দেহের অভ্যন্তরে কোনাে পরিবর্তন ঘটলে যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, সেই উদ্দীপনা অন্তর্বাহী স্নায়ুপথে পরিচালিত হয়ে মস্তিষ্কে বা মেরুদন্ডে পৌঁছেলে যে বিশেষ ধরনের সংবেদন সৃষ্টি হয়, তাকে দৈহিক সংবেদন বলে।

দৈহিক সংবেদনের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায়, সেগুলি নীচে উল্লেখ করা হল一

(১) অভ্যন্তরীণ: দৈহিক সংবেদন অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকপ্রসূত। যেমন – খিদে পাওয়া।

(২) জটিল: দৈহিক সংবেদন জটিল। কারণ এর সঙ্গে পেশি, স্নায়ু প্রভৃতি সংবেদন ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকে।

(৩) উৎপত্তিস্থল নির্ণয়ে জটিলতা: দৈহিক সংবেদনের ক্ষেত্রে তার উৎপত্তিস্থল নির্ণয় করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

(৪) পরিমাপক: দৈহিক সংবেদন হল দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পরিমাপক।

(৫) দৈহিক চাহিদাপূরণ: দৈহিক সংবেদনের মাধ্যমে দৈহিক ঘাটতি ও চাহিদার বিষয়ে জানা যায়। এরূপ সংবেদনের মাধ্যমে দেহের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

(৬) দৈহিক সংবেদন ও বিশেষ সংবেদন: দৈহিক সংবেদন বিশেষ সংবেদনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যেমন, খিদের সঙ্গে স্বাদ ও গন্ধের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লক্ষ করা যায়।

(৭) আদিমতম: দৈহিক সংবেদন সবচেয়ে আদিম সংবেদন। এটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীটপতঙ্গের মধ্যেও বর্তমান।

সাধারণভাবে মানবদেহের বিভিন্ন পেশির সংকোচন বা প্রসারণের ফলে যে সংবেদন সৃষ্টি হয়, তাকে পেশীয় সংবেদন বলে।

পেশীয় সংবেদন একটি জটিল সংবেদন। এই সংবেদনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা

(১) শক্তি প্রয়ােগজনিত সংবেদন: যে-কানাে কাজ করার সময় বাহ্যিক বস্তুর ওপর শক্তি প্রয়ােগ করতে হয়। এর জন্য যে বিশেষ ধরনের সংবেদন সৃষ্টি হয়, তাকে শক্তিপ্রয়ােগজনিত সংবেদন বলে।

(২) চেষ্টীয় সংবেদন: মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালন তথা পেশি চালনা করার জন্য যে বিশেষ প্রকার সংবেদন সৃষ্টি হয়, তাকে চেষ্টীয় সংবেদন বলে।

(৩) পাশ্বীয় সংবেদন: মানুষ বহির্জগতে কোনো পরিবর্তন আনার জন্য যখন কাজ করে, তখন তার অঙ্গপ্রত্যঙ বহিঃবস্তুর সংস্পর্শে আসে এবং এর ফলে যে বিশেষ প্রকার সংবেদন সৃষ্টি হয়, তাকে পাশ্বীয় সংবেদন বলে।