মূল নগরের চারপাশে ছােটো ছােটো পৌর এলাকা থাকে। এই মূল নগরটি আয়তনে দ্রুত বিস্তৃত হতে হতে যখন পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সাথে একত্রীভবন ঘটে তখন সেই সমগ্র এলাকাটিকে বলা হয় পৌরপিণ্ড বা Urban Agglomeration.

যেমন—কলকাতা এবং তার চার পাশের ছােটো ছােটো পৌর বসতিগুলিকে একত্রে বৃহত্তর কলকতা বা Kolkata Urban Agglomeration বলা হয়।

1953 খ্রিস্টাব্দে লুসটন ইউরােপীয় শহরগুলির কায়িক গঠন বিশ্লেষণ করে পৌর বসতি বা নগরবসতির ধারাবাহিক পরিবর্তনকে তিনটি ক্রমিক পর্যায়ে ভাগ করেন। নগর বসতির বিবর্তন পর্ব বা পর্যায়গুলি হল一

[1] ভূণ পর্ব বআ পর্যায় : এক অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশে শহরের গােড়াপত্তন হয়। ইউরােপের প্রায় প্রতিটি শহরের পুরােনাে অংশই হল এরূপ ভূণ অংশ। শহরের মাঝখানে চারদিক দেওয়ালে ঘেরা অংশেই এই ভ্রুণ অংশের অবস্থান। নানা কারণে এই ভূণ অংশই ক্রমশ বাড়তে বাড়তে শহরের বর্তমান রূপ ধারণ করে।

[2] গঠন পর্ব বা পর্যায় : উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে শিল্পবিপ্লবের ফলে পরিবহণ ব্যবস্থা ও শিল্পে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটে। উন্নত পরিবহণ ও যােগাযােগ ব্যবস্থার আনুকূল্যে শহরের ভ্রুণ এলাকার বাইরে পরিবহণ রেখা বরাবর জনবসতির বিন্যাস ঘটে। ফলে শহরের কলেবর বৃদ্ধি পায়। শহর বা নগর গঠনের এই পর্যায়কে গঠন পর্ব বা পর্যায় বলে।

[3] আধুনিক পর্ব বা পর্যায় : এই পর্যায়ে নগর বসতিগুলি চরম পর্যায়ে পৌঁছােয়। আধুনিক পরিবহণ ব্যবস্থার কল্যাণে শহরের কেন্দ্র থেকে বহুদূর পর্যন্ত বসতি স্থাপনের পরিকাঠামাে গড়ে ওঠে। এই পর্যায়ে অর্থনৈতিক কাজকর্মের জটিলতা বাড়ে, কাজের বিশেষায়ণ ও কারখানা শিল্পের প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলি এই পর্যায়ে বিকশিত হওয়ার সুযােগ পায়।