উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ গল্পে পাগলা একটি সংক্ষিপ্ত চরিত্র কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ। তুলার মাশুল আদায়কারী রাজপ্রাসাদ সম্পর্কে অফিসের কর্মচারীর নিকট থেকে অনেক কল্পকাহিনি শুনতে পায়। তুলার মাশুল আদায়কারী নির্জন প্রাসাদবাসী যে ভদ্রলোক গল্পের নায়ক- সূর্যাস্তের পরক্ষণে সে আর নিজের মধ্যে থাকে না। সেই রহস্যময় প্রাসাদটি তার চারিপাশে একটি ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করে প্রাসাদের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য তাকে আহ্বান করে। তুলার মাশুল আদায়কারীর কাছে এর একটি রাত এক একটি স্বপ্ন জগতের মতো অতিবাহিত হয় । করিম খাঁর সতর্কতা সত্ত্বেও প্রতি রাতে গল্পকথক নির্জন প্রাসাদটিতে গমন করতো অন্য এক অলৌকিক শক্তির প্রভাবে। এ গল্পে অতিপ্রাকৃত পরিবেশ একান্তভাবে চিত্তবিকারজনিত নয় । পুরাতন প্রাসাদের অন্তঃপুরে বাসনাজালে আবদ্ধ দেহহীন লালসাময় রূপসীদের অদৃশ্য অবোধ প্রভাবের বলে যে সেখানে একাধিক রাত যাপন করেছে তার শরীর মন অল্পে অল্পে সেই প্রাসাদের মোহগ্রাসে জীর্ণ হতে হতে অবশেষে জীবন বা বুদ্ধি তিরোহিত হয়ে মৃত্যু অথবা পাগলে রূপান্তরিত হয়েছে। যার জলজ্যান্ত উদাহরণ পাগলা মেহের আলী। পাগলা মেহের আলী আজও প্রতি প্রভাতে জনশূন্য পথে ‘তফাৎ যাও, তফাৎ যাও। সব ঝুট হ্যায়।’ বলে চিৎকার করে। মূলত পাগলা মেহের আলী রাজপ্রাসাদের রহস্যময় পুরীর শিকার হওয়া একজন মানুষ।
Leave a comment