উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পে বিধবা মায়ের মৃত্যুর পর খুড়তুতো ভাইদের দ্বারা বিতাড়িত হয়ে বিন্দু তার বড় বোনের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করল।

বিন্দুর বিধবা মা মারা গেলে সে তার বোনের সংসারে অর্থাৎ মৃণালের বড় জার কাছে আসে। তাতে কেউ সন্তুষ্ট নয়। এমনকি তার আপন বোনও তাকে সহ্য করতে পারে না- সংসারে একটি আপদ হিসেবে দেখে। বিন্দুকে তারা বাড়ির বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে দেয়। তার জন্য মোটা ভাত কাপড়ের ব্যবস্থা করা হয়। বিন্দুও বঞ্চিতদের ন্যায় ভয়ে ভয়ে থাকতে লাগল। সংসারে সে অপয়া। বাড়িতে কিছু হারিয়ে গেলে বিন্দুর দোষ হয়। আবার স্বদেশী হাঙ্গামায় বাড়ি বাড়ি পুলিশ তল্লাশি করলে তা নিয়েও বিন্দুকে সকলে সন্দেহ করে। বিন্দু নামের মেয়েটি মৃণালের শ্বশুরবাড়ির পরিবারে বাহ্যিকভাবে স্থান দিলেও হৃদয়গত দিক থেকে কেউ তাকে আশ্রয় দিতে পারেনি পরিবারের মধ্যে। মৃণালই পেরেছে বিন্দুকে হৃদয়ে স্থান দিতে। তারপরও মৃণাল বিন্দুকে যখন ছাড়ে না তখন পাগল স্বামীর সাথে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিন্দুর স্বামী পাগল তা হঠাৎ পাগল বলে মনে হয় না। বিয়ের রাতে সে ভালো থাকলেও পরের দিন থেকেই তার পাগলামি বাড়তে থাকে। তার শাশুড়িও পাগল। বিন্দুকে দেখলে তাদের পাগলামির মাত্রা বাড়তে থাকে। বিন্দু ভাত খেতে বসলে তার স্বামী তার ভাতের থালা কেড়ে নেয়- তার মনে হয় বিন্দু স্বয়ং রাসমণি। তাদেরকে দেখলেই বিন্দুর শরীর ভয়ে কাঠ হয়ে যায়- রাতে একঘরে সে আতঙ্কিত অবস্থায় রাত কাটায়। কোনো একরাতে তার স্বামী শাশুড়ি যখন ঘুমিয়ে পড়ে সে সময় সে কৌশলে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। মূলত অত্যাচার এবং আতঙ্কিত অবস্থা থেকে মুক্তি পেতেই সে পালিয়ে আসে।