[1] উদ্ভবগত: ব্রাহ্মণ্যধর্মের অনাচারের প্রতিবাদে বৌদ্ধ ও জৈন—এই দুই ধর্মের উত্থান ঘটে। এ কারণেই এদের প্রতিবাদী ধর্ম হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই দুই ধর্মের উদ্ভব ঘটেছিল প্রায় একই সময়ে। উভয় ধর্মই বহুলাংশে হিন্দু দার্শনিক চিন্তা থেকে উদ্ভূত।
[2] প্রবর্তকদের মধ্যে সাদৃশ্য: উভয় ধর্মমতই পূর্ব ভারতে এবং প্রায় একই সময়ে উদ্ভূত হয়। উভয় ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ ও মহাবীর ছিলেন ক্ষত্রিয় বংশজাত।
[3] পৃষ্ঠপােষকতাগত: উভয় ধর্মেরই প্রধান পৃষ্ঠপােষক শ্রেণি ছিল ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যবর্ণভুক্ত শ্রেষ্ঠীরা।
[4] মতবাদগত: উভয় ধর্মই অহিংসার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এবং জাতিভেদ বা অস্পৃশ্যতাকে অস্বীকার করে মানুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। বৌদ্ধ ও জৈন উভয় ধর্মই জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী ছিল। যাগযজ্ঞ, পশুবলি ও বর্ণাশ্রম প্রথার বিরােধী ছিল উভয় ধর্মই।
[5] ভাষাগত: মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ উভয়েই ধর্মপ্রচারের জন্য উচ্চবর্ণের ভাষা সংস্কৃতের পরিবর্তে সর্বসাধারণের বােধগম্য প্রাকৃত ভাষা ব্যবহার করেন।
মােক্ষ বা নির্বাণ প্রসঙ্গে: বৌদ্ধধর্মে ভােগ ও ত্যাগের মধ্যবর্তী পথ (মঝঝিমপন্থা) অবলম্বনের কথাবলা হয়েছে। জৈনধর্মে কঠোর কৃষ্ছসাধন, ত্যাগ ও কঠোর তপশ্চ র্যার পাশাপাশি উপবাসের ওপরও গুরুত্ব আরােপ করা হয়েছে।
অহিংসা প্রসঙ্গে: গৌতম বুদ্ধ কেবলমাত্র জীব বা প্রাণী হত্যারই বিরােধী ছিলেন। জৈনধর্মে কঠোর অহিংসনীতির কথা বলা হয়েছে। জৈনরা জীবকুলের পাশাপাশি জড়বস্তুতেও প্রাণের অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিলেন।
Leave a comment