মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছােটোগল্পের বড়াে বাড়ি র দুই প্রজন্মের দুই কর্তাকেই যেহেতু লেখিকা ‘বুড়ােকর্তা’ বলে অভিহিত করেছেন, তাই বুড়ােকর্তার চরিত্র বলতে আমরা জ্যেষ্ঠ বুড়ােকর্তা এবং কনিষ্ঠ বুড়ােকর্তা- এই দুজনের চরিত্রই বুঝব।
জ্যেষ্ঠ বুড়ােকর্তার চরিত্র: প্রয়াত জ্যেষ্ঠ বুড়ােকর্তা ছিলেন বড়ােপিসিমার পিতা। বড়ােপিসিমা যখন বিয়ের উপযুক্ত হন, তখন তার মা অর্থাৎ জ্যেষ্ঠ বুড়ােকর্তার স্ত্রী মারা যান। স্ত্রীবিয়ােগের পর সংসার দেখার জন্যই তিনি তাঁর কন্যার বিয়ে দেননি। তবে, তিনি ‘দূরদর্শী লােক ছিলেন’, আর তার জন্যই বর্তমান প্রজন্ম কোনাে কাজ না করেও বহাল তবিয়তে খেয়ে-পরে ছিল। তাঁর বাড়ির রাস্তার সবগুলি বাড়িই তিনি শিব, মহেশ্বর, ত্রিলােচন, উমাপতি ইত্যাদি বহু নামে শিবঠাকুরকে দিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে, তাঁর দৌলতেই আঠারােটা। দেবত্র বাড়ি এবং বাদা অঞ্চলের বিস্তৃত, উর্বর জমি বড়াে বাড়ির অধিকারভুক্ত হয়। বড়াে বাড়ির বিশাল বসতবাড়িটা এবং বাড়ির শিব মন্দিরটাও সম্ভবত তিনিই তৈরি করিয়েছিলেন।
কনিষ্ঠ বুড়ােকর্তার চরিত্র : জ্যেষ্ঠ বুড়ােকর্তার পুত্র হলেন কনিষ্ঠ বুড়ােকর্তা, ‘ভাত’ ছােটোগল্পে যে বৃদ্ধের মৃত্যু দেখানাে হয়েছে, তিনি। চার পুত্র এবং বেশ কয়েকটি কন্যা সন্তানের পিতা ছিলেন এই মানুষটি। বড়ােবউমার সঙ্গে তাঁর অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। বিরাশি বছরে পৌঁছেও তিনি বেশ শক্তসমর্থ ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বিরাশি বছরে তাঁর মৃত্যু হয়, যদিও তার নাকি আটানব্বই বছর বেঁচে থাকার কথা ছিল। বেশ সমাদরের সঙ্গেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। গল্পটিতে তার চরিত্র সম্পর্কিত আর কোনাে তথ্য পাওয়া যায় না।
Leave a comment