রস্থ। বাংলাদেশ পদ্মা নদীর প্রকৃতি সর্পিলাকার। আরো বলা যায় গঙ্গা নদীর নিম্ন স্রোত ধারা নাম পদ্মা।

 

পদ্মা নদীর আন্তর্জাতিক অংশবিশেষের নাম পদ্মা। আর মূল নদীর নাম গঙ্গা।  পদ্মা নদীর প্রধান উপনদী গুলো হলো পূণভর্বা   এবং মহানন্দা। পদ্মা নদীর বিভিন্ন শাখা প্রশাখা গুলো  হল – ভৈরব, পশুর, ও মধুমতি। পদ্মা নদীর গড় গভীরতা এক হাজার ফুট আবার এর সর্বোচ্চ গভীরতা দের হাজার ফুটের বেশি। ভারতের মালদা জেলায় ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ভারত সরকার পদ্মা নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বাংলাদেশে এই পদ্মা নদীর ওপর তৈরি হয়েছে একাধিক সড়ক সেতু ও রেল সেতু।

 

এই পদ্মার ওপর রেল সেতু হলো একটি ঈশ্বরদীর কাছে এবং আরেকটি মাওয়ার কাছে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পদ্মা নদীকে ঘিরে শ্লোগান ছিল- “তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা”। এটা শুধু স্লোগান নয়, এটা পদ্মা নদী বাংলাদেশকে ফুটিয়ে তোলার একটি স্লোগান। ভারত সরকার গঙ্গায় বাঁধ দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে পদ্মা শুকনো মৌসুমী তেমন পানি প্রবাহ থাকে না, যার কারণে মাছের খাদ্য ফাইটোপ্লাঙ্কটন ও কমে যায়।
আর এর ফলস্বরূপ পদ্মার পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে যার কারণে পদ্মার ইলিশ মাছের দেখা আর তেমন মেলে না। অথচ পদ্মার ইলিশের সাধ অন্য কোন নদীর তুলনায় অনেক সেরা। আবার শুকনো মৌসুমে পদ্মার পানি এতই কমে যায় যে পদ্মা নদী আবার বিখ্যাত উপন্যাস “পদ্মা নদীর মাঝি” লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদ্মা নদীর পাড়ের মানুষের জীবনধারা নিয়ে রচিত করেছেন।

 

আবার প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক আবু ইসাহাক পদ্মা পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে পদ্মার পলিদীপ নামে উপন্যাস রচনা করেছেন। আবার পদ্মা নদীর ফলে যে বন্যা সংঘটিত হয় যার কারণে পদ্মাকে বলা হয় সর্বনাশা পদ্মা নদী। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাইতো তার কবিতার মাধ্যমে পদ্মা নদী সম্পর্কে লিখেছেন-

আমার নৌকা বাধা ছিল পদ্মা নদীর পারে,

হাঁসের পাতি উড়ে যেত মেঘের ধারে ধারে।

জানিনা মন কেমন করা লাগতো কি সুর হাওয়ার,

আকাশ বেয়ে দূর দেশেতে উদাস হয়ে যাওয়ার।

শেষ কথা

প্রিয় শিক্ষার্থী আমি তোমাদের সুবিধার্থে  পদ্মা নদী – বাংলা অনুচ্ছেদ যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আমার এই অনুরোধ হচ্ছে তোমরা পরীক্ষায় লিখলে বেশ ভালো নম্বর পাবে। আর যদি উপকৃত হও তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবে।