শিক্ষার মূল উপাদানের প্রেক্ষিতে (শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পাঠক্রম ও শিক্ষালয়) আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় -অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থা, নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রথাবহির্ভূত শিক্ষাব্যবস্থা।
কুম্বসের মতে, অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষা হল সেই ধরনের শিক্ষা যার ওপর আমাদের কোনাে নিয়ন্ত্রণ নেই। জে. পি. নায়েকের মতে, যে শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার কোনাে উপাদানকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় না, তাকেই অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থা বলে। অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
-
নিয়ন্ত্রণহীন,
-
শিক্ষকনির্ভর নয়,
-
নির্দিষ্ট পাঠক্রমহীন,
-
পূর্বপরিকল্পিত ও পূর্বনির্ধারিত নয়,
-
চার দেয়ালের মধ্যে গণ্ডিবদ্ধ নয়।
কোনাে পারিবারিক অনুষ্ঠান বা জীবনে চলার পথে শিক্ষা হল অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থার উদাহরণ।
যে শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার সব উপাদানগুলিই সুনিয়ন্ত্রিত তাকে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা বলে। এখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পাঠক্রম ও শিক্ষালয় সবই পূর্বনির্দিষ্ট এবং পরিকল্পিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার উদাহরণ। এই শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
-
এটি সংগঠিত ও পরিকল্পিত, নির্দিষ্ট পাঠক্রমনির্ভর।
-
এতে যােগ্য শিক্ষকের প্রয়ােজন।
-
এটি নির্দিষ্ট বয়সভিত্তিক শিক্ষা।
-
এতে নির্দিষ্ট স্থানের প্রয়ােজন।
-
এতে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি প্রয়ােজন।
-
এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর প্রত্যক্ষ সম্পর্ক অপরিহার্য।
-
শিক্ষায় রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ বর্তমান ইত্যাদি।
এই শিক্ষাব্যবস্থা অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মতাে একেবারে বন্ধনমুক্ত নয় এবং নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মতাে কঠোরভাবে নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ নয়। জে. পি. নায়েকের মতে, নিয়মতান্ত্রিক বিদ্যালয়ের বাইরে যে শিক্ষাব্যবস্থা তাকেই প্রথাবহির্ভূত শিক্ষা বলে। দূরশিক্ষা ব্যবস্থা প্রথাবহির্ভূত শিক্ষার উদাহরণ। প্রথাবহির্ভূত শিক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
-
এটি সংগঠিত ও পরিকল্পিত, কিন্তু যথেষ্ট নমনীয়।
-
এতে নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।
-
শিক্ষার্থীদের বয়সের শর্তও নেই |
-
নির্দিষ্ট শিক্ষালয়ের প্রয়ােজন হয় না।
-
ব্যয়বহুল নয়।
-
জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযােগ বর্তমান ইত্যাদি।
Leave a comment