প্রশ্নঃ শাস্তি কি নৈতিক দিক দিয়ে সমর্থনযোগ্য?
অথবা, শাস্তির কোনো নৈতিক ভিত্তি আছে কি?
অথবা, শাস্তির নৈতিক ভিত্তি কি?
অথবা, কোন বিষয়টি শাস্তির নৈতিক ভিত্তি হিসাবে কাজ করে?
ভূমিকাঃ সুষ্ঠভাবে জীবন যাপনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পূর্বশর্ত হলো শৃঙ্খলা। এ শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র ও সমাজ কর্তৃক কতগুলো বিধি বিধানের সৃষ্টি করা হয়েছে, যা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য অবশ্য পালনীয়। যখন কোনো ব্যক্তি এই বিধি ভঙ্গ করে তখন তাকে শাস্তি পেতে হয়।
শাস্তি নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য কি-না/ শাস্তির নৈতিক ভিত্তিঃ সামাজিক জীব হিসাবে মানুষের জীবনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত একটি বিষয় হলো সামাজিক নৈতিকতা। এই সামাজিক নৈতিকতা পালনের ক্ষেত্রে প্রশংসা ও নিন্দা অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। দায়িত্ববান ব্যক্তি তার কাজের জন্য সমাজ থেকে প্রশংসা পায় আর দায়িত্বহীন ব্যক্তি পায় নিন্দা। এবং এর জন্য তাকে শাস্তি প্রদান করা হয়। যদিও শাস্তি প্রদান নৈতিকতা বিরোধী কাজ তবুও সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা হয়। অনেক নীতিবিদ আছেন যারা শাস্তিকে নৈতিকভাবে সমর্থন করেছেন। তাদের সেই যুক্তিসমূহ নিচে তুলে ধরা হলো-
প্রথমতঃ একজন অপরাধী যখন অপরাধ করে তখন সে শুধু অপরের ক্ষতিই করে না বরং সমাজের শান্তি শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করে । তাই অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া অযৌক্তিক হতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ অপরাধীকে শাস্তি না দিলে সমাজে অপরাধ প্রবতা বেড়ে যাবে। তাই সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনার জন্য অপরাধীকে শাস্তি দেয়া প্রয়োজন।
তৃতীয়তঃ স্বাধীনভাবে বাঁচা মানুষের অন্যতম অধিকার। একজন অপরাধী মানুষের এ অধিকার হরণ করে। তাই মানুষের এ অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্য হলেও অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া আবশ্যক।
চতুর্থতঃ প্রত্যেক সমাজেই কতগুলো নৈতিক আদর্শ থাকে। যা ভঙ্গ করলে সমাজে শৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই রাষ্ট্র ও সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যই অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা উচিত। এই সামাজিক আদর্শের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্যই অপরাধীকে সামাজিক বিধি বিধান পালন করতে বাধ্য করে। তাই মানুষের অপরাধ প্রবণতা হ্রাসের জন্য অপরাধীর শাস্তির ব্যবস্থার নৈতিক দিক থেকে সঠিক এবং যুক্তিযুক্ত।
Leave a comment