রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ গল্পে লেখক রেলগাড়িতে একটি লোকের সাথে পরিচিত হয়। লোকটি ছিল অসামান্য এবং পৃথিবীর প্রায় সকল বিষয়েই লোকটির অগাধ জ্ঞান আছে বলে লেখকের মনে হয়। লেখক জংশনে নেমে দ্বিতীয় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। গাড়ি আসতে দেরি হবে তাই সে টেবিলের উপর বিছানা পেতে ঘুমাবে বলে স্থির করে এবং লোকটির কাজ থেকে একটি গল্প শুনতে পায়। লোকটা বলে রাজ্যচালন সম্বন্ধে দুই একটা বিষয়ে মতান্তর হওয়াতে সে জুনাগড়ের চাকরি ছেড়ে দেয় এবং হায়দ্রাবাদের নিজাম সরকার তাকে বরীচের তুলার মাশুল আদায়ে নিযুক্ত করে দেয়। বরীগে পৌঁছে সে একটি আড়াইশত বছরের পূর্বের প্রাসাদে থাকার জায়গা করে নেয়। কিন্তু অফিসের কেরানি করিম খাঁ এ প্রাসাদে থাকতে কথককে বার বার নিষেধ করে গিয়েছিল। এও বলে দেয়। দিনের বেলা থাকলে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু রাতে থাকা যাবে না। গল্পকথক বরীচে প্রথম গিয়েছিল তাই প্রাসাদটি সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। অথচ কথকের অফিসের করিম খাঁ ও ভৃত্যগণ সকলেই জানে এ বাড়ির ভয়ংকর রূপের কথা। এ বাড়িতে রাত্রিযাপন করে অনেকে পাগল হয়ে গেছে- যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ পাগলা মেহের আলী। তাই দিনের বেলায় প্রাসাদে অনেকে কাজ করলেও রাতের বেলায় কেউ সেখানে থাকার সাহস দেখায় না। বাড়িটি এতই ভয়ংকর ছিল যে রাতে চোরও এ বাড়িতে প্রবেশ করতো না।