উত্তর: বাংলা ছোটোগল্পের সার্থকস্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সমাপ্তি’ গল্পটি এক অসাধারণ সৃষ্টি। এ গল্পের নায়িকা মৃন্ময়ী- তার পিতার নাম ঈশান মজুমদার।
ঈশান মজুমদার দূরের এক স্টিমার ঘাটে সামান্য বেতনে কেরানি হিসেবে চাকরি করে। সংসার তাঁর ঠিকমতো চলে না।। ঘাটের পাশে এক দোচালা ঘরে ভাড়া থাকে। সেখানে ঈশান মজুমদার কোনো রকমে ডাল ভাত খেয়ে সংসার চালায়। ঈশান মজুমদার ইচ্ছা সত্ত্বেও মৃন্ময়ীর বিয়েতে রাজি হয়নি। কারণ মৃনায়ী একটি দূরন্তমনা, চঞ্চল ও পাগল প্রকৃতির মেয়ে। তাই ঈশান মজুমদার পাগল মেয়ে বিয়ে দিতে প্রথমে অসম্মতি জানায়। মৃন্ময়ীর বাবা ঈশান মজুমদার গ্রামের উচ্চশিক্ষিত ছেলে শ্রী অপূর্ব কৃষ্ণের বিয়ের প্রস্তাবে এক কথায় রাজি হয়ে যায়। ঈশান মজুমদারের মতে অপূর্ব কলকাতায় গিয়ে বি এ পাস করেছে। এখন আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছে। তাই ঈশান মজুমদার অপূর্বের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়। পরে বিয়ের দিনক্ষণও ঠিক করে ফেলে। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মৃন্ময়ীর পিতা মৃন্ময়ীর বিয়েতে আসতে পারেনি। দূরন্ত চঞ্চলা, মৃন্ময়ী সারা পাড়া বাড়িতে টই টই করে ঘুরে বেড়াতো। বিয়ের পরে শাশুড়ির শাসনে মৃন্ময়ী রীতিমতো হাঁপিয়ে যায়। অপূর্ব কলকাতা থেকে বাড়ি গেলে মৃন্ময়ীর ইচ্ছামতো মৃন্ময়ীকে লুকিয়ে মৃন্ময়ীর বাবার কাছে নিয়ে যায়। মৃন্ময়ীর বাবা ঈশান মজুমদার অপূর্বকে দেখে তার মন আনন্দে ভরে যায়। ক্ষুদ্র ছিদ্রের মধ্য দিয়ে তীব্র বেগে যেমন ফোয়ারার পানি বের হয়, তেমনি ঈশান মজুমদারের অভাব অনটনের সংসারে অপূর্বকে পেয়ে সমস্ত অভাব অনটন ভুলে যায়। মৃন্ময়ীর বাবার মনের মধ্যে আনন্দের ফোয়ারা যেন ঝরনার মতো বইতে থাকে।
পরিশেষে বলা যায় যে, রবীন্দ্রনাথের ছোটোগল্পের চরিত্রগুলো একান্ত তাঁর নিজের সৃষ্টি। তাই চরিত্রগুলো অত্যন্ত জীবন্ত। তেমনি ঈশান মজুমদার ‘সমাপ্তি’ গল্পের সার্থক চরিত্র।
Leave a comment