সংজ্ঞা : নাটকের একটি ত্রুটি বোঝাতেই অতি নাটকীয়তা বা মেলোড্রামাটিক শব্দটি ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ উচ্চস্তরের কমেডি না হলে, মোটা দাগের হাসির নাটকে যেমন বলা হয় ফার্স, তেমনি উচ্চাঙ্গের ট্র্যাজেডি হয়ে না উঠলে সেই ব্যর্থতার জন্য নাটকটিকে সাধারণভাবে বলা হবে অতিনাটক বা মেলোড্রামা। গ্রিক ভাষায় ‘মেলা’ শব্দের অর্থ ‘গান’। ফলে সংগীত সমৃদ্ধ নাটককে বলা হত মেলোড্রামা। এখন সাধারণ ট্র্যাজেডি নাটকে যখন খুব চড়ামাত্রায় চরিত্র দেখা যায়– অর্থাৎ যে ভালো সে খুব ভালো, যে খারাপ সে খুব খারাপ, তাকে বলে মেলোড্রামা। যখন ঘটনা ঘটতে থাকে একের পর এক অনেকটা অবিশ্বাস্যভাবে, তাকেও মেলোড্রামা আখ্যা দিতে হয়। এছাড়া যখন সাধারণ বুদ্ধিতে ব্যাখ্যা চলে না এমন কোনো কাকতালীয় ঘটনা ঘটে—যেমন কোনো ঘটনা বা চরিত্রের আকস্মিক সাক্ষাৎকার, তখনও তাকে মেলোড্রামা রূপে আখ্যাত করা হয়।
দৃষ্টান্ত : বিজন ভট্টাচার্যের নবান্ন নাটকে নিরঞ্জন যে বিনোদিনীকে খুঁজে পাবে একথা পাঠক ভাবতে পারে না, অথচ তাদের সাক্ষাৎ ঘটে একেবারে অবিশ্বাস্য ও অযৌক্তিক উপায়ে । আবার ঋত্বিক ঘটকের অসাধারণ ছবি—’সুবর্ণরেখায়’ আছে—জীবনকে উপভোগ করার জন্য ভাই আসে গণিকা পল্লিতে রাতে ফুর্তি করতে। সে যে-কোনো মেয়ের কাছেই যেতে পারতো, কিন্তু তা সে যায় না, তাকে পাঠানো হয়, তার অত্যন্ত আদরের বোনের কাছে, যে পূর্বে হারিয়ে গিয়ে এখন হয়েছে এই গণিকা পল্লির অধিবাসিনী। এই জাতীয় অবিশ্বাস্য যোগাযোগকে নাটকের পরিভাষায় মেলোড্রামা রূপে আখ্যাত করা হয়।
Leave a comment