প্রশ্নঃ মানবাধিকার বলতে কি বুঝ?
অথবা, মানবাধিকার কি?
ভূমিকাঃ নীতিবিদ্যার আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু হলো মানবাধিকার। বর্তমানে এ বিষয়টি সারা বিশ্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্যয় হিসাবে আলোচিত হচ্ছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক আইনেও মানুষের মানবিক অধিকার রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। তাই এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে জানা দরকার।
মানবাধিকারঃ মানবাধিকার বলতে মানুষের সেই সব অধিকারকে বোঝায় যা মানুষ হিসেবে সমাজে সম্মানের সাথে টিকে থাকার জন্য একান্ত আবশ্যক। এটি মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে বিশিষ্টতা দান করে এবং মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। মানবাধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন দার্শনিক এবং নীতিবিদ বিশেষভাবে মানবাধিকার সংজ্ঞা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সংজ্ঞা নিচে তুলে ধরা হলোঃ
মুহাম্মদ জামিরের মতে, সাধারণভাবে মানবাধিকারকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে সেই সব অধিকার হিসেবে যা প্রকৃতিগতভাবে আমাদের জন্মগত এবং যে গুলি ছাড়া আমরা মানুষ হিসেবে বাঁচতে পারি না।
দার্শনিক আর ভিনসেন্ট এর মতে, ‘মানবাধিকার হলো সেসব অধিকার, যেগুলো শুধু মানুষ হিসেবে প্রত্যেকের সমভাবে রয়েছে এবং মানবিক প্রকৃতির জন্য মানুষ এসব অধিকারের প্রত্যাশা করতে পারে।
গাজী শামছুর রহমানের মতে, ‘যেসব আইনগত অধিকারের মালিক মানুষ সেগুলোই মানবাধিকার। মানবাধিকার বলতে সে অধিকারকে বুঝায়, যা নিয়ে মানুষ জন্মায়, যা তাকে বিশিষ্টতা দেয় এবং যা হরণ করলে সে আর মানুষ থাকে না।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজে মানুষ হিসেবে যথাযথভাবে বাঁচতে হলে চলাফেরা, বাকস্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার প্রভৃতি মানবাধিকার ছাড়া সম্ভব নয়। এ অধিকার মানুষের প্রকৃতিগত এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত। এ. অধীকার রক্ষা না হলে সমাজে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই বর্তমানে মানবাধিকার রক্ষা সারাবিশ্বের চিন্তাবিদদের উদ্বেগের বিষয়।
Leave a comment