ঈদ উৎসব
মুসলমান সমাজের সবচেয়ে বড়াে উৎসব হচ্ছে ঈদ। বছরে দুবার ঈদ আসে। প্রথমে ঈদুল ফিতর, পরে ঈদুল আজহা। প্রথমটি দান করার উৎসব। দ্বিতীয়টি ভাগ করার উৎসব।
আজ থেকে প্রায় ১৩৮০ সোম ৭ আগে ঈদুল ফিতর উদযাপন শুরু হয়। ইসলামের প্রিয় নবি হজরত মােহাম্মদ (স.)-এর মদিনাতে হিজরতের অব্যাহত পরেই ঈদুল ফিতর উৎসব পালন শুরু হয়। ইসলামি আদর্শে উজ্জীবিত আরববাসীরা রাসূলুল্লাহ (স.)-এর নির্দেশে ঈদুল। ফিতর ও ঈদুল আজহা উৎসব উদযাপন শুরু করে।
ঈদুল ফিতর চান্দ্র-বছরের একটি বিশেষ মাস হচ্ছে রমজান। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদুল ফিতর।
ঈদুল আজহা ঈদুল-আজহা হচ্ছে আত্মত্যাগের ঈদ। এটি ঈদ আলকুরবান বা ঈদ আল-নাহর নামেও অভিহিত হয়। বাংলাদেশে এটি কুরবানির ঈদ নামে পরিচিত। জরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহতালার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে তাঁর পূর্ণ সম্মতিতে কুরবানি করতে উদ্যত হন (৩৭ : ১০২, ১০৭)। মক্কার নিকটস্থ ‘মীনা’ নামক স্থানে ৩৮০০ (সৌর) বৎসর পূর্বে এই মহান কুরবানির উদ্যেগ নেওয়া হয়। তার ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে তাঁর পুত্রের থলে একটি পশু কুরবানি করতে আদেশ দেন। আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্য ও নজিরবিহীন নিষ্ঠার এই মহান ঘটনা অনুক্রমে আজও মীনায় এবং মুসলিম জগতের সর্বত্র আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পশু কুরবানির রীতি প্রচলিত আছে। ঈদুল আযহা জ্বিলহজ্জের ১০ তারিখে, যে দিন পবিত্র হজ্জব্রত পালনকালে হাজিরা মীনা প্রান্তরে কুরবানি করেন এবং তৎপরবর্তী দুই দিন মতান্তরে তিন দিনও অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় ঈদই বাংলাদেশে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয়। সকলেই সেদিন একটু ভালাে পােশাক পরে। একটু ভালাে খাবারের আয়ােজন করে। পাড়া-পড়শিকে খাইয়ে তারা খুশি করে। ঈদের নামাজের জন্যে তারা ঈদগাহ ময়দানে যায়। এ ময়দানকে তখন মিলন-মেলা বলে মনে হয়। নামাজ শেষে তারা কোলাকুলি করে।
ঈদ শুধু উৎসব নয়, একটি গভীর অর্থ নিহিত আছে ঈদে। সকল বাঙালি মুসলমানকে এটা বুঝতে হবে। তবেই ঈদ-উৎসব সফল হবে। ধর্মীয় উৎসব বলে ঈদ প্রধানত মুসলমানদের মধ্যেই সীমিত।
Leave a comment