মনােবিদ ডিসেসকো ধারণা গঠনের প্রসঙ্গ আলােচনা করতে গিয়ে শিশুর ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে কয়েকটি পর্যায়ের কথা উল্লেখ করেন। এই পর্যায়গুলি হল一
(১) ধারণার উদ্দেশ্য প্রকাশ: কোনাে কিছু শেখা ও শেখানোর আগে শেখার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়কেই সচেতন হতে হবে। শিক্ষকের প্রথম কাজ হবে ধারণা গঠনের উদ্দেশ্যটি প্রকাশ করা, বিশেষ করে তার প্রয়ােজন সম্পর্কে শিক্ষার্থীকে অবহিত করা।
(২) ধারণার গুণ বিশ্লেষণ: শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধারণা গঠনের জন্য শিক্ষকশিক্ষিকার কাজ হবে শিক্ষাদানের আগে ধারণাটির গুণ শিক্ষার্থীর কাছে বিশ্লেষণ করা।
(৩) শিক্ষার্থীকে প্রস্তুত করা: শিক্ষকের আর-একটি দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীকে ধারণা গঠনে প্রস্তুত করে তালা। সঠিক উপস্থাপন এবং শিক্ষাই শিক্ষার্থীদের ধারণা গঠনে প্রস্তুত করে তুলতে পারে। প্রয়ােজনে বস্তুধর্মী অভিজ্ঞতাও ব্যবহার করা যেতে পারে।
(৪) যথাযথ উদাহরণ দান: ধারণা গঠনের জন্য উপযুক্ত উদাহরণ দিতে হবে। উদাহরণ খুব তাড়াতাড়ি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধারণা গঠন করে।
(৫) প্রতিক্রিয়া শক্তিশালীকরণ: শ্রেণিশিক্ষণের সময় শিক্ষক শিক্ষিকার কাজ হল শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেসব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, তাদের শক্তিশালী করে তোলা। এতে পাঠটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্থায়ী হয় এবং সঠিক ধারণা গড়ে ওঠে।
(৬) বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার সুযোগ: কোনাে বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা গঠনে শিক্ষক একই বস্তুকে বিভিন্ন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার সুযােগ সৃষ্টি করবেন।
(৭) শিক্ষার্থীকে ধারণা গঠনে সক্ষম করে তােলা: যে বিষয় বা বস্তুর ধারণা গঠন করতে হবে তার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অবহিত করবেন। এর ফলে যাতে শিক্ষার্থীরা ধারণা ব্যাখ্যাকারী গুণগুলি নির্দিষ্ট করতে পারবে এবং নিজেরাই ধারণা গঠন করতে সক্ষম এর ফলে।
(৮) মূল্যায়ন: শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণের ক্ষেত্রে কতখানি অগ্রসর হতে পেরেছে, শিক্ষকশিক্ষিকা তার মূল্যায়ন করবেন। এর ফলে যাদের মধ্যে সঠিক ধারণা গড়ে ওঠেনি, তাদের জন্য উপযুক্ত উপায় অবলম্বন করে ধারণা গঠন করা যাবে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষকের যথেষ্ট দায়িত্ব থাকে। তারা একদিকে যেমন ধারণা গঠনের উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর কাছে তুলে ধরবেন, তেমনি তা যাতে আরও সহজে গড়ে ওঠে এবং মনে স্থায়ী হয়, সেভাবেও শিক্ষার্থীকে প্রস্তুত করবেন।
Leave a comment