‘History’ শব্দটি কোথা থেকে এসেছে এবং এর অর্থ কী?

‘History’ শব্দটি ‘Historia’ নামক একটি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ হল অনুসন্ধান বা তদন্ত।

জনশ্রুতি কী?

যখন কোনাে ঐতিহাসিক বিবরণের তথ্য ও সন-তারিখের যথার্থতার প্রমাণের অভাব থাকে এবং যে অতীত কাহিনিগুলি বংশপরম্পরায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌছােয়, তাকে জনশ্রুতি বলে।

কারা প্রথম লােককথা বা জনশ্রুতির কাহিনিগুলি সংকলন করেন?

জেকব গ্রিম ও উইলহেম গ্রিম নামে দুই ভাই জার্মানির কৃষকদের জনশ্রতি ও লােককথার বিভিন্ন কাহিনি সংগ্রহ করে সর্বপ্রথম ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে ‘Kinder-und Hausmarchen’ নামে একটি সংকলন প্রকাশ করেন।

পৌরাণিক কাহিনি বা মিথস কাকে বলে?

সৃষ্টির আদিম কালে অপরিণত বুদ্ধির মানুষ যে সমস্ত ধর্মীয় অলৌকিক কল্পকাহিনি রচনা ও প্রচার করে তাকে পৌরাণিক কাহিনি বা মিথস বলে।

কাদের কেন্দ্র করে মিথ গড়ে ওঠে?

দেবদেবী বা অতিদৈবিক ক্ষমতা সম্পন্ন বীর বা নায়ককে কেন্দ্র করে মিথ গড়ে ওঠে।

পৌরাণিক কাহিনি বলতে বিয়ারলেইন কী বুঝিয়েছেন?

বিয়ারলেইনের মতে, পৌরাণিক কাহিনি হল আমাদের অবচেতন মনের কাহিনি বিশেষ, যা সম্ভবত আমাদের জিন-এ লিপিবদ্ধ।

মিথের গুরুত্ব লেখাে।

মিথ অতীতকে জানতে ও বুঝতে সাহায্য করে। মিথের কাহিনি বিশ্লেষণ থেকে দেশীয় সমাজব্যবস্থা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার ধারণা মেলে।

উনবিংশ ও বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার (Short-Q&A)

ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি: নিয়মিত ও অনিয়মিত সাম্রাজ্য (Short-Q&A)

সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া (Short-Q&A)

ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (Short-Q&A)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ (Short-Q&A)

ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগ (Short-Q&A)

অব-উপনিবেশীকরণ (Short-Q&A)

লােককথা কী?

লােকসাহিত্যের এক বিশেষ অঙ্গ হল লােককথা। লােককথা মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের গল্প।

রূপকথার পরিচয় দাও।

জার্মান ভাষায় মারচেন কিংবা সুইডিশ ভাষায় সাগা’ রূপকথার মর্মার্থ প্রকাশ করে, এ ছাড়াও ইংরেজি ফেয়ারি টেল, জার্মান ম্যশে্ন, রুশীয় স্কাজঈ এবং ফিনীয় সাগেন হল রূপকথার সমধর্মী। রূপকথার চরিত্রগুলি সাধারণত কাল্পনিক হয়ে থাকে এবং রূপকথায় বর্ণিত কয়েকটি চরিত্র হল রাজা রানি, মন্ত্রী, কোটাল, রাজপুত্র-রাজকন্যা, দাস-দাসী, রাক্ষস-দৈত্য-ডাইনি-জাদুকর, পেতনি প্রভৃতি।

রূপকথার গুরুত্ব লেখাে।

রূপকথায় অতীত ঐতিহাসিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানাে হয়। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সূত্র হিসেবে রূপকথা নিজ দেশের অতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করে।

পরিকথার সংজ্ঞা দাও।

যে সমস্ত লােককথাগুলি পরিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় সেগুলি হল পরিকথা। পরিকথায় কোনাে পরি কাহিনিকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বা মুখ্য ভূমিকা পালন করে কাহিনিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

পশুকথা কাকে বলে?

পশুকে নিয়ে কল্পিত গল্পকে পশুকথা বলে। পশুকথায় পশু পাখিদের চারিত্রিক গুণাবলি তুলে ধরা হয়।

কিংবদন্তি বা লেজেন্ড কী?

ইতিহাস ও কল্পনার মিশ্রণে লৌকিক কথাসাহিত্যের রূপবিশিষ্ট লােককাহিনি হল কিংবদন্তি।

কয়েকটি কিংবদন্তি চরিত্রের উল্লেখ করাে।

কয়েকটি কিংবদন্তি চরিত্র হল—ভারত ইতিহাসের পৌরাণিক ইন্দ্র চরিত্র, কৃষ্ণ চরিত্র। রাম চরিত্র এবং ইংল্যান্ডের ইতিহাসে রবিন হুড চরিত্র ইত্যাদি।

‘Legend’ কথাটি কোথা থেকে এসেছে এবং এর অর্থ কী?

‘Legend’ শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘Legenda’ থেকে এসেছে। এর অর্থ হল পাঠের বিষয়বস্তু।

কিংবদন্তির (Legends) গুরুত্ব লেখাে।

কিংবদন্তির কাহিনি অবাস্তব বলে মনে হলেও তাতে সমাজজীবনের ছবি ফুটে ওঠে। প্রতিটি সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজ নিজ কিংবদন্ডিগুলিকে বংশপরম্পরায় প্রচারের মাধ্যমে অতীত ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার করে।

লিজেন্ড কীভাবে ইতিহাস রচনায় সাহায্য করে?

কোনাে ঐতিহাসিক ঘটনা বা স্থানের সঙ্গে লিজেন্ডের কাহিনির যােগসূত্র থাকে। ফলে ইতিহাস রচনায় বিশ্বাসযােগ্যতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে লিজেন্ড সাহায্য করে থাকে। পাশাপাশি লিজেন্ড মৌখিক বা লিখিত আকারে এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে তার কাহিনি পৌছে দেয়। ফলে বিষয়বস্তু বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকের কাজ সহজ হয়।

নীতিকথা কাকে বলে?

মানবসমাজের বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক নীতিগুলির দ্বারা যে লােককাহিনি বর্ণিত হয় তাকে বলা হয় নীতিকাহিনি। নীতিকথায় কোনাে উপদেশ প্রত্যক্ষভাবে উপস্থাপন করা হয়। নীতিকথাতে খুব সংক্ষিপ্তভাবে মূলনীতিগুলির উল্লেখ থাকে।

গীতিকা কী?

ইংরেজি ‘ব্যালাড-এর বাংলা প্রতিশব্দ হল গাথা বা গীতিকা। সুর করে নাটকীয় ভঙ্গিতে গাওয়া গল্পগুলি হল গীতিকা।

ব্রতকথা বলতে কী বােঝ?

ব্রতকথা বলতে আমরা লােককথার সেই বিভাগকেই বুঝি, যাতে ব্রতের মধ্যে দিয়ে গ্রামজীবনের নানা ধরনের আশা-আকাঙ্ক্ষা, কামনা-বাসনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। ব্রতকথা দু-ধরনের যথা—শাস্ত্রীয় ব্রত, মেয়েলি ব্রত।

লােককথার এপিক ল্য বলতে কী বােঝ?

লােককথার বিশ্বজনীন মিলগুলির ভিত্তিতে লােককথায় কিছু মহাসূত্রাবলি নির্ধারিত হয়েছে, যেগুলি এপিক ল্য (Epic Law) নামে পরিচিত। ডেনমার্কের অ্যাক্সেল ওলরিক মূলত ড্যানিশ সাগেন’অবলম্বনে লােককথার কিছু মহাসূত্র বা এপিক ল্য নির্ধারণ করেছেন।

লােককথার সঙ্গে লেজেন্ড-এর পার্থক্য কোথায়?

লােককথার তুলনায় লেজেন্ড অনেক বেশি বাস্তবধর্মী।

লােককথার মহাসূত্র বা এপিক ল্যগুলি প্রথম কে, কয়টি ভাগে ভাগ করেন?

ডেনমার্কের অ্যাক্সেল ওলরিক লােককথার মহাসূত্র বা এপিক ল্যগুলিকে এগারােটি ভাগে ভাগ করেন। তিনি মূলত ড্যানিশ সাগেন’—অবলম্বনে লােককথার মহাসূত্র বা এপিক ল্যগুলি নির্ধারণ করেন।

লােককথার মহাসূত্র বা এপিক ল্য-তে তিনের সূত্রটি কী?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লােককথার ঘটনাগুলি তিন-তিনবার করে হয়, যেমন—লােককথার কোনাে চরিত্র, কোনাে কাজের ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয়বারে সফল না হলেও তৃতীয়বারে অবশ্যই সফল হয়ে থাকে।

লােককথার মহাসূত্রে পুনরাবৃত্তির সূত্র-টি কী?

লােককথায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে বা চরিত্রগুলির মুখে একই সংলাপ ঘুরে ফিরে আসে। এমনকি একই শব্দ পুনরাবৃত্তির সময় বর্ণনা ভঙ্গিমাও একইরকম থাকে।

লােককথার একটি গুরুত্ব লেখাে।

লােককথার কাহিনিগুলি থেকে অতীতের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানা যায়।

লােককথায় সমাজের সূত্র বলতে কী বােঝ?

লােককথায় অনেক সময় ঘটনাগুলির মধ্যে অসংখ্য মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এমনকি অনেক সময় পার্শ্ব চরিত্রের নামকরণের ক্ষেত্রেও মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ইংরেজি ভাষায় লেখা বিশ্বের প্রথম লােককথার গল্পটির নাম লেখাে।

ইংরেজি ভাষায় লেখা বিশ্বের প্রথম লােককথার গল্পটির নাম হল রিচার্ড জনসনের ‘দ্য স্টোরি অফ টম থাম্ব।

ফোক লেজেন্ড ও ফোক টেল কথা দুটির পার্থক্য লেখাে।

ফোক লেজেন্ডের কাহিনি ফোক টেলের তুলনায় অনেক বেশি বাস্তবধর্মী হয়। ফোক লেজেন্ডের চরিত্রগুলি অনেক বেশি বিশ্বাসযােগ্য হওয়ায় সাহিত্যের ইতিহাসে ফোক লেজেন্ডের ঐতিহাসিক মূল্য ফোক টেলের তুলনায় অনেক বেশি।

Folklore বা Folk tales ইতিহাস রচনায় কীভাবে সাহায্য করে?

Folklore বা Folk tales-এর বিভিন্ন শাখা যেমন—লােকসাহিত্য, লােক শিল্পকলা, লােকসংগীত ইত্যাদি ইতিহাসের নানা উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি এগুলি সমাজের নানা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রথা ও রীতিনীতির সম্পর্কে ধারণা জুগিয়ে ইতিহাস রচনায় সাহায্য করে।

স্মৃতিকথা কাকে বলে?

যে অ-উপন্যাসধর্মী সাহিত্যে লেখক তার অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া কোনাে ঘটনার স্মৃতিচারণ করে থাকেন, তাকে স্মৃতিকথা বলা হয়।

স্মৃতি কয় প্রকার ও কী কী?

পন্ডিত ও গবেষক হেইডেন হােয়াইটের ধারণায় স্মৃতি দু’প্রকার। একটি হল Traditionalised Memory’, যা মূলত অতীত ঐতিহ্যের মধ্যে থাকে। অপরটি হল Rationalised Memory, যা মূলত কোনাে সম্প্রদায়ের অতীতকে তুলে ধরে।

মিথ ও স্মৃতিকথার মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী?

মিথ ও স্মৃতিকথার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল—মিথের কাহিনি অনেকটাই কল্পকথা, কিন্তু স্মৃতিকথার কাহিনি হল অতীতের বাস্তব ঘটনাবলির বিবরণ।

স্মৃতির ওপর নির্ভর করে যে স্মৃতিকথা লেখা হয় তার প্রকৃতি লেখাে।

প্রকৃতিগত বিচারে স্মৃতিকথা হল লৌকিক জ্ঞান। যেখানে অতীতের কোনাে ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত ব্যাপারে আলােকপাত করা হয়। স্মৃতির মধ্যে দিয়ে অতীত ঘটনা বা কাহিনি পুনরায় পরিবেশিত হয়।

ইতিহাস ও স্মৃতিকথার সম্পর্ক লেখাে।

ইতিহাসে অতীত ঘটনা বা কাহিনি তথ্যসূত্র-সহ সাল-তারিখ মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে পরিবেশিত হয়। স্মৃতিকথাতেও তথ্যসূত্র বা সাল-তারিখের উপস্থিতি খুব একটা না থাকলেও তাতে অতীত কাহিনি বা ঘটনা পরিবেশিত হয়।

স্মৃতিকথার একটি উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য লেখাে।

স্মৃতিকথা আসলে অতীতে ঘটে যাওয়া বাস্তব অভিজ্ঞতার বিবরণ। স্মৃতিকথায় যে কাহিনি বর্ণিত বা পরিবেশিত হয় তা কোনাে ব্যক্তিবিশেষের প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ বাস্তব অভিজ্ঞতার বিবরণ বলা চলে।

মৌখিক ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

মৌখিক ইতিহাস অতীতের নানাধরনের গল্প বা কাহিনি জানতে সাহায্য করে এবং অতীতের বহু বিষয় ও তথ্যের জানান দেয়।

মৌখিক ঐতিহ্য বলতে কী বােঝ?

মৌখিক ঐতিহ্য হল এমন এক সংস্কৃতিগত ধারণা যা এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে লােকমুখে প্রচারিত হয়। বিভিন্ন দিক থেকে মৌখিক ঐতিহ্যের সংজ্ঞা দেওয়া যায় ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসােসিয়েশন-এর মতে, অতীতের ঘটনা সম্পর্কে মানুষের কণ্ঠস্বর, স্মৃতিকথা, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং বিশ্লেষণ এবং চর্চা করাকেই মৌখিক ঐতিহ্য বলে।

কীভাবে মৌখিক ঐতিহ্যের আধুনিক ধারণার বিকাশ ঘটে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালান নেভিন কলম্বিয়া ওরাল হিস্ট্রি রিসার্চ অফিস’ প্রতিষ্ঠা (১৯৪৮ খ্রি.) করে মৌখিক ঐতিহ্যের আধুনিক ধারণার বিকাশ ঘটান। এ ছাড়াও আমেরিকার মৌখিক ইতিহাসবিদগণ ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসােসিয়েশন এবং ব্রিটিশ মৌখিক ইতিহাসবিদগণ ওরাল হিস্ট্রি সােসাইটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মৌখিক ঐতিহ্যের আধুনিক ধারণার বিকাশ ঘটান।

মুখের কথা ও মৌখিক ঐতিহ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখাে।

মুখের কথা বলতে গবেষকগণ সাক্ষাৎকারভিত্তিক বা স্মৃতিভিত্তিক ঐতিহ্যকে বােঝান। অনেকে আবার প্রবাদ-প্রবচনকেও মুখের কথার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। পক্ষান্তরে মৌখিক ঐতিহ্যে ইতিহাসধর্মী দলিল দস্তাবেজ ও অন্যান্য লিখিত উপাদানের সঙ্গে মুখের কথাকে যাচাই করে নেওয়ার প্রসঙ্গ আসে।

মৌখিক ঐতিহ্যের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখাে।

মৌখিক ঐতিহ্যের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল সাক্ষাৎকার অর্থাৎ কোনাে কাহিনি বা ঘটনার একটি চরিত্রের সঙ্গে অন্য চরিত্রের সাক্ষাতের ফলশ্রুতি এক্ষেত্রে মৌখিকভাবে বর্ণিত হয়।

মৌখিক ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত দুটি সংস্থার নাম লেখাে।

মৌখিক ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত দুটি সংস্থার নাম হল আমেরিকার ওরাল হিস্ট্রি অ্যাসােসিয়েশন’ ও ব্রিটেনের ওরাল হিস্ট্রি সােসাইটি’।

পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী আতুম কে?

পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী আতুম হলেন মিশরীয় দেবতা। মিশরের পুরাণে বলা আছে আতুম বিশ্বের সবকিছুর স্রষ্টা।

আধুনিক ইতিহাস তত্ত্বের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখাে।

আধুনিক ইতিহাসতত্ত্বের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল- জাতীয়তাবাদ, যুক্তিবাদ, প্রগতির ধারণা, দৃষ্টবাদ, অবয়ববাদ ও উত্তর অবয়ববাদ, আধুনিকতা ও উত্তর আধুনিকতা, আপেক্ষিকতাবাদ, বিজ্ঞানধর্মিতা ও নৈতিকতাবাদ ইত্যাদি।

র‍্যাঙ্কের ইতিহাস চর্চার ধারা কী নামে পরিচিত?

ঐতিহাসিক র‍্যাঙ্কের ইতিহাস চর্চার ধারা বার্লিন বিপ্লব নামে পরিচিত।

History from below’ বা নীচের দিক থেকে ইতিহাস চর্চার ধারার প্রবর্তক কারা?

‘History from below’ বা নীচের দিক থেকে ইতিহাস চর্চার ধারার প্রবর্তক হলেন ইংল্যান্ডের ক্রিস্টোফার হিল এবং ই. পি. টমসন।

অপরাধ-সংক্রান্ত ইতিহাস চর্চার ধারাকে কারা পরিপুষ্ট করেন?

এরিক জন হবসবম, মিশেল ফুকো প্রমুখ অপরাধ-সংক্রান্ত ইতিহাস চর্চার ধারাকে পরিপুষ্ট করেন।

“The New Nature of History’ কার লেখা?

‘The New Nature of History’ গ্রন্থটি আর্থার মারউইক-এর লেখা।

বিংশ শতকে আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন তত্ত্বের উল্লেখ করেছেন, এমন কয়েকজন ঐতিহাসিকের নাম লেখাে।

বিংশ শতকে আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন তত্ত্বের উল্লেখ করেন— মার্ক লিওপােল্ড বেঞ্জামিন ব্লক, এডওয়ার্ড হ্যালেট কার, এ. জে. পি. টেলর, লুই নেমিয়ার, ক্রিস্টোফার হিল, আর. জি. কলিংউড, বেনেদেতাে ক্রোচে, মিশেল ফুকো, ফারনান্দ ব্ৰদেল প্রমুখ।

আধুনিক ইতিহাস তত্ত্বে প্রগতির ধারণাটি কী?

আধুনিক ইতিহাস তত্ত্ব অনুযায়ী ইতিহাসে প্রগতির ধারা নিরবচ্ছিন্ন নয়, তাতে উত্থান যেমন আছে, পতনও তেমন আছে। ইতিহাসে প্রগতির আসল অর্থ হল মানুষের ক্ষমতা ও সম্ভাবনার বিপুল বিস্তার।

আধুনিক ইতিহাস তত্ত্ব অনুযায়ী দৃষ্টবাদী পদ্ধতি মেনে ঐতিহাসিককে কী কী কাজ করতে হয়?

আধুনিক ইতিহাস তত্ত্বে দৃষ্টবাদী পদ্ধতি মেনে ঐতিহাসিককে দুটি কাজ করতে হয়, যথা ঐতিহাসিক তথ্য আবিষ্কার ও ঐতিহাসিক তথ্যসূত্রের দ্বারা ঘটনার ব্যাখ্যা দান।

ইতিহাস চর্চায় কার্যকারণ পদ্ধতিটি কী?

ইতিহাসে বলা হয় যে প্রতিটি কাজ ঘটার অন্তরালে কোনাে না কোনাে কারণ থাকে। ইতিহাস চর্চায় এই কাজ বা ঘটনা ঘটার কারণ অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ পদ্ধতিটি হল কার্যকারণ পদ্ধতি।

অবয়ববাদ কী?

অবয়ববাদ হল আসলে প্রথাগত ও আচারগত ঐতিহ্যের ওপর নির্ভরশীল মানব ইতিহাস। ঐতিহাসিক ধারণায় অবয়রে পরিবর্তন ঘটলে বিষয়বস্তুরও পরিবর্তন ঘটে।

ইতিহাস চর্চায় আপেক্ষিকতাবাদ বলতে কী বােঝ?

ইতিহাস চর্চায় আপেক্ষিকতাবাদ অনুযায়ী ইতিহাসে বিষয়বস্তুর গুরুত্ব, সময়ের গুরুত্ব, ঘটনার পরিণতির গুরুত্ব সবই আপেক্ষিক। এই মতবাদে সময়ের সঙ্গে ইতিহাসের তথ্যসূত্রগুলির সত্যতা আপেক্ষিক বলে প্রমাণিত হয়।

সাবলটার্ন গােষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা কে?

সাবলটার্ন গােষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ড. রণজিৎ গুহ।

Founder of Modern Source-based History’-এর লেখক কে?

“Founder of Modern Source based History’-এর লেখক হলেন লিওপােল্ড ভন র‍্যাঙ্কে।

পেশাদারি শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব লেখাে।

পেশাদারি শাখা হিসেবে ইতিহাসের কয়েকটি গুরুত্ব হল-ইতিহাস অতীতের ধারণাদানে, জ্ঞানের বিকাশে, ঘটনার ধারাবাহিকতা অনুধাবনে, অতীত ও বর্তমানের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করে থাকে। এ ছাড়াও ইতিহাস সঠিক সত্য নিরূপণে, আর্থ-সাংস্কৃতিক উন্নতির ধারণালাভে এবং জাতীয়তাবাদের বিকাশে সাহায্য করে থাকে।

ইতিহাস রচনা করতে গেলে ঐতিহাসিককে যেসব পদ্ধতি মেনে এগােতে হয় সেগুলির কয়েকটি উল্লেখ করাে।

ইতিহাস রচনা করতে গেলে ঐতিহাসিককে যে সমস্ত পদ্ধতি মেনে এগােতে হয়, তার কয়েকটি হল- [i] উৎসের অনুসন্ধান, [ii] উৎস থেকে তথ্য চয়ন, [iii] তথ্যের যাচাইকরণ, [iv] তথ্যসমূহের বিশ্লেষণ, [v] ঘটনা ও বক্তব্যের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন, [vi] ধারাবাহিকতা ও কালানুক্রম, [vi] কার্যকারণ পদ্ধতি, ভৌগােলিক অবস্থানের গুরুত্ব, [viii) তথ্য সংরক্ষণ প্রভৃতি।

ইতিহাস তত্ত্ব কী?

একজন ইতিহাসবিদ যে সমস্ত নিয়মনীতি, আদর্শ ও পদ্ধতি মেনে ইতিহাস রচনা করে থাকেন, তা হল ইতিহাস তত্ত্ব।

আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি বা চর্চার বিভিন্ন ভাগগুলি কী কী?

আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি বা চর্চার বিভিন্ন ভাগগুলি হল—সাম্রাজ্যবাদী, জাতীয়তাবাদী, কেমব্রিজ গােষ্ঠী, মার্কসবাদী এবং নিম্নবর্গীয় (সাবলটার্ন) প্রভৃতি।

আধুনিক ইতিহাস চর্চার জনক কাকে কেন বলা হয়?

আরবীয় ঐতিহাসিক ইবন খালদুনকে আধুনিক ইতিহাস চর্চার জনক বলা হয়। কারণ তিনি প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ইতিহাস রচনার সূচনা করেন এবং ত্রুটিবিচ্যুতিগুলি তুলে ধরেন।

কে কোন্ শতককে ইতিহাসের শতক বলে উল্লেখ করেছেন?

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক জর্জ পেবডি গুচ উনিশ শতককে ইতিহাসের শতক বলে উল্লেখ করেছেন।

সাধারণ মানুষের ইতিহাস রচনার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ কেন?

আধুনিক ইতিহাসবিদগণ মনে করেন উচ্চবর্গীয়দের ইতিহাস খণ্ডিত ও অসম্পূর্ণ। সমাজের গরিষ্ঠ শ্রেণির জীবনচর্চা তাতে থাকে না। তাই সমাজের বৃহত্তর অংশের জীবচর্চার ধারণা লাভের জন্য সাধারণ মানুষের ইতিহাস রচনা গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটিশ ইতিহাসের জনক নামে কে পরিচিত?

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ভেনেরাবেল বিড ব্রিটিশ ইতিহাসের জনক নামে পরিচিত।

বার্লিন বিপ্লব বলতে কী বােঝ?

জার্মান ঐতিহাসিক লিওপােল্ড ভন র্যাকে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস চর্চার সময়কালে মহাফেজখানার তথ্য এবং দলিলগুলির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। এই দুই উপাদান থেকে তথ্য নিয়ে নৈবত্তিক ইতিহাস রচনা করা যায় বলে তিনি প্রচার করেন। তার প্রচারিত ইতিহাস চর্চার এই ধারা বার্লিন বিপ্লব নামে পরিচিত।

নীচের দিক থেকে ইতিহাস (History from below) চর্চার ধারা বলতে কী বােঝ?

আধুনিক ইতিহাস চর্চায় সমাজের অনালােচিত অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণির ভূমিকা তুলে। ধরার প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের আধুনিক ইতিহাসচর্চায় তৃণমূল স্তরের মানুষের দিনগত জীবনযাপনের বিশ্লেষণ, জনতার মানসিকতা ও কার্যকলাপ স্থান পায়। এই ধরনের ইতিহাস চর্চাকে নীচের দিক থেকে ইতিহাস (History from below) চর্চার ধারা বলে।

অ্যানালিটিক্যাল অপারেশন বলতে কী বােঝ?

জার্মান ঐতিহাসিক র্যাঙ্কে এবং নেবুর যে ইতিহাস বিশ্লেষণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন তার নাম অ্যানালিটিক্যাল অপারেশন। এই ইতিহাস বিশ্লেষণ পদ্ধতির দুটি ভাগ। প্রথম ভাগে ঘটনাকে ছােটো ছােটো অংশে ভাগ করে তথ্যের সত্যতা যাচাই করা হয়। আর দ্বিতীয় ভাগে ঘটনার ছােটো ছােটো অংশগুলি যােগ করে একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়।

ইতিহাস চর্চায় গৌণ উপাদান (Secondary source) বলতে কী বােঝ?

ইতিহাস চর্চায় ঐতিহাসিকগণ আকর তথ্যগুলির ব্যবহারের দ্বারা যে গ্রন্থ রচনা করেন। তাকে গৌণ উপাদান বা Secondary source বলা হয়।

র‍্যাঙ্কের মতে ঘটনা (fact) ইতিহাস রচনায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

জার্মান ঐতিহাসিক লিওপােল্ড ভন র‍্যাঙ্কে বলেন ইতিহাস রচনায় ঘটনা ও তথ্যগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে ঘটনা ও তথ্যগুলি সাজালে সেগুলির দ্বারাই ইতিহাস রচনা করা যাবে।

ই. এইচ. কার-এর মতে ঘটনা (fact) ইতিহাস রচনায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

ঐতিহাসিক ই. এইচ. কার (এডওয়ার্ড হ্যালেট কার)-এর ধারণায় ঘটনা জোগাড় করেই ঐতিহাসিকের দায়িত্ব শেষ হয় না। তার বড় দায়িত্ব হল ঘটনাগুলির নির্বাচন এবং সেগুলির যথাযথ ব্যাখ্যা। তবে এক্ষেত্রে ঐতিহাসিকই ঠিক করবেন যে ইতিহাস রচনায় কোন ঘটনার উপর কতখানি গুরুত্ব দেবেন।

প্রত্যক্ষবাদ (Positivism) কী?

প্রত্যক্ষবাদ হল এমন এক ইতিহাস চর্চার ধারা যাতে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞান অর্জনের সুযােগ থাকে। অর্থাৎ যে মতবাদে বিজ্ঞানকে সমস্ত জ্ঞান ও প্রগতির ভিত্তি হিসেবে এবং সকল সমস্যার সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা হয় তা হল প্রত্যক্ষবাদ।

হুইগ ইতিহাস চর্চা কী?

উনিশ শতকে ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিকরা জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অতীত গৌরবের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের বিষয়ে যে ইতিহাস চর্চা শুরু করেন তা হুইগ ইতিহাস চর্চা নামে পরিচিত। এই ইতিহাস চর্চায় উল্লেখযােগ্য অবদান রাখেন বিশপ স্ট্যাবস, টাউট, লর্ড অ্যাকটন প্রমুখ ইতিহাসবিদগণ।

মার্কসীয় ইতিহাস চর্চা বলতে কী বােঝ?

যে ইতিহাস চর্চায় বলা হয় শ্রেণিশােষণ ও শ্রেণিদ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে সর্বহারা শ্রেণির একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে এবং যেখানে রাষ্ট্রব্যবস্থার অবসান ঘটবে সেই ধারণাভিত্তিক ইতিহাসচর্চা হল মার্কসীয় ইতিহাসচর্চা। এই ইতিহাসচর্চার দুই পথিকৃৎ হলেন কার্ল মার্কস ও ফেডারিক এঙ্গেলস।

Total History বলতে কী বােঝ?

ফ্রান্সের অ্যানাল গােষ্ঠীর ইতিহাসবিদগণ বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে যে ইতিহাস চর্চা পদ্ধতির সূচনা করেন তা Total History নামে পরিচিত। এই ইতিহাস চর্চায় রাজনৈতিক ইতিহাসের পরিবর্তে সমাজের সাধারণ মানুষের জীবনের নানা দিকগুলি তুলে ধরা হয়।

অ্যানাল গােষ্ঠীর ইতিহাসবিদ ফার্নান্দ ব্ৰদেল Total History’ নামক ইতিহাস চর্চার ধারণায় কী অবদান রাখেন?

ফারনান্দ ব্ৰদেল ‘Total History’ নামক ইতিহাস চর্চায় বলেন ঐতিহাসিক সময়ের তিনটি ভাগ, যথা—দীর্ঘকালীন পর্যায় (Long term), মাঝামাঝি পর্যায় (Medium term) এবং স্বল্পকালীন পর্যায় (Short term)। তিনি এই তিন সময়কালের মধ্যে সমগ্র বিশ্বকেন্দ্রিক এক ইতিহাস রচনা করেন। এই ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে তিনি অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, ভূগােল-সহ নানা বিষয়কে ব্যবহার করে Total History’ নামক ইতিহাস চর্চায় নতুন পথ দেখান।

নেমিয়ার পদ্ধতি কী?

ঐতিহাসিক লুই লিমিয়ার তার ‘স্ট্রাকচার অব পলিটিক্স’ গ্রন্থে ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টের সদস্যদের সামাজিক কাঠামাে বা কাজের পদ্ধতি আলােচনা করেন যা Prosopography নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যদের জীবন কার্যকলাপ সামাজিক যােগাযােগ ইত্যাদির পাশাপাশি রাজনৈতিক গােষ্ঠীগুলির উদ্দেশ্য ও কাজকে বিশ্লেষণ করে পথ দেখান যা নেমিয়ার পদ্ধতি নামে পরিচিত।

ক্রেমব্রিজ ব্যাখ্যা বলতে কী বােঝ?

ক্রেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ঐতিহাসিক ভারতীয় জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে এক বিশেষ ব্যাখ্যা দেন যা ক্রেমব্রিজ ব্যাখ্যা নামে পরিচিত। এই ব্যাখ্যায় বলা হয় ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের লড়াই ছিল এক সাজানাে লড়াই। প্রকৃত দ্বন্দ্ব ছিল মূলত ভারতীয়দের মধ্যেই।

হিউরিসটিক পদ্ধতি বলতে কী বােঝ?

যে পদ্ধতিতে একজন ঐতিহাসিক তার ইতিহাস লেখার উপাদানকে যাচাই ও বিচার করার জন্য বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি গ্রহণ করেন ও ইতিহাস রচনায় বিষয়গত অনুসম্ধানের ওপর জোর দেন, সেই পদ্ধতির নাম হিউরিসটিক পদ্ধতি।

জার্মান দার্শনিক হেগেল সমাজের ভেতরকার ঘাত-প্রতিঘাতকে কীভাবে ব্যাখ্যা করেছেন?

জার্মান দার্শনিক হেগেল বলেন সমাজে যে শক্তি স্থিতাবস্থা ধরে রাখে তার নাম থিসিস (thesis), যে শক্তি স্থিতাবস্থা ভাঙতে চায় তা হল অ্যান্টিথিসিস (Antithesis)। আর সমাজে এই দুই শক্তির প্রতিনিয়ত ঘাত-প্রতিঘাতের ফলে ধীরে ধীরে যে পরিবর্তন ও সমন্বয় ঘটে তা হল সিনথেসিস (Synthesis)।

ইতিহাস রচনায় পরীক্ষানিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের কয়টি স্তর ও কী কী?

ইতিহাস রচনায় পরীক্ষানিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের চারটি স্তর। এগুলি হল [i] হিউরিসটিক (Heuristic) বা বাহ্যিক সমালােচনার স্তর, [i] হারমিনিউটিকস (Hermeneuties) বা অভ্যন্তরীণ সমালােচনার স্তর, [iii] সিনথেসিস (Synthesis) বা সমন্বয়সাধনের স্তর এবং [iv] এক্সপােজিশন (Exposition) বা বর্ণনাগত স্তর।

What is History বইটি কার লেখা?

‘What is History বইটি ই এইচ কারের লেখা।

কে ইতিহাসের সময়কালকে তিনটি যুগে ভাগ করেছেন?

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক জেমস মিল ইতিহাসের সময়কালকে তিনটি যুগে ভাগ করেছেন।

জাদুঘরের সংজ্ঞা দাও।

সাধারণভাবে বলা যায় জাদুঘর হল বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা, যেখানে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শিল্প-বিষয়ক ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করে তা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এককথায়, বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে সেগুলি যেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনে সংরক্ষণ করে রাখা হয় সেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনকে জাদুঘর বলা হয়।

মিউজিয়াম শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে এবং এর অর্থ কী?

মিউজিয়াম শব্দটির উৎপত্তি প্রাচীন গ্রিক শব্দ মউসিয়ান থেকে। এর অর্থ হল গ্রিক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপােষক মিউসদের মন্দির।

জাদুঘরের কয়েকটি মূল উদ্দেশ্য লেখাে।

জাদুঘরের কয়েকটি মূল উদ্দেশ্য হল প্রত্ননিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, অতীত সমাজ সভ্যতার ধারণা দান, জনসচেতনতা গঠন, জ্ঞানের প্রসার, ঐতিহাসিক নিদর্শন নিয়ে গবেষণার সুযােগ করে দেওয়া প্রভৃতি। এ ছাড়াও অতীত ইতিহাসের পুনরাবির্ভাব ঘটানাের লক্ষ্যে এবং প্রতিকৃতি নির্মাণের উদ্দেশ্যেও জাদুঘর গড়ে ওঠে।

জাদুঘরের কয়েকটি রূপ লেখাে অথবা জাদুঘরের প্রকারভেদ উল্লেখ করাে।

জাদুঘরের বিভিন্ন ভাগগুলি হল—[i] সাধারণ জাদুঘর বহুমুখী জাদুঘর, শিশু জাদুঘর, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ জাদুঘর; [ii] কলা জাদুঘর—শিল্প সংরক্ষণ জাদুঘর, শিল্প দ্রব্য ও প্রতিকৃতি প্রদর্শালা, আধুনিক কলা জাদুঘর, লােককলা ও কারুশিল্প জাদুঘর; [iii] ঐতিহাসিক জাদুঘর—প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, ব্যক্তিবিষয়ক জাদুঘর, রাজপ্রাসাদ জাদুঘর, স্মৃতি জাদুঘর; [iv] বিজ্ঞানবিষয়ক জাদুঘর—ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর, প্রাণীবিদ্যা। জাদুঘর, প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর, বিজ্ঞান জাদুঘর ইত্যাদি।

কয়েকটি ইতিহাস বিষয়ক জাদুঘরের নাম উল্লেখ করাে।

কয়েকটি ইতিহাস বিষয়ক জাদুঘর হলকলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমােরিয়াল হল (১৯২১ খ্রি.), কর্ণাটকের মহিশূর প্যালেস (১৯১২ খ্রি.), মিউজিয়াম অব লন্ডন (১৯৭৬ খ্রি.), মিউজিয়াম অব দ্য সিটি অব নিউইয়র্ক (১৯৩০ খ্রি.), ন্যাশনাল মিউজিয়াম (১৮৫৭ খ্রি.), সেন্ট্রাল লেনিন মিউজিয়াম ইত্যাদি।

কয়েকটি বিজ্ঞান বিষয়ক জাদুঘরের নাম উল্লেখ করাে।

কয়েকটি বিজ্ঞান বিষয়ক জাদুঘরের নাম হল—কলকাতার সায়েন্স সিটি (১৯৯৭ খ্রি.), বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনােলজিক্যাল মিউজিয়াম (১৯৫৯ খ্রি.), আমেরিকার পিবডি মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি (১৮৬৬ খ্রি.), শিকাগাের মিউজিয়াম অব সায়েন্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (১৯৩৩ খ্রি.), সায়েন্স মিউজিয়াম, মিউনিখের জার্মান মিউজিয়াম (১৯০৩ খ্রি.) ইত্যাদি।

কয়েকটি কলা বিষয়ক জাদুঘরের নাম উল্লেখ করাে।

কয়েকটি কলা বিষয়ক জাদুঘরের নাম হল—ভারতের নিউ দিল্লির ন্যাশনাল ফোক অ্যান্ড ক্র্যাফট মিউজিয়াম (১৯৫৬ খ্রি.), কলকাতার আশুতােষ মিউজিয়াম অব ইন্ডিয়ান আর্ট (১৮৩৭ খ্রি.), হংকং-এর কলা জাদুঘর (১৯৬২ খ্রি.), জেরুজালেমের বিলিরােজ কলা উদ্যান, আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অব আর্ট (১৮৭৬ খ্রি.), প্যারিসের লুভর (১৭৯২ খ্রি.), লন্ডনের ন্যাশনাল অ্যান্ড টেল গ্যালারিজ প্রভৃতি।

কবে ও কার তত্ত্বাবধানে ভারতীয় জাদুঘর স্থাপিত হয় এবং প্রথমদিকে ভারতীয় জাদুঘরের নাম কী ছিল?

১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে ডাচ উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ড. ন্যাথানিয়েল ওয়ালিচের তত্ত্বাবধানে এশিয়াটিক সােসাইটির মূলভবনে ভারতীয় জাদুঘর স্থাপিত হয়। প্রথমদিক ভারতীয় জাদুঘরের নাম ছিল প্রাচ্য সংগ্রহশালা (Oriental Museum)।

পৃথিবীর প্রাচীনতম মিউজিয়ামটির নাম কী এবং এটি কোন্ সময়কালে গড়ে ওঠে?

পৃথিবীর প্রাচীনতম মিউজিয়ামটির নাম হল মেসােপটেমিয়ার এননিগালডি-নান্নার সংগ্রহশালা।

কবে, কোথায় ব্রিটিশ মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৭৫৩ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে ব্রিটিশ মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়।

শিল্পবিপ্লবের সময়কালে ইউরােপে কোন্ দুই বিখ্যাত মিউজিয়াম তৈরি হয়?

শিল্পবিপ্লবের সময়কালে ১৭৫৯ খ্রি. লন্ডনে তৈরি হয় দ্য ব্রিটিশ মিউজিয়াম (১৭৫৯ খ্রি.)। এ ছাড়াও শিল্পবিপ্লবকালে ফ্রান্সের প্যারিসে তৈরি হয়েছিল ল্যুভর মিউজিয়াম (১৭৯৩ খ্রি.)।

কীভাবে দি ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম বা ভারতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়?

এশিয়াটিক সােসাইটির উদ্যোগে কলকাতায় ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয় (১৮৬৪ খ্রি.)। এই মিউজিয়ামটির প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ডেনমার্কের জীববিদ্যা বিশারদ ড. ন্যাথানিয়েল ওয়ালিচ।

ভারতের সর্ববৃহৎ মিউজিয়ামটির নাম লেখাে।

বর্তমানে ভারতের সর্ববৃহৎ মিউজিয়ামটির নাম হল কলকাতার ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম। দুটি বিভাগের প্রায় ৩৫টি গ্যালারিতে চিত্রকলা, প্রত্নতত্ত্ব ও নৃতত্ত্ব, ভূতত্ত্ব, অর্থনীতি ও জীববিদ্যার আলাদা আলাদা বিভাগ রয়েছে।

মিউজিয়ামের অংশ হিসেবে কিছু ব্যক্তিগত সংগ্রহের নাম উল্লেখ করাে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মিউজিয়ামের মতােই কিছু সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে। এই ধরনের কিছু সংগ্রহ হল—পাদুয়ার লুকা ঘিনি সংগ্রহ, বােলােগনা-র উলসি এন্ড্রোভান্ডির সংগ্রহ। ইংল্যান্ডের রবার্ট কটনের পুরাতন পুঁথির সংগ্রহ, নেপলসের ফেরান্তে ইম্পেরাতাে এবং কোপেনহেগেনের ওলে ওয়র্ম-এর সংগ্রহ প্রভৃতি।

কোথায় পৃথিবীর প্রাচীনতম জাদুঘর গড়ে উঠেছিল?

পৃথিবীর প্রাচীনতম জাদুঘর এননিগালডিনান্নার এখনকার ইরাকে গড়ে উঠেছিল (আনুমানিক ৫৩০ খ্রি.পূ.)।

পৃথিবীর প্রথম আধুনিক জাদুঘর বলা হয় কোন্ যাদুঘরকে?

ইলিয়াস অ্যাশমােল-এর ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা দ্য অ্যাশমােলিয়ান মিউজিয়ামকে পৃথিবীর প্রথম আধুনিক জাদুঘর বলা হয়।

জাদুঘরের যুগ বলতে কোন্ সময়কালকে বােঝানাে হয়?

জাদুঘরের যুগ বলতে উনিশ শতকের শেষার্ধ থেকে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সময়কালকে বােঝানাে হয়।

পৃথিবীর প্রথম জীবন্ত ইতিহাস জাদুঘরটির নাম লেখাে।

পৃথিবীর প্রথম জীবন্ত ইতিহাস জাদুঘরটি হল নেদারল্যান্ডের স্টকহােমের কাছে অবস্থিত স্ক্যানসেন মিউজিয়াম।

ভারতীয় জাদুঘরের পূর্বেকার নাম কী ছিল?

ভারতীয় জাদুঘরের পূর্বেকার নাম ছিল ওরিয়েন্টাল সংগ্রহশালা।

সরকারি উদ্যোগে কোন্ দেশে প্রথম জাদুঘর গড়ে তােলা হয়?

সরকারি উদ্যোগে প্রাচীন রােম দেশে প্রথম জাদুঘর গড়ে তােলা হয়।

বিশ্বের প্রথম আর্ট মিউজিয়ামের নাম কী?

বিশ্বের প্রথম আর্ট মিউজিয়ামের নাম হল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসমােলেন মিউজিয়াম।

কোন ঐতিহাসিক ভারতকে প্রত্নতত্ত্বের জাদুঘর বলে উল্লেখ করেছেন?

ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ ভারতকে প্রত্নতত্ত্বের জাদুঘর বলে উল্লেখ করেছেন।

কোন্ জাদুঘরটি পৃথিবীর সর্বপ্রথম জাদুঘর নামে পরিচিত?

হান্স স্লোয়ান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত লন্ডনের ব্রিটিশ জাদুঘরটি (১৭৫৩ খ্রি.) পৃথিবীর সর্বপ্রথম জাদুঘর নামে পরিচিত।

কিউরেটার কাদের বলা হয়?

মিউজিয়ামে নানা ধরনের বস্তু সামগ্রী ও নিদর্শন রাখা থাকে। এই নিদর্শন ও বস্তু সামগ্রী যারা দেখাশােনা করেন তাদের প্রধানকে কিউরেটার বলা হয়।