প্রশ্নঃ সংক্ষেপে স্ত্রীধন এবং বিধবার সম্পত্তির মধ্যে পার্থক্য কি?
স্ত্রীধন ও বিধবার সম্পত্তির মধ্যে পার্থক্যঃ স্ত্রীধন ও বিধবার সম্পত্তির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ
(১) যে সম্পত্তিতে একজন হিন্দু নারীর অধিকার অবাধ ও চূড়ান্ত তা হচ্ছে তার স্ত্রীধন। পক্ষান্তরে, স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রী যে সম্পত্তিতে সীমিত মালিকানা অর্থাৎ জীবন স্বত্ব অর্জন করে তাই হচ্ছে বিধবার সম্পত্তি।
(২) স্ত্রীধনের ক্ষেত্রে একজন মহিলা নিজ ইচ্ছামত ভোগ দখল হস্তান্তর বা দায়বদ্ধ করতে পারে। কিন্তু বিধবার সম্পত্তিতে কোন বিধবা কেবল বৈধ প্রতিনিধির ন্যায় ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। এ সম্পত্তি তার ভোগ করার অধিকার থাকলেও ধর্মীয় উদ্দেশ্য, আইনগত প্রয়োজন এবং সম্পত্তির মঙ্গলএই তিন উদ্দেশ্য ব্যতীত কোন কারণে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে না।
(৩) স্বামীর জীবদ্দশায় একজন স্ত্রী স্ত্রীধন অর্জন করতে পারে। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর তার ত্যক্ত সম্পত্তিতে বিধবার সীমিত স্বত্ব অর্জিত হয়।
(৪) স্ত্রীধন হতে কোন নারীকে তার স্বামীর কোন ঋণ পরিশোধ করতে হয় না৷ কিন্তু বিধবাকে তার বিধবার সম্পত্তি থেকে মৃত স্বামীর ঋণ পরিশোধ করতে হয়।
(৫) স্ত্রীধনের ক্ষেত্রে মালিকের মৃত্যুর পর তার নিজস্ব ওয়ারিশদের নিকট ঐ সম্পত্তি বর্তাবে।পক্ষান্তরে, বিধবার মৃত্যুর পর বিধবার সম্পত্তি তার নিজস্ব ওয়ারিশদের নিকট যাবে না, স্বামীর ভাবী উত্তরাধিকারীদের (রণশব্রধমভণর) নিকট ফেরত যাবে।
(৬) স্ত্রীধন বিভিন্নভাবে অর্জিত হতে পারে। যেমন দানমূলে, উত্তরাধিকার সূত্রে, স্বীয় পরিশ্রমে বা জবর দখলের মাধ্যমে। এছাড়া স্ত্রীধন দ্বারা অর্জিত সম্পত্তিও স্ত্রীধন হিসেবে গণ্য হয়।পক্ষান্তরে, স্বামীর মৃত্যুর পর তার সম্পত্তিতে বিধবার যে সীমিত স্বত্ব অর্জিত হয় তাই হচ্ছে বিধবার সম্পত্তি। স্বামীর জীবদ্দশায় বিধবা নিজ পরিশ্রম দ্বারা যা অর্জিত করেছে তাও বিধবার সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়া বিধবার সম্পত্তি হতে অর্জিত সম্পত্তিও বিধবার সম্পত্তি।
এভাবে স্ত্রীধন ও বিধবার সম্পত্তির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা হয়।
Leave a comment