মিথ বা পৌরাণিক কাহিনিগুলি অতীত বিষয়ে মানুষের ধারণাকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করে। যেমন一
[1] অতীতের সঞ্চালন: জে. এফ. বিয়ারলেইন মনে করেন যে, মিথ বা পৌরাণিক কাহিনিগুলি হল- “গল্পের আকারে (কোনাে মানব সংস্কৃতির) সত্য ঘটনার প্রকাশ।” অর্থাৎ অতীতের বিভিন্ন ঘটনা পৌরাণিক কাহিনিগুলির মাধ্যমে বংশপরম্পরায় গল্পের আকারে বর্তমান মানুষের কাছে সঞ্চালিত হয়ে আসে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় প্রাচীন গ্রিসের মিথের সূত্র ধরেই বর্তমানকালের ট্রয় নগরী ও ট্রয়ের যুদ্ধ ক্ষেত্রের অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
[2] সময়কাল নির্ণয়: বিভিন্ন মিথ বা পৌরাণিক কাহিনিগুলি তুলনামূলক পদ্ধতিতে যাচাই করে ইতিহাসের বহু সাল-তারিখ জানা সম্ভব হয়। ফলে অতীতের ধারাবাহিক ছবি মানুষের কাছে স্পষ্ট হতে পারে।
[3] বংশলতিকা: অতীতকালের বিভিন্ন রাজবংশের বংশলতিকা বহু মিথ বা পৌরাণিক কাহিনিতে পাওয়া যায়। এগুলি থেকে বিভিন্ন রাজবংশ, রাজার নাম ও পরিচয় জানা যায়। ড. রণবীর চক্রবর্তী মনে করেন যে, পুরাণে বর্ণিত রাজবংশগুলির অস্তিত্বের বেশিরভাগই স্বীকৃত সত্য।
[4] ধারাবাহিকতা: প্রাচীন সংস্কৃতি থেকে যেসব আধুনিক মানব সংস্কৃতির উৎপত্তি হয়েছে তারা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয় যে, প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে তাদের সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে যেসব ঘটনা প্রচলিত রয়েছে সুগলি সত্য। যেমন—বর্তমানকালের হিন্দু সম্প্রদায় প্রাচীন বৈদিক সংস্কৃতিকে নিজেদের অতীত সংস্কৃতি বলে মনে করে।
প্রচলিত কিংবদন্তিগুলি অতীত বিষয়ে মানুষের ধারণাকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করে। যেমন一
[1] সত্যতা: কিংবদন্তির কাহিনিগুলিকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক বলা যায় না। বহু ক্ষেত্রে এগুলিতে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বাস্তব ঘটনার ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন বাংলার কিংবদন্তি চরিত্র রঘু ডাকাতের কালীপুজোর ভিত্তিতে আজও একটি কালী মন্দিরকে চিহ্নিত করা হয়।
[2] ঐতিহাসিক তথ্য: প্রচলিত কিংবদন্তিগুলি থেকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সূত্র পাওয়া যেতে পারে। যেমন -পূর্ববঙ্গের সীতারকোট, বেহুলার বাসরঘর, অরুণধাপ টিবি,টুঙ্গিরশহর টিবি প্রভৃতি স্থান সম্পর্কে প্রচলিত কিংবদন্তির সূত্র থেকে নানা ইতিহাস জানা যায়।
Leave a comment