স্থূল অর্থে পরিণমন হল ‘বেড়ে ওঠা’ বা বৃদ্ধি পাওয়া। শিশু জন্মের পর যখন ক্রমশ বড়াে হতে থাকে তখন তার মধ্যে নানান পরিবর্তন দেখা যায়। এই পরিবর্তন পরিণমনেরই ফল। মনােবিদদের মতে, পরিণমন হল বৃদ্ধি এবং বিকাশের এমন একটি প্রক্রিয়া যা কোনাে প্রকার প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলন ছাড়াই ব্যক্তির মধ্যে সংঘটিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি শিখন-নিরপেক্ষ এটি ব্যক্তির জীবনে স্বাভাবিকভাবে ঘটে থাকে। শিখনে পরিপমন উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করে। নির্দিষ্ট পরিমাণে পরিণমন না ঘটলে শিখন সম্ভব নয়। এই অর্থে পরিমনকে শিখনের প্রস্তুতিও বলা যায়। পরিপমনের অভাব ঘটলে শিক্ষার্থীদের শিখনক্রিয়া ব্যাহত হয়।
মনােবিদরা পরিণমনের একাধিক সংজ্ঞা দিয়েছেন। এখানে তিনটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হল—
-
মনােবিদ গেসেল-এর মতে—স্বকীয় এবং অন্তর্জাত বৃদ্ধি হল পরিণমন।
-
মনােবিদ কোলেসনিক-এর মতে—জন্মগত সম্ভাবনাগুলি স্বাভাবিকভাবে প্রস্ফুটিত হওয়ার ফলে শিশুর আচরণের গুণগত এবং পরিমাণগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়াই হল পরিমন।
-
স্কিনার-এর মতে—পরিণমন হল এক বিশেষ প্রকার বিকাশ যা পরিবেশগত অবস্থার পার্থক্য সত্ত্বেও মােটামুটিভাবে সংঘটিত হয়।
সুতরাং, শিখন ও অনুশীলন-নিরপেক্ষ যে জৈবিক প্রক্রিয়া প্রাণীর মধ্যে সহজাত সম্ভাবনাগুলির বৃদ্ধি ঘটায় এবং আচরণে পরিবর্তন আনে, তাকেই পরিণমন বলে।
Leave a comment