অথবা, মৃন্ময়ীর মানসিক পরিবর্তন কীভাবে ঘটে সংক্ষেপে লেখ

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সমাপ্তি’ গল্পে মৃন্ময়ী বিয়ের পরও সামান্য পরিবর্তন হয় না। সে আবার পূর্বের মতো লুকিয়ে রাখাল বালকদের সাথে খেলা করতে যায়। এ নিয়ে মৃন্ময়ীর শাশুড়ি তাকে তিরস্কার করে। সে তার বাবার কাছে যেতে চায়। একদিন বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে গিয়ে আবার ধরা পড়ে। এবার তার স্বামী অপূর্ব গোপনে মৃন্ময়ীকে তার বাবা ঈশান মজুমদারের কাছে কশীগঞ্জে নিয়ে যায়।। তারপর সেখানে তিনদিন থেকে তারা আবার সুগ্রামে ফিরে আসে। । অপূর্বর মা তাদের উপর রাগান্বিত হয় এবং এ সময় অপূর্বর কলেজ খোলার কারণে মৃন্ময়ীকে তার মায়ের কাছে রেখে কলকাতায় গমন করে।

কিন্তু এখান থেকেই মৃন্ময়ীর মানসিক পরিবর্তন আরম্ভ হয়। মাতৃগৃহে তার আর মন টেকে না সারাক্ষণ তার একটি স্মৃতি ভর করে থাকে এবং আর একটা শয্যার কাছে গুনগুন করে বেড়াতে থাকে। তারপর থেকে তাকে আর কেউ বাইরে দেখতে পায় না । হাস্যধ্বনিও শুনতে পায় না সে তার স্বামীকে প্রচণ্ড পরিমাণ মনে করে এবং আবার শ্বশুরালয়ে গমন করে। গল্পের ভাষায়:

“শাশুড়ি বধূর মুখের দিকে চাহিয়া আশ্চর্য হইয়া গেলেন। সে মৃন্ময়ী আর নাই। এমন পরিবর্তন সাধারণত সকলের সম্ভব নহে। বৃহৎ পরিবর্তনের জন্য বৃহৎ বলের আবশ্যক। । শাশুড়ি স্থির করিয়াছিলেন, মৃন্ময়ীর দোষগুলো একটি একটি করিয়া সংশোধন করিবেন, কিন্তু আর একজন অদৃশ্য সংশোধনকর্তা একটি অজ্ঞাত সংক্ষেপ উপায় অবলম্বন করিয়া মৃন্ময়ীকে যেন নতুন জন্ম পরিগ্রহ করাইয়া দিলেন।”

বিয়ের প্রথম দিকে মৃন্ময়ীর মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায় না। কিন্তু অপূর্ব তাকে রেখে কলকাতায় আইন পড়তে গেলে- সে অপূর্বকে খুব বেশি মনে করে। সে তার স্বামী অপূর্বকে বাড়িতে আসার জন্য পত্র লেখে। পরিশেষে মৃন্ময়ী শাশুড়ির সাথে কলকাতায় গেলে সেখানে অপূর্বর সাথে দেখা এবং তার অসমাপ্ত চুম্বনকে এখানে পরিপূর্ণ করে তোলে। এককথায় প্রথম দিককার কিশোর মৃন্ময়ী- গল্পের শেষে আদর্শ নারীর প্রতীক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে