ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণ পাঠের প্রয়ােজনীয়তা আলােচনা করাে।

ব্যাকরণ (বি+আ+কৃ+অন) শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলাে বিশেষভাবে বিশ্লেষণ।

যে শাস্ত্রে কোনাে ভাষার বিভিন্ন উপাদানের মৌল প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় ও তার প্রয়ােগবিধি বিশদভাবে আলােচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ব্যাকরণের সংজ্ঞার্থ দিয়েছেন এভাবে (১৮৯০-১৯৭৭), “যে বিদ্যার দ্বারা কোনাে ভাষাকে বিশ্লেষণ করিয়া তাহার স্বরূপটি আলােচিত হয় এবং সেই ভাষার পঠনে ও লিখনে এবং তাহাতে কথােপকথনে শুদ্ধরূপে তাহার প্রয়ােগ করা যায়, সেই বিদ্যাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ বলে।”

ব্যাকরণ পাঠের প্রয়ােজনীয়তা 

এ কথা অনস্বীকার্য যে, ভাষা সম্বন্ধে পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ করতে সেই ভাষার ব্যাকরণ পাঠের প্রয়ােজনীয়তা অপরিসীম।

(ক) ব্যাকরণকে বলা হয় ভাষার সংবিধান, সুতরাং ভাষার মৌলিক স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ে ব্যাকরণ পাঠ অত্যাবশ্যক।

(খ) একটি ভাষার সামগ্রিক সৌন্দর্য উপভােগের জন্য সেই ভাষার ব্যাকরণ পাঠ অপরিহার্য। 

(গ) ব্যাকরণ পাঠের মধ্য দিয়ে একটি ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা যায়। 
(ঘ) ব্যাকরণ সম্বন্ধে যথাযথ জ্ঞান না থাকলে ভাষা ব্যবহারে বিশুদ্ধতা রক্ষা করা অসম্ভব। 
(ঙ) একটি ভাষার উপযুক্ত প্রয়ােগবিধি কেবল সেই ভাষার ব্যাকরণ পাঠের মধ্য দিয়েই অর্জন করা যায়। 
(চ) সাহিত্যের সামগ্রিক রস আস্বাদনের জন্য ব্যাকরণ পাঠ অপরিহার্য। 
(ছ) ব্যাকরণ পাঠের মাধ্যমে ভাষার অভ্যন্তর শৃঙ্খলা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।