কে সর্বপ্রথম ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উল্লেখ করেন ?
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল সর্বপ্রথম ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উল্লেখ করেন।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূল প্রবক্তা কে?
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূল প্রবক্তা হলেন মন্তেস্কু।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অর্থ বা শর্ত কী ?
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির তিন প্রকার অর্থ করা যায়, যথা – (১) সরকারের এক বিভাগ অন্য বিভাগের কাজ করবে না, (২) এক বিভাগ অন্য বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করবে না, (৩) একই ব্যক্তি একাধিক বিভাগের সঙ্গে কোনােভাবেই যুক্ত থাকবে না।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূল কথা কী ?
রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি বিভাগ অর্থাৎ আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতার সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রতা অর্থাৎ তিনটি বিভাগ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে কাজ করবে, এটাই ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূল কথা।
‘The Spirit of Laws’ গ্রন্থটি কার লেখা?
‘The Spirit of Laws’ গ্রন্থটির লেখক হলেন মন্টেস্কু।
বর্তমানে কোন্ কোন্ রাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়ােগ দেখা যায়?
বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মেক্সিকো প্রভৃতি রাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়ােগ দেখা যায়।
ব্ল্যাকস্টোন কেন ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের কথা বলেন ?
ব্ল্যাকস্টোন জীবন, সম্পত্তি ও স্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের কথা বলেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান Class-12 (স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা Short Question)
রাষ্ট্রবিজ্ঞান Class-12 (ভারতের শাসন বিভাগ Short Question)
রাষ্ট্রবিজ্ঞান Class-12 (সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ Short Question)
রাষ্ট্রবিজ্ঞান Class-12 (পররাষ্ট্রনীতি Short Question)
রাষ্ট্র বিজ্ঞান Class-12 (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক – Short Question)
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি কে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলে স্বীকার করে নিতে সম্মত নন কারা?
স্যাবাইন, গিলক্রিস্ট প্রমুখ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটিকে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলে স্বীকার করে নিতে সম্মত নন।
ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতির কয়েকজন সমর্থকের নাম লেখাে।
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল, রােমান দার্শনিক পলিবিয়াস ও সিসেরো, ফরাসি দার্শনিক বোদা, ইংরেজ দার্শনিক জন লক, হ্যারিংটন প্রমুখ প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটিকে সমর্থন করেছেন।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির পক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির পক্ষে দুটি যুক্তি হল – (১) সরকারের স্বৈরাচারী প্রবণতা রােধ করা সম্ভব হয় এবং (২) আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের কর্মকুশলতা বৃদ্ধি পায়।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি এর বাস্তব প্রয়ােগ যে অসম্ভব তার একটি উদাহরণ দাও।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি এর বাস্তব প্রয়োগ যে অসম্ভব তার একটি উদাহরণ হল যদি এই নীতিটি কার্যকর হয় তাহলে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সহযােগিতার পরিবর্তে সংঘর্ষ দেখা দেবে। ফলে শাসনকার্যে দক্ষতার বিশেষ অভাব পরিলক্ষিত হবে, তেমনি জনস্বার্থও উপেক্ষিত হবে।
গণতান্ত্রিক সরকারের ক-টি বিভাগ ও কী কী ?
গণতান্ত্রিক সরকারের তিনটি বিভাগ, যথা (১) শাসন বিভাগ, (২) আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ।
সরকারের দুটি বিভাগের কথা বলেছেন এমন দুজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর নাম লেখাে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গুডনাউ এবং জেঙ্কস সরকারের দুটি বিভাগের কথা বলেছেন।
ব্যাপক অর্থে শাসন বিভাগ বলতে কী বােঝায়?
ব্যাপক অর্থে শাসন বিভাগ বলতে রাষ্ট্রের প্রধান পরিচালক ও মন্ত্রীগণ থেকে শুরু করে প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত সকল উচ্চপদস্থ ও নিম্ন পদস্থ কর্মচারী কে বােঝায়।
সংকীর্ণ অর্থে শাসন বিভাগ বলতে কী বােঝায়?
সংকীর্ণ অর্থে শাসন বিভাগ বলতে রাষ্ট্রের প্রধান শাসক-সহ মন্ত্রীগণ এবং সরকারি নীতি নির্ধারণের সঙ্গে যুক্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারী বা আমলাদের বােঝায়।
গঠন ও কার্যাবলির ভিত্তিতে শাসন বিভাগকে ক-টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
গঠন ও কার্যাবলির ভিত্তিতে শাসন বিভাগকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা (১)শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ এবং (২) শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ।
শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ বলতে কী বােঝাে?
শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হয় এবং সম্পাদিত কার্যাবলির জন্য জনগণের নিকট প্রত্যক্ষভাবে অথবা পরােক্ষভাবে দায়িত্বশীল থাকে।
শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ কাদের বলা হয় ?
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী প্রমুখ হলেন শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ।
শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ বলতে কী বােঝাে?
প্রশাসনের কার্যে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত কর্মচারীদের শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ বলা হয়। এরা রাষ্ট্রকৃত্যক বা আমলা নামে পরিচিত।
শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ কাদের বলা হয় ?
প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত আমলা বা কর্মচারীবৃন্দ প্রমুখ হলেন শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ।
একক পরিচালকবিশিষ্ট শাসন বিভাগ বলতে কী বােঝাে?
দেশের শাসনবিভাগীয় যাবতীয় ক্ষমতা একজন পরিচালকের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং তাঁর নির্দেশে ও নেতৃত্বেই শাসনকার্য পরিচালিত হয়, তখন তাকে একক পরিচালকবিশিষ্ট শাসন বিভাগ বলে।
একক পরিচালক শাসনব্যবস্থার একটি দৃষ্টান্ত দাও।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হলেন একক পরিচালক শাসন ব্যবস্থার একটি দৃষ্টান্ত।
বহুপরিচালক বা যৌথ শাসক বলতে কী বােঝাে?
কোনাে দেশের শাসন বিভাগের যাবতীয় কার্য একজন ব্যক্তির পরিবর্তে সমক্ষমতাসম্পন্ন বহুজন ব্যক্তিকে নিয়ে গঠিত কোনাে সংস্থার উপর ন্যস্ত থাকলে, তাকে বহু পরিচালকবিশিষ্ট বা যৌথ শাসক বলে।
বহু পরিচালক বিশিষ্ট শাসন বিভাগের একটি উদাহরণ দাও।
বহুপরিচালকবিশিষ্ট শাসন বিভাগ বর্তমানে সুইজারল্যান্ডে দেখা যায়।
একক পরিচালকও বহুপরিচালকবিশিষ্টশাসকের মধ্যে একটি পার্থক্য লেখাে।
একক পরিচালক ও বহুপরিচালকবিশিষ্ট শাসকের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল একক পরিচালক শাসন ব্যবস্থায় কোনাে মতপার্থক্য থাকে না। তাই সরকার দৃঢ় ও শক্তিশালী হয়। কিন্তু বহুপরিচালক শাসনব্যবস্থায় সমক্ষমতাসম্পন্ন বহু ব্যক্তির হাতে শাসনক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। তাই প্রশাসনিক নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
একক পরিচালক ও বহু পরিচালক বিশিষ্ট শাসন ব্যবস্থার সংমিশ্রণ দেখা যায় কোন রাষ্ট্রে?
ভারতে একক পরিচালক ও বহুপরিচালকবিশিষ্ট শাসন ব্যবস্থার সংমিশ্রণ দেখা যায়।
সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় কত ধরনের শাসক দেখা যায়?
সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় দুই ধরনের শাসক দেখা যায়। যথা (১) নামসর্বস্ব শাসক, (২) প্রকৃত শাসক।
নামসর্বস্ব শাসক বলতে কী বোঝো?
তত্ত্বগতভাবে যিনি শাসন বিভাগের প্রধান অথচ বাস্তবে তিনি শাসন পরিচালনা করেন না, তাকে নামসর্বস্ব শাসক বলা হয়।
নামসর্বস্ব শাসকের দুটি শ্রেষ্ঠ উদাহরণ দাও।
ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং ব্রিটেনের রাজা বা রানি নামসর্বস্ব শাসকের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
প্রকৃত শাসক বলতে কী বােঝাে?
যে শাসন ব্যবস্থায় শাসক আনুষ্ঠানিক বা সাংবিধানিক রাষ্ট্রপ্রধান না হয়েও প্রকৃতপক্ষে শাসনকার্য পরিচালনা করেন এবং বাস্তবে শাসনক্ষমতা ভােগ করেন, তাকে প্রকৃত শাসক বলে।
একজন প্রকৃত শাসকের উদাহরণ দাও।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন একজন প্রকৃত শাসক।
নামসর্বস্ব ও প্রকৃত রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করাে।
নামসর্বস্ব শাসক তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রের প্রধান হলেও তিনি শাসনবিভাগ পরিচালনা করেন না। কিন্তু প্রকৃত শাসক তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রের প্রধান না হলেও তার নির্দেশেই দেশের শাসন বিভাগ পরিচালিত হয়।
উত্তরাধিকার সূত্রে মনােনীত শাসক কাকে বলে?
নির্বাচনের পরিবর্তে যখন কোনাে শাসক উত্তরাধিকার সূত্রে মনােনীত হন, তখন তাকে উত্তরাধিকার সূত্রে মনােনীত শাসক বলা হয়।
উত্তরাধিকার সূত্রে মনােনীত একজন শাসকের উদাহরণ দাও।
ব্রিটেনের রাজা বা রানি হলেন একজন উত্তরাধিকার সূত্রে মনােনীত শাসক।
নির্বাচিত শাসক’ কাকে বলে?
সাধারণভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের সর্বোচ্চ শাসক-সহ শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশ প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসীন হন, তাকে বলা হয় নির্বাচিত শাসক।
একজন নির্বাচিত শাসকের উদাহরণ দাও।
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হলেন একজন নির্বাচিত শাসক।
বংশানুক্রমিক শাসক ও নির্বাচিত শাসকের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করাে।
বংশানুক্রমিক শাসক উত্তরাধিকার সূত্রে শাসক পদে মনােনীত হন, যেমন ব্রিটেনের রাজা বা রানি। অন্যদিকে নির্বাচিত শাসকগণ নির্বাচনের মাধ্যমে শাসকপদে নির্বাচিত হন। যেমন সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রীবর্গ।
শাসন বিভাগের কোন অংশ যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করে ?
শাসন বিভাগের পক্ষে প্রতিরক্ষা দপ্তর যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করে।
শাসন বিভাগের আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত কার্যাবলি কী ?
বর্তমানে শাসন বিভাগ কিছু আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা ভােগ করতে পারে। সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করে, অধিবেশন স্থগিত রাখতে পারে শাসন বিভাগ। শাসনবিভাগীয় প্রধানের সম্মতি ছাড়া আইন প্রণীত হয় না। অনেক সময় জরুরি অবস্থায় বা আইনসভার অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন সময়ে শাসন বিভাগ জরুরি আইন ও অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারে।
অর্পিত ক্ষমতাপ্রসূত আইন’-এর সংজ্ঞা দাও।
আইনসভার কার্যাবলি বিশেষভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আইনের পুঙ্খানুপুঙ্খ দায়িত্বগুলি নির্ধারণের ভার আইনসভা শাসন বিভাগের হাতে অর্পণ করে। শাসন বিভাগ প্রণীত এই ধরনের আইনের অর্পিত ক্ষমতাপ্রসূত আইন বলা হয়।
প্রশাসনিক ন্যায়বিচার কাকে বলে ?
শাসন বিভাগ শাসনবিভাগীয় কোনাে কর্মচারীর অন্যায় আচরণের বিচার, শাস্তিদানের দায়িত্ব পালন করে থাকে, একে প্রশাসনিক ন্যায়বিচার বলা হয়।
শাসন বিভাগের বিচার সংক্রান্ত কার্যাবলি কী?
শাসন বিভাগ কতকগুলি বিচার সংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করে থাকে, যেমন উচ্চবিচারালয়ের বিচারপতিদের নিয়ােগ, অপরাধীকে ক্ষমা প্রদর্শন করা অথবা দণ্ড হ্রাস করা প্রভৃতি। এ ছাড়াও করসংক্রান্ত বিরােধের বিচার ও শাসন বিভাগ করতে পারে।
শাসন বিভাগের অর্থ সংক্রান্ত কার্যাবলি বলতে কী বােঝাে?
সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় শাসন বিভাগ অর্থ দপ্তরের মাধ্যমে কর ধার্য, কর সংগ্রহ এবং অর্থব্যয়ের দায়িত্ব পালন করে থাকে। সরকারি ব্যয়ের হিসাবপরীক্ষা এবং সংরক্ষণের দায়িত্বও শাসন বিভাগের উপরই ন্যস্ত থাকে।
শাসন বিভাগ কী ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে?
আধুনিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ছাড়াও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাবসাবাণিজ্য, যােগাযােগ ব্যবস্থার পরিচালনা প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখে।
শাসন বিভাগের দুটি কার্য উল্লেখ করাে।
শাসন বিভাগের উল্লেখযােগ্য দুটি কাজ হল (১) নীতি নির্ধারণ ও রূপায়ণ করা, (২) দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
ভারতের রাষ্ট্রপতি কে কোন বিভাগ অপসারণ করে?
ভারতের রাষ্ট্রপতি কে শাসন বিভাগ ইমপিচমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে অপসারণ করে।
সরকারের কোন্ শাখা অর্ডিন্যান্স জারি করে?
সরকারের শাসন বিভাগ অর্ডিন্যান্স জারি করে।
শাসন বিভাগ কখন অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারে?
আইনসভার অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন শাসন বিভাগ অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারে।
রাজনৈতিক প্রশাসক বলতে কী বোঝো ?
শাসন বিভাগের যে-সমস্ত ব্যক্তি জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন, তাঁদের রাজনৈতিক প্রশাসক বলা হয়। যেমন— রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ সমস্ত রাজনৈতিক অংশ।
রাজনৈতিক প্রশাসক ও অরাজনৈতিক প্রশাসকের একটি পার্থক্য লেখাে।
রাজনৈতিক প্রশাসকগণ জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন এবং রাজনৈতিক প্রশাসকগণ প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হন।
স্থায়ী প্রশাসক বলতে কী বোঝো?
রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যে প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত অরাজনৈতিক কর্মচারীদের স্থায়ী প্রশাসক বলা হয়।
অস্থায়ী প্রশাসক বলতে কী বােঝাে?
অস্থায়ী প্রশাসক বলতে শাসন বিভাগের রাজনৈতিক অংশকে বােঝায়, যারা জনগণের ভোটের মাধ্যমে শাসনকার্যে অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত হন।
স্থায়ী প্রশাসক ও অস্থায়ী প্রশাসকের একটি পার্থক্য লেখাে।
স্থায়ী প্রশাসক হলেন শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ এবং অস্থায়ী প্রশাসক হলেন শাসনবিভাগের রাজনৈতিক অংশ।
রাষ্ট্রকৃত্যক বা আমলা কাদের বলা হয়?
প্রশাসনিক কার্যে নিযুক্ত স্থায়ী কর্মচারী, যারা যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্ত হন, তাঁদের রাষ্ট্রকৃত্যক বা আমলা বলা হয়।
লাল ফিতার বাঁধন কথাটি কাদের সঙ্গে যুক্ত?
লাল ফিতার বাঁধন কথাটি আমলাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত।
লাল ফিতার বাঁধন বলতে কী বােঝায়?
প্রশাসন তথা সরকারি কাজে দীর্ঘসূত্রিতাকে লাল ফিতার বাঁধন বলা হয়।
আমলাদের কী কী নামে অভিহিত করা হয় ?
রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যে নিযুক্ত আমলাদের রাষ্ট্রকৃত্যক, রাষ্ট্রকৃত্যক প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হয়।
আমলাতন্ত্র বলতে কী বােঝাে?
রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যে নিযুক্ত আমলাদের দ্বারা পরিচালিত প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র বলা হয়।
আমলাতন্ত্র’ শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে?
আমলাতন্ত্র বা ব্যুরােক্রেসি শব্দটি ফরাসি শব্দ ব্যুরাে এবং গ্রিক শব্দ ক্রেটিন থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
আমলাতন্ত্র-এর অর্থ কী?
আমলাতন্ত্র শব্দের শব্দগত অর্থ টেবিল-শাসন ব্যবস্থা।
আমলাতন্ত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ?
উদারনৈতিক গণতন্ত্রে আমলাতন্ত্রের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন— (১) প্রশাসনিক কার্যে নিরবচ্ছিন্নতা রক্ষা করা এবং (২) নিরপেক্ষভাবে প্রশাসনিক কার্যাদি সম্পাদন করা।
মার্লি ফেনসড আমলাতন্ত্রকে ক-টি ভাগে ভাগ করেছেন ?
মার্লি ফেনসড আমলাতন্ত্রকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করেছেন (১) প্রতিনিধিত্বমূলক আমলাতন্ত্র, (২) একদলীয় রাষ্ট্রের আমলাতন্ত্র, (৩) সামরিক-শাসিত আমলাতন্ত্র, (৪) শাসক শাসিত আমলাতন্ত্র, (৫) আমলা-শাসিত আমলাতন্ত্র।
আমলাদের দুটি কাজ লেখ।
আমলাদের গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ হল (১) দেশের শাসনব্যবস্থার মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা (২) সরকারি নীতি ও কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করা।
প্রশাসনিক দপ্তর-প্রণীত আইন কাকে বলে ?
আইনকে বাস্তবে রূপায়ণ করার সময় সরকারি প্রশাসন। বিভাগ আইনের নির্দেশ, আদেশ বা নিয়মকানুন তৈরি করে, তার ফাকগুলিকে পূরণ করে। এই সমস্ত আইন কি প্রশাসনিক দপ্তর প্রণীত আইন বলা হয়।
আমলাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় লেখাে।
আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় হল (১) জনস্বার্থবিরোধী কাজের জন্য আমলাদের শাস্তিদানের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং (২) কর্তব্যকর্মে অবহেলা, দুর্নীতি পরায়ন প্রভৃতি কাজের জন্য আমলাদের বিচার সাধারণ আইনের সাহায্যে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতে সম্পন্ন হলে অতি সহজেই আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
আমলাতন্ত্রের দুটি ত্রুটি লেখাে।
আমলাতন্ত্রের ত্রুটিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— (১) দীর্ঘসূত্রিতা, (২) জনস্বার্থ সম্পর্কে ঔদাসীন্য।
আইন বিভাগের গঠন কীরূপ?
আইনসভা এবং আইনসভার সদস্যদেরকে নিয়ে আইন বিভাগ গঠিত হয়।
গঠনগত দিক থেকে আইনসভাকে ক-টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী ?
গঠনগত দিক থেকে আইনসভাকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় (১) এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, (২) দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা।
বর্তমানে আইনের সর্বপ্রধান উৎস কী ?
বর্তমানে আইনসভা হল আইনের সর্বপ্রধান উৎস।
আইনসভা’ কথাটির উৎস কী?
ফরাসি শব্দ Parler’ বা পরামর্শ সভা কথা থেকে আইনসভা কথাটি এসেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভাকে কী বলা হয় ?
ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা সংসদ বলা হয়।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা কাকে বলে?
যেসব আইন সভায় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটিমাত্র কক্ষ থাকে, তাদের এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বলে।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা কাকে বলে?
যেসব আইনসভা দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত হয়, তাদের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বলা হয়।
ভারতীয় পার্লামেন্ট বা আইনসভার কটি কক্ষ ও কী কি?
ভারতীয় পার্লামেন্ট তথা আইনসভার দুটি কক্ষ, যথা (১) রাজ্যসভা এবং (২) লোকসভা।
ব্রিটেনের আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম কী ?
ব্রিটেনের আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম লর্ড সভা।
মার্কিন আইনসভার উচ্চকক্ষকে কী বলা হয় ?
মার্কিন আইনসভার উচ্চকক্ষকে সিনেট বলা হয়।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা রাখার পক্ষে দুটি প্রধান যুক্তি দাও।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে দুটি যুক্তি হল (১) ব্যয়বাহুল্য বা অপচয়ের আশঙ্কা থেকে মুক্ত, (২) দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে খুবই উপযােগী।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার দুটি সুবিধা লেখাে।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার দুটি সুবিধা হল (১) সরকারের ব্যয় অনেক কম হয়, (২) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষিত হয়।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিরােধী কয়েকজন রাষ্ট্র বিদের নাম লেখাে।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিরােধী রাষ্ট্র বিদদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলেন লর্ড ব্রাইস, জন স্টুয়ার্ট মিল, হেনরি মেইন, লর্ড অ্যাক্টন, লেকি প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিপক্ষে একটি যুক্তি দাও।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পক্ষে অনুকূল নয়, কারণ এই আইনসভায় স্বৈরাচারী আইন প্রণয়নের প্রবল সম্ভাবনা থাকে।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে এমন কয়েকটি রাষ্ট্রের নাম লেখাে।
এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে এমন কয়েকটি রাষ্ট্রের নাম হল- চিন, গ্রিস, বাংলাদেশ, তুরস্ক, বুলগেরিয়া প্রভৃতি।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার কয়েকজন সমর্থকের নাম লেখাে।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা কে সমর্থন করেন— লর্ড ব্রাইস, জন স্টুয়ার্ট মিল, লেকি, হেনরি মেইন, লর্ড অ্যাকটন, দুগা, গেটেল প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে দুটি যুক্তি হল এই আইনসভায় সুচিন্তিতভাবে আইন প্রণয়ন করা সম্ভব হয়। এই আইনসভার ফলে স্বৈরাচারী প্রবণতা রােধ করা সম্ভব হয় এবং উভয় কক্ষে আলাপ-আলােচনা এবং তর্ক বিতর্কের মাধ্যমে সুচিন্তিত ও জনকল্যাণকামী আইন প্রণীত হতে পারে।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিপক্ষে একটি যুক্তি দাও।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের মতাে একটি অপ্রয়ােজনীয় কক্ষের সদস্যদের বেতন, ভাতা ইত্যাদির পিছনে অযথা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়িত হয়।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার কয়েকজন বিরোধী রাষ্ট্রবিদের নাম লেখাে।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিরােধী রাষ্ট্রবিদদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলেন বেন্থাম, আবে সিয়ে, ল্যাস্কি, ফ্রাঙ্কলিন প্রমুখ।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার দ্বিতীয় কক্ষটির নাম কী ?
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার দ্বিতীয় কক্ষটির নাম বিধান পরিষদ।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম কী?
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম বিধানসভা।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার নিম্নকক্ষে কারা প্রতিনিধিত্ব করেন?
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার নিম্নকক্ষে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রতিনিধিত্ব করেন।
ভারতের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা যুক্ত যে-কোনাে দুটি রাজ্যের নাম লেখাে।
বর্তমানে ভারতের পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা রয়েছে। সেগুলি হল— উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং জম্মু ও কাশ্মীর।
আইনসভার দুটি কাজ লেখাে।
আইনসভার উল্লেখযােগ্য কাজ হল (১) আইন প্রণয়ন করা (২) বাজেট অনুমােদন করা।
আইনসভার আইন সংক্রান্ত কাজ কী ?
আইনসভা সংবিধান নির্দিষ্ট এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে প্রয়ােজনীয় আইন প্রণয়ন করে, অপ্রয়ােজনীয় আইন বাতিল করে দেয় এবং দেশের পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে নতুন আইন প্রণয়ন করে।
আইনসভার শাসন সংক্রান্ত কাজ কী ?
আইনসভা শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতা ভােগ করে না, এই সভা শুধুমাত্র শাসনবিভাগীয় দায়িত্ব পালন করে থাকে। অর্থাৎ বিভিন্ন দেশের শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে নিয়ােগ, সন্ধি-চুক্তি এবং যুদ্ধ ঘােষণা অনুমােদন প্রভৃতি দায়িত্ব আইনসভার উপর ন্যস্ত থাকে।
আইনসভার বিচার সংক্রান্ত কাজ কী ?
আইনসভা কর্তৃক নির্বাচিত উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযােগের বিচার, নিজ সদস্যদের আচার-আচরণের বিচার প্রভৃতি বিচারসংক্রান্ত কার্যাবলি আইনসভা পালন করে থাকে।
আইনসভার প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষমতা কী?
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারি অর্থের অপচয় রােধের জন্য আইনসভা বিগত বছরের সরকারি আয় ব্যয়ের আলােচনা, পরবর্তী বছরের জন্য ব্যয় বরাদ্দ প্রভৃতির মাধ্যমে যে গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করে, তাকে আইনসভার প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষমতা বলা হয়।
আইনসভার দুটি নির্বাচন সংক্রান্ত ক্ষমতার দৃষ্টান্ত দাও।
আইনসভা নির্বাচনমূলক কতকগুলি কাজ সম্পাদন করে থাকে। যেমন— ভারতের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আইনসভার সদস্যগণই অংশগ্রহণ করে থাকে। সুইজারল্যান্ডের আইনসভা শাসন বিভাগ অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিষদকে নির্বাচন করে প্রভৃতি।
সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় আইনসভার দ্বারা শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের একটি উপায় লেখাে।
সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী-সহ মন্ত্রী পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা তাদের কাজকর্মের জন্য আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ থাকেন। আইনসভার আস্থা হারালে সমগ্র মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ করতে হয়। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় এভাবে আইনসভার দ্বারা শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
আইনসভার সার্বভৌমত্ব কাকে বলে?
আইন প্রণয়ন, সংশােধন ও বাতিল করার ক্ষেত্রে আইনসভা যে অবাধ ক্ষমতা ভোগ করে, তাকে আইনসভার সার্বভৌমত্ব বলা হয়।
আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি বলতে কী বোঝো?
যথােপযুক্ত আইনসভা কর্তৃক বিধিসম্মতভাবে প্রণীত আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত পদ্ধতিকে ‘আইন-নির্দিষ্ট পদ্ধতি বলা হয়। সংসদ (পার্লামেন্ট) ও রাজ্য আইনসভা প্রণীত আইনের কথাই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনসভার ক্ষমতা হ্রাসের দুটি কারণ উল্লেখ করাে।
বর্তমানে আইনসভার ক্ষমতা হ্রাসের দুটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল – (১) আইনসভা কর্তৃক বেশ কিছু ক্ষেত্রে শাসন বিভাগকে আইন প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পণ এবং (২) দেশের জরুরি অবস্থায় শাসন বিভাগের জরুরি আইন বা অর্ডিন্যান্স জারির ক্ষমতা।
কোন্ দেশের আইন বিভাগকে যুক্তরাষ্ট্রীয় পার্লামেন্ট’ বলা হয় ?
সুইজারল্যান্ডের আইন বিভাগকে যুক্তরাষ্ট্রীয় পার্লামেন্ট’ বলা হয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার একটি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করাে।
গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রয়ােজন হয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার দুটি প্রধান শর্ত উল্লেখ করাে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য (১) বিচারপতিদের কার্যকালের স্থায়িত্ব একান্ত প্রয়ােজন এবং (২) বিচার বিভাগকে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখা প্রয়ােজন।
সরকারের কোন বিভাগকে আইনের ব্যাখ্যাকর্তা ও রক্ষাকর্তা বলা হয় ?
সরকারের বিচার বিভাগ আইনের ব্যাখ্যা কর্তা ও রক্ষাকর্তা বলা হয়।
সরকারের তৃতীয় অঙ্গ বলা হয় কাকে?
সরকারের তৃতীয় অঙ্গ বলা হয় বিচার বিভাগকে।
বিচারপতি নিয়ােগের ক-টি পদ্ধতি আছে ও কী কী ?
বিচারপতি নিয়ােগের তিনটি পদ্ধতি আছে। যথা (১) জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষ নির্বাচন, (২) আইনসভা কর্তৃক মনােনয়ন এবং (৩) শাসন বিভাগ কর্তৃক নিয়ােগ।
অ্যালান বল বিচার বিভাগের সাংবিধানিক কাজকে ক-টি ভাগে ভাগ করেছেন?
অ্যালান বল বিচার বিভাগের সাংবিধানিক কাজকে চার ভাগে ভাগ করেছেন।
বিচার বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ লেখাে।
বিচার বিভাগের দুটি উল্লেখযােগ্য কাজ হলো— (১) মৌলিক অধিকারসমূহকে রক্ষা করা এবং (২) সংবিধানের ব্যাখ্যা করা এবং রক্ষা করা।
বিচারক প্রণীত আইন’ কাকে বলে ?
বিচারকরা প্রচলিত আইনের ব্যাখ্যা প্রদানের সময় যে নতুন আইন সৃষ্টি করেন, তাকে বিচারক প্রণীত আইন বলা হয়।
সরকারের কোন্ বিভাগ ব্যক্তিস্বাধীনতার রক্ষক হিসেবে কাজ করে?
সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগ ব্যক্তি স্বাধীনতার রক্ষক হিসেবে কাজ করে।
বিচার বিভাগ কীভাবে মৌলিক অধিকারের রক্ষাকর্তা হিসেবে কাজ করে ?
শাসনতন্ত্রে লিপিবদ্ধ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সরকার হস্তক্ষেপ করলে বিচার বিভাগ অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করে মৌলিক অধিকার রক্ষা করে।
বিচার বিভাগের পরামর্শদান সংক্রান্ত বিষয়টি লেখাে।
কোনাে কোনাে বিষয়ে শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগ যদি চায় বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারে- ভারতের সুপ্রিমকোর্টের এই ক্ষমতা আছে।
একক বিচারব্যবস্থা কোথায় দেখা যায়?
একক বিচারব্যবস্থা দেখা যায় ব্রিটেনে।
দ্বৈত বিচারব্যবস্থা কোথায় দেখা যায়?
দ্বৈত বিচারব্যবস্থা দেখা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিচারবিভাগীয় স্বাতন্ত্র্য বলতে কী বোঝো?
বিচার বিভাগীয় স্বাতন্ত্র্য বলতে বােঝায়, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তার কার্যাবলি সম্পূর্ণ করে। অর্থাৎ আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণকেই বিচারবিভাগীয় স্বাতন্ত্র্য বা স্বাধীনতা বলা হয়।
বিচারবিভাগীয় সমীক্ষা কাকে বলে?
আইন বিভাগ প্রণীত কোনাে আইন বা শাসন বিভাগ প্রণীত কোনাে আদেশ যদি সংবিধান বিরোধী হয়, তাহলে সেই আইন। বা আদেশকে অবৈধ বলে বাতিল করে দেওয়ার যে ক্ষমতা বিচার বিভাগ ভােগ করে, তাকে বিচারবিভাগীয় সমীক্ষা বলা হয়।
বিচারবিভাগীয় অতিসক্রিয়তা বলতে কী বোঝো?
বিচার বিভাগীয় অতি সক্রিয়তা বলতে, বিচার বিভাগের বিশেষ ধরনের কার্যকলাপকে বােঝায়, যার দ্বারা বিচারপতিরা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের উপর নির্দেশ জারি করে।
কে বলেছেন, “আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে উভয় কক্ষই একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করে”?
রাষ্ট্রবিদ গেটেলের মতে, “আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে উভয় কক্ষই একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করে”।
আইনসভা হল মতামতের মহাসম্মেলন কে বলেছেন?
জন স্টুয়ার্ট মিলের মতে, আইনসভা হল মতামতের মহাসম্মেলন।
“আইনসভার উচ্চকক্ষ স্বৈরাচার প্রতিরােধ করে এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করে” এটি কার উক্তি?
অধ্যাপক গেটেলের মতে, আইনসভার উচ্চকক্ষ স্বৈরাচার প্রতিরােধ করে এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করে।
“আইন বিভাগ ছাড়া সরকারের কল্পনা করা সম্ভব হলেও বিচার বিভাগ ছাড়া সভ্য রাষ্ট্রের কল্পনা করা যায় না —উক্তিটি কার ?
অধ্যাপক গার্নারের মতে, “আইন বিভাগ ছাড়া সরকারের কল্পনা করা সম্ভব হলেও বিচার বিভাগ ছাড়া সভ্য রাষ্ট্রের কল্পনা করা যায় না।
কার মতে, “বিচার বিভাগ রাজনীতি নিরপেক্ষ হতে পারে না।
অ্যালান বলের মতে, “বিচার বিভাগ রাজনীতি নিরপেক্ষ হতে পারে না।
“সরকারের উৎকর্ষতা বিচার বিভাগের উৎকর্ষের উপর নির্ভর করে। -এ কথা কে বলেছেন?
লর্ড ব্রাইস-এর মতে, “সরকারের উৎকর্ষতা বিচার বিভাগের উৎকর্ষের উপর নির্ভর করে।
প্রজাতান্ত্রিক সরকার কাকে বলে?
যখন কোনাে রাষ্ট্রের প্রধান নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হন, তখন সেই সরকারকে বলা হয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার।
এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো? অথবা, এককেন্দ্রিক সরকার কাকে বলে ?
যখন কোনাে শাসন ব্যবস্থায় সরকারের যাবতীয় ক্ষমতা একটিমাত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে, তখন তাকে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা বা সরকার বলা হয়।
এককেন্দ্রিক সরকার দেখা যায় এমন কয়েকটি রাষ্ট্রের নাম লেখাে।
ব্রিটেন, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি রাষ্ট্রে এককেন্দ্রিক সরকার দেখা যায়।
যৌথ শাসন ব্যবস্থা কাকে বলে ?
দুই বা তার অধিক ব্যক্তির হাতে যখন শাসন পরিচালনার দায়িত্বভার ন্যস্ত থাকে, তখন সেই শাসনব্যবস্থাকে যৌথ শাসন ব্যবস্থা বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বা শাসনব্যবস্থা কাকে বলে?
যে শাসনব্যবস্থায় সংবিধান কর্তৃক বন্টিত ক্ষমতার মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়েই নিজ নিজ প্রশাসনিক এলাকায় স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম, তাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বা শাসন ব্যবস্থা বলে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দেখা যায়, এমন কয়েকটি রাষ্ট্রের নাম লেখাে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আইনসভার দ্বিতীয় কক্ষ গঠনের মূল নীতি কী হওয়া উচিত?
প্রত্যেক অঙ্গরাজ্য থেকে সমানসংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে দ্বিতীয় কক্ষ গঠনের মূল নীতি হওয়া উচিত।
রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকার বলতে কী বােঝাে?
রাষ্ট্রবিদ গার্নারকে অনুসরণ করে বলা যায়, রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকার হল এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে শাসন বিভাগ আইন বিভাগের প্রভাবমুক্ত হয়ে সংবিধান অনুসারে কার্য পরিচালনা করে।
সংসদীয় বা ক্যাবিনেট-শাসিত সরকার বা শাসনব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?
যে শাসনব্যবস্থায় আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং শাসন বিভাগের স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা আইন বিভাগের উপর নির্ভরশীল, তাকে সংসদীয় সরকার বা শাসন ব্যবস্থা বলা হয়।
Leave a comment