অথবা, বাউলতত্ত্ব ও দর্শনের স্বরূপ বিশ্লেষণ কর

অথবা, তোমার পঠিত গানগুলো অবলম্বনে বাউলতত্ত্ব বিশ্লেষণ কর

উত্তর : ‘বাউল’ শব্দের উৎপত্তি সম্বন্ধে নানা মতভেদ আছে। কারো কারো মতে সংস্কৃত ‘বতুল’ শব্দ থেকে ‘বাউল’ শব্দের উৎপত্তি। দার্শনিক ড. ব্রজেন্দ্রনাথ শীল ‘বাউল’ শব্দটি ‘আউল’ শব্দজ বলে মনে করতেন। তাঁর মতে ‘আউল’ আরবি ‘আউলিয়া’ সম্ভূত। তবে ‘ব্যাকুল’ (ভাবোন্মত্ত) বা ‘বাতুল’ (অপদার্থ) থেকেই ‘বাউল’ শব্দের উৎপত্তি বলে অনুমান করা হয়। ব্যুৎপত্তিগত দিক থেকে মোটামুটি ‘বাউল’ শব্দের অর্থ দাঁড়ায় উন্মাদ, পাগল, বিশৃঙ্খল, আত্মসন্ধানী এবং শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী।

‘বাউল’ শব্দের ব্যবহার সুপ্রাচীন হলেও বাউল মতবাদ বা বাউলগানের উদ্ভব হয়েছে অনেক পরে। ড. আহমদ শরীফের ভাষায় মোটামুটি সতেরো শতকের দ্বিতীয় পাদ থেকেই বাউল মতের উন্মেষ। প্রায় সব পণ্ডিত-গবেষকই বাউল মতবাদের উপর হিন্দু, বৌদ্ধ এবং বিশেষকরে ইসলাম তথা সুফি মতবাদের প্রভাবের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। হিন্দু ও মুসলমান এই দুই বিপরীতমুখী ধর্ম ও সংস্কৃতির সংঘর্ষে এদেশে সমন্বয় প্রয়াসী সন্ত -ধর্ম, ভক্তি ধর্ম, শিখ ধর্ম, বৈষ্ণব ধর্ম ও শৈব ধর্মের উদ্ভব হয়েছিল। বাংলার বাউল মতবাদের বীজ নিহিত ছিল এসব ধর্মের মধ্যেই।

পণ্ডিত গবেষকদের মতামত থেকে বাউল মতবাদের উপর বিভিন্ন মতবাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব অনুধাবন করা যায়। সাংখ্য ও যোগ-ভারতের প্রাচীনতম লোকায়ত দুটি অনার্য দর্শন। পুরুষ (চৈতন্য স্বরূপ) ও প্রকৃতি (উপাদান) তত্ত্বই সাংখ্য দর্শনের ভিত্তি। আর দেহচর্যার দ্বারা অত্মোপলব্ধির পদ্ধতির নাম যোগ শাস্ত্র। সাংখ্য নিরীশ্বর আর যোগ ঈশ্বরবাদী। ব্রাহ্মণ্য সমাজে যোগ ও সাংখ্য দর্শন জটিল হয়ে ওঠে, পরবর্তীকালে বৌদ্ধ ও জৈনদের হাতে যোগ স্বতন্ত্রভাবে বিকাশ লাভ করে। ‘তন্ত্র’ নামের অপর একটি অনার্য শাস্ত্র ও যোগ এবং সাংখ্যতত্ত্বের সাথে মিশ্রিত হয়ে একটি জটিলতর মিশ্রতত্ত্বের উদ্ভব ঘটায়। ব্রাহ্মণ্য শৈবতন্ত্র ও বৌদ্ধতন্ত্রের সংমিশ্রণে সম্ভবত সাত শতকের দিকে এক যোগী তান্ত্রিক বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। এই তান্ত্রিক বৌদ্ধ সম্প্রদায় বজ্রযান, কালচক্রযান ও সহজযান নামে তিনটি শাখায় বিভক্ত ছিল। বজ্রযান ও কালচক্রযান ধরে পরবর্তীকালে হিন্দুতান্ত্রিক ধর্মের বিকাশ ঘটে আর সহজযান দুটি উপসর্গ ধরে পরিপুষ্ট হতে থাকে, এর একটি বামাচার বা কামাচারভিত্তিক (মিথুনাত্মক) যোগ সাধনা (সহজিয়া), অপরটি প্রকৃতি বর্জিত যোগচর্চা (নামপন্থা)।

প্রথমটি থেকে কালে বৈষ্ণব সহজিয়া মতের উদ্ভব হয়েছে আর দ্বিতীয়টি পরবর্তীকালে বৈরাগ্যবাদী শৈব ধর্মের ভিত্তি হয়েছে ৩০১ এবং উভয় মতের মিশ্রণেই সম্ভবত বাউল মতের উদ্ভব। (সূত্রঃ বাউল পদাবলী- ড. আহমদ শরীফ ও আব্দুল হাই সম্পাদিত- মধ্যযুগের বাঙলা গীতিকবিতা)

বাউলসাধনার প্রধান লক্ষ্য রূপক ও সংকেতের মাধ্যমে ঈশ্বরের সন্ধান লাভ। বাউলরা নির্বিচারে নানা রূপক ও প্রভাব গ্রহণ করেছিল। পণ্ডিতদের মতে, হিন্দু-মুসলমানের সমবায়ে বাউল মতের উদ্ভব হয়েছে। অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে মুসলমান মাধববিবি ও আউল চাঁদ এ মতের প্রবর্তক। আর মাধববিবির শিষ্য নিত্যানন্দের পুত্র বীরভদ্রের চেষ্টায় এ মতের বিস্তৃতি ঘটে। এটিরই লোক প্রচলিত নাম ‘বাউল’ সম্প্রদায়। যেসব বৌদ্ধ ইসলাম কবুল করেছিল আর যেসব প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ হিন্দুসমাজ ভুক্ত হয়ে নিজেদের পূর্বপুরুষের ধর্মাচরণে রত ছিল, তারাই কালে বাউল সম্প্রদায়ভুক্ত হয়েছে। বৌদ্ধ ঐতিহ্যের সাধারণ উত্তরাধিকারী ছিল বলেই হিন্দু মুসলমানের মিলনে বাউল মত গড়ে উঠতে পেরেছে।

হিন্দু প্রভাবে বাউলগানে রাধাকৃষ্ণ, শিব শিবানী, মায়া ব্রহ্ম, বিষ্ণু- লক্ষ্মী প্রভৃতি পুরুষ প্রকৃতির প্রতীকরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। আবার মুসলিম প্রভাবে মোকাম, মঞ্জিল, মতিফা, সিরাজুমমুনিরা, আল্লাহ, কাদের, গনি, রসূল, রুহ, আনল হক, আদম হাওয়া প্রভৃতি প্রতীকী রূপ গৃহীত হয়েছে। বৌদ্ধ নাম এবং নিরঞ্জনও পরিত্যক্ত হয়নি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে পৌরাণিক উপমা ও কুরআন-হাদিসের বাণীর নানা ইঙ্গিত।

বাউলরা বৈদিক বা ব্রাহ্মণ্য আচার বিরোধী এবং মৈথুনাত্মক পরকীয়া ও রাধানুরা সাধনার পক্ষপাতী। সুফিমতও নানা মৌখিক তত্ত্বের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বলে এ মতে অসঙ্গতিও কম নেই। তবে বাউল মতবাদের উপর বৈষ্ণব মতের এবং সুফি মতের প্রভাব অত্যধিক। ড. উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে, সতেরো শতকের মধ্যভাগ থেকে বাউল মতের উদ্ভব। এ মতে গুরু, মৈথুন ও যোগ তিনটি সমগুরুত্ব পেয়েছে। তাই গুরু, বিন্দুধারণ ও দম বা শ্বাসপ্রশ্বাসের কথা বাউলগানে অত্যধিক।

বাউলরা গুরুবাদী। গুরু বলতে সাধারণত শিক্ষক, পথপ্রদর্শক ও পরামর্শদাতা বুঝায়। বাউলদের গুরু কখনও এই শিক্ষক ও পথপ্রদর্শক, কখনো স্রষ্টা স্বয়ং গুরু। কখনো কখনো এই দুই গুরুকে অভেদ কল্পনা করা হয়েছে। সৎগুরুর কাছে দীক্ষা না নিলে সাধনায় সিদ্ধি লাভ করা অসম্ভব এবং বিন্দুধারণে সামর্থ্যই সিদ্ধির প্রকৃষ্ট নিদর্শন।

বাউলরা আবার দেহবাদীও। দেহতত্ত্ব বাউলগানের একটি প্রধান ভাব। মানবদেহকে বাউলরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাদের মতে, যা আছে ব্রহ্মাণ্ডে, তা আছে দেহ ভাণ্ডে। তাদের বিশ্বাস, পরমপুরুষ এই দেহাভ্যন্তরেই বাস করেন। দেহস্থিত আত্মাকে বাউলরা ‘মনের মানুষ’ বলে মনে করে এবং বিশ্বাস করে এ আত্মা পরমাত্মারই খণ্ডিত অংশ। আত্মাকে জানলে পরমাত্মাকে জানা হয়। এই দেহস্থিত আত্মাই মানুষ, মনের মানুষ, রসের মানুষ, ভাবের মানুষ, অলখ সাঁই, অচিন পাখি, আলেক সাঁই, মানুষ রতন ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে লালন শাহের একটি গানের উল্লেখ করা যায়- ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়।’ (পদ-১৩) পরমাত্মার সাথে আত্মার মিলন বাউলের আধ্যাত্মিক সাধনার চরম লক্ষ্য। বাউলগণ মনে করেন, দেহের মধ্যে আত্মা আছে, বিশ্বের মাঝে পরমাত্মা আছেন। দেহ খণ্ড, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড, ভাণ্ড-ব্রহ্মাণ্ড তত্ত্ব বাউল ধর্মমতের তত্ত্ব। বাউলগানগুলো এ তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। এক্ষেত্রে লালনের অভিব্যক্তি-

‘একবার আপনারে চিনলে পরে যায় অচেনারে চেনা।’ (পদ-১২)

নিজেকে জানতে পারলে পরমাত্মাকে জানা যায়। ‘আত্মানাং বিদ্ধি বেদের এই তত্ত্বের মাঝে এ উক্তির মিল আছে। বাউলের ‘রস স্বরূপ’ হচ্ছে সাকার দেহের মধ্যে নিরাকার আনন্দস্বরূপ আত্মাকে স্বরূপে উপলব্ধি করার প্রয়াস। এটিই হচ্ছে অটল মানুষ তথা আত্মতত্ত্ব। এ হচ্ছে অরূপের কামনায় রূপ সাগরে ডুব দেওয়া, স্বভাব থেকে ভাবে উত্তরণ। বাউলদের লক্ষ্য-রূপ থেকে স্বরূপে উত্তরণ। রূপ বলতে বাউলরা ‘নারী’ বা ‘প্রকৃতি’ এবং ‘স্বরূপ’ বলতে ‘পুরুষ’ বুঝিয়েছেন। এদের মতে, রূপের অবস্থান মূলাধারে এবং স্বরূপের অবস্থান সহস্রাবে এবং এদের উভয়ের মিলনেই মোক্ষলাভ। এদিক থেকে এদের সাধনা নারী-পুরুষের যৌথ সাধনা। বাউলদের সাধন সঙ্গিনী রাখার ধারণাটি এখান থেকেই এসেছে।

সাধনার দিক থেকে বাউলরা সম্পূর্ণভাবে দেহাত্মবাদী। তাঁদের মতে পরমাত্মাকে পেতে হলে দেহ সাধনার একটি সুনির্ধারিত তত্ত্ব ও প্রক্রিয়া আছে যা অনুসরণ আবশ্যক। বাউলসাধনার রীতিনীতি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। যোগ, হটযোগ, ষটচক্র, আপ্তনাশ, দশম দশন দেহভিত্তিক এরূপ সাধনা গুরুর নির্দেশেই সম্ভব। এছাড়া রূপক প্রতীক সংকেতের ভাষায় তারা দেহবাদী গুহ্যসাধনার নানা কথা গানে ব্যক্ত করেছে। বিভিন্ন ধর্মতত্ত্বের ও সাধন প্রণালির প্রভাব পড়েছে বলে বাউলসাধনায় কোন একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসৃত হয় না। এজন্য মুসলমান বাউলদের মধ্যে পরকীয়া ও মৈথুনাত্মক সাধনা দুর্লক্ষ্য; তারা যৌগিক প্রক্রিয়ায় শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণকেই প্রাধান্য দেয়। এবার বাউলগানের দর্শন সম্বন্ধে আলোচনা করা যাক। ‘দৃশ, ধাতুর সাথে ‘অন’ প্রত্যয় যোগ করে ‘দর্শন’ শব্দের উৎপত্তি। ‘দৃশ’ ধাতুর অর্থ দেখা; চর্মচক্ষু দ্বারা আমরা যা কিছু দেখি তা দর্শন, তবে শাস্ত্রীয় দর্শন নয়। দর্শনশাস্ত্রে দ্রষ্টার মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি, উপলব্ধির প্রতিফলন থাকতে হবে। বাউলগানে তেমনি পরমত সহিষ্ণুতা, অসাম্প্রদায়িকতা, গ্রহণশীলতা, বোধের বিচিত্রতা, মনের ব্যাপকতা ও উদার সদাশয়তার কথা গানে ও সুরে নিহিত আছে। বাউলরা মুক্ত মন ও স্বাধীন চিন্তার অধিকারী ছিলেন। এজন্য তাঁরা স্থান-কাল-পাত্রের ভেদাভেদ করেননি। তারা মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখেছেন, লালন শাহ তাই বলেছেন,

‘এই মানুষে আছে, রে মন,

যারে বলে মানুষ-রতন।’ (পদ ১০)

তাঁকে পেতে হলে মানুষকে ভালোবাসতে হবে। এজন্য লালন শাহ মানব জন্মকে অসীম গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন,

‘এমন মানব-জনম আর কি হবে।

মন যা করো ত্বরায় করো এই ভবে।। (পদ-১)

বাউলগণ এই দর্শন সামনে রেখে মনুষ্যত্বের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন। তারা নিজেকে মানবজাতির একজন বলে পরিচয় দিয়েছে, তাই বলেছে,

‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে।

লালন কয়, জেতের কি রূপ, দেখলাম না এই নজরে।। (পদ-২০)

এটাই লালনের তথা বাউলের বিশ্বমানবতাবাদের দর্শন।

মানবতাবাদের পাশাপাশি বৈরাগ্যবাদের কথাও বাউল মতবাদে আছে। বাউলের নৈরাশ্যবাদ ভগবৎ সত্তাকে না জানা ও না পাওয়ার জন্য। জাগতিক মোহ সকল দুঃখ ও সংকটের কারণ; অহম বা আমিত্বের মূলে আছে ইন্দ্রিয়শক্তি। জাগতিক মোহ ভগবৎ প্রেমের বাধাস্বরূপ। সংসার বন্ধন ছিন্ন করে, ভগবৎ সত্তাকে সর্বস্ব করে না পাওয়ার জন্য বাউলের কান্না-

“আমি কোথায় পাব তারে

আমার মনের মানুষ যেরে।

এই হতাশা ও নৈরাশ্য থেকে এরূপ ভাবাবেগের জন্ম হয়েছে যার জন্য বাউলরা সংসারাসক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে মানবাত্মাকে মুক্তির পথ দেখায়। জাগতিক মানুষের চোখে বাউলরা বিবাগী, কিন্তু বাউলরা নিজেদেরকে মুক্তি সন্ধানের পথিক মনে করে।

এভাবে মানবতাবাদ ও নৈরাশ্যবাদ- এই বৈপরীত্য নিয়ে বাউল দর্শনের প্রতিষ্ঠা। সমালোচক মুহম্মদ এনামূল হকের ভাষায়,

“বাউলরা অজ্ঞাত মর্মের অনুসন্ধান ও উপলব্ধি করিতে গিয়া, হৃদ বিহারী অচিন পাখিকে ধরিতে চেষ্টা করিয়া অন্তরতম মনের মানুষকে মর্ম দিয়ে বুঝিতে চেষ্টা করিয়া, দরদী সাঁই এর প্রেমময় পরশ লাভ করিতে ইচ্ছা করিয়া যে পথ অবলম্বন করিয়াছিল, তাহা বঙ্গীয় চিন্তা জগতের সম্পূর্ণ স্বাধীন পথ। ………………….. বাস্তবিকই বঙ্গের ভাব জগতে বাউলেরা চির স্বাধীনতা প্রিয় উদাস প্রকৃতির ‘বেদুইন’ সন্তান। তাহারাই বাঙলার ভাব জগৎকে চিন্তার দাসত্ব হইতে সম্পূর্ণ মুক্ত ও স্বাধীন করিয়া তুলিয়াছিল।” (বঙ্গে সুফি প্রভাব: সূত্র- লালনগীতি সমগ্র : ওয়াকিল আহমদ)

পরিশেষে বলা যায় যে, বলা চলে বাউলগানে তাত্ত্বিক রচনা তত্ত্ব সাহিত্য। এটি ‘বাঙলার ধর্ম, বাঙালির ধর্ম, একান্তভাবেই বাঙালির মানস ফসল। দেশি ভাবে ও বিদেশি প্রভাবে এর উদ্ভব। এই মতবাদ বিশ্বের মানুষের কাছে উদার মানবিকতার এক দর্শন তুলে ধরেছে। সংক্ষেপে এটাই বাউল তত্ত্ব ও বাউল দর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।