উনিশ শতকের ধারায় বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্য কোনটি সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর: ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’-এর বিষয়বস্তু, হলো আলাউদ্দীন হোসেন শাহ কর্তৃক চিতোর বিজয় ও পদ্মিনীর আগুনে আত্মাহুতি। টডের ‘Annals and Antiquities of Rayasthan’ গ্রন্থে আলাউদ্দীনের চিতোর আক্রমণ এবং জহরব্রতে আগুনে পদ্মিনীর আত্মাহুতি দানের যে বর্ণনা পাওয়া যায় কবি পদ্মিনী উপাখ্যানে তারই উপর ভিত্তি করেছেন। এ কাহিনির ঐতিহাসিকতা সন্দেহতীত নয়। আধুনিক ঐতিহাসিক গবেষণায় আলাউদ্দীন হোসেন শাহের চিতোর অভিযান প্রমাণিত হলেও এর সাথে পদ্মিনী উপাখ্যানের কেনো যোগসূত্র নেই। কিন্তু রাজস্থানে অনেক আগে থেকেই সতী পদ্মিনীর আত্মত্যাগ সংক্রান্ত অনেক কাহিনি ভাট চারণদের মুখে মুখে পঠিত হয়ে আসছে। ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’-এর কাহিনি, চরিত্র তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। আধুনিক যুগের কবি হয়েও এ বীররসাশ্রিত কাব্যে পয়ার, ত্রিপদী প্রভৃতি গতানুগতিক ছন্দ ব্যবহার করেছেন। ফলে এর বাণীমূর্তি প্রাণোচ্ছল নয় কিন্তু ভাবের মধ্যে রৌদ্ররস, বীররস ও করুণ রসের স্বচ্ছন্দ প্রকাশ ঘটেছে। রাণী ভীমসিংহের ক্ষত্রীয়দের প্রতি উৎবাণী ‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়’। এদেশের মানুষকে দেশাত্মবোধের উদ্দীপনা জাগিয়েছিল। শুধু এ প্রেক্ষাপটেই রঙ্গলালের ‘পদ্মিনী’ উপাখ্যান স্মরণীয় হয়ে আছে। নিসর্গ বর্ণনায় দিক থেকেও রঙ্গলালের ‘পদ্মিনীর উপাখ্যান’ অনন্য। যেমন “সারসী সরিৎ সিন্ধু শেখর সুন্দর, গহন গহ্বায় বন নির্ঝর নিকয়। দিনকর নিশাকর নক্ষত্রমণ্ডল। মেঘমাকে তড়িতেয় চমক উজ্জ্বল।”
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment