শিক্ষার লক্ষ্য ও স্বরূপ সম্পর্কে UNESCO নানা ধরনের শিক্ষা পরিকল্পনার সুপারিশ করেছে, শিক্ষার দ্বারা গণতান্ত্রিক সমাজের উপযােগী নাগরিক গড়ে উঠবে। এই নাগরিকগণ সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন প্রতিবেশীর সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে বিশ্বের আদর্শ নাগরিক হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করবে। বিশ্বায়নের ফলে শিক্ষাব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক যােগাযােগ বিভাগ চালু করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গিতে জীবনব্যাপী শিক্ষার লক্ষ্য গুলি সম্পর্কে ইউনেস্কোর সুপারিশগুলি হল নিম্নরূপ―

(১) প্রযুক্তির সুব্যবহার: অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তোলা, শিক্ষার সবকটি স্তরে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ধারণাশক্তি গড়ে তােলা।

(২) ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা : ইংরেজি আমাদের আন্তর্জাতিক ভাষা তাই শিক্ষার সমস্ত স্তরে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার উপর জোর দেওয়া উচিত, শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তােলা উচিত।

(৩) ব্যক্তি ও সমাজের উন্নতিসাধন : গণতান্ত্রিক সমাজের উন্নতিসাধনে ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশসাধনের জন্য শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।

(৪) বয়স্ক শিক্ষার প্রসার : বয়স্ক ব্যক্তিরা যারা চাকুরিজীবী, ড্রপ আউট সকলের জন্য ওয়েব ক্যামেরা ইত্যাদি বৈদ্যুতিক মাধ্যমে শিক্ষা বা E-Learning-এর ব্যবস্থা করতে হবে।

(৫) কর্মক্ষেত্রের সুযােগ সৃষ্টি : শিক্ষা যদি বৃত্তিমূলক হয় তাহলে তা স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে। এই কারণে শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হল শিক্ষার দ্বারা পেশাগত সুযােগ বৃদ্ধি করা।

(৬) সুনাগরিক তৈরি : ব্যক্তিকে সুনাগরিক করে তােলা, ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন, যার ফলে ব্যক্তির মধ্যে সহযােগিতা, শৃঙ্খলা, সৃজনশীলতা গড়ে উঠবে।

(৭) উচ্চ গবেষণা কাজে পছন্দমতাে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযােগ : উচ্চ গবেষণা ও বিদ্যা অর্জনের কাজে আজ বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দেশে সবচেয়ে ভালাে কলেজগুলিতে পড়ার সুযােগ পায়, যা বিশ্বব্যাপী শিক্ষার একটি লক্ষ্য।

(৮) দূরশিক্ষার প্রসার : শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে সকল স্তরের মানুষের মধ্যে শিক্ষার সুবিধা করে দেওয়ার লক্ষ্যে দূরশিক্ষার প্রসার ঘটেছে। এর ফলে দূরত্ব কোনাে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না।