‘ভদ্রার্জুন’ নাটকের মূল উপজীব্য কী? এ নাটকের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

১৮৫২ সালে তারাচরণ শিকদারের ভদ্রার্জুন নাটক প্রকাশিত হয়। এটি ইংরেজি ও সংস্কৃতের সমন্বয়ে রচিত প্রথম বাংলা নাটক। পাশ্চাত্য রীতি অনুযায়ী ‘ভদ্রার্জুন’ নাটকটি পাঁচ অঙ্কের এবং প্রত্যেকটি অঙ্ক কতকগুলো দৃশ্যে বিভক্ত। এতে এলিজাবেথীয় নাটকের prologue এর মতো প্রস্তাবনা রয়েছে। এ নাটকের সংলাপে গদ্য ও পদ্যের মিশ্রণে তা বিশিষ্টতা লাভ করেছে। ভদ্রার্জুন নাটকের মূল উপজীব্য হলো অর্জুন কর্তৃক সুভদ্রা হরণ।

নাটকের কাহিনি দ্রুত ঘটমান ঘটনারাশির মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করেছে। ভদ্রার্জুনই সর্বপ্রথম বাংলা নাটক যেখানে কাহিনির সুসংহত গতি ও নাটকীয় কৌতূহল আমরা লক্ষ করি। নাটকের প্রথম অঙ্কে যুধিষ্ঠিরের সভায় নারদের আগমন এবং তারই চক্রান্তে অর্জুনের বারো বছরের জন্য রাজ্য ত্যাগ। দ্বিতীয় অঙ্কে সুভদ্রার বিবাহের উদ্যোগ এবং বলরাম কর্তৃক দুর্যোধনের সাথে বোনের বিবাহের আয়োজন। তৃতীয় অঙ্কে প্রবাসী তীর্থে অর্জুনের আগমন।

সুভদ্রা ও অর্জুনের পারস্পরিক পূর্বরাগ ও সত্যভামার সহায়তায় গান্ধর্ব বিবাহ। চতুর্থ অঙ্কে নারদ কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে দুর্যোধনের বরবেশে দ্বারাকায় যাত্রা। পঞ্চম অঙ্কে সুভদ্রাহরণ। কৌরবদের অপমান এবং বলরামের ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যমে নাটকের সমাপ্তি। তারাচরণ শিকদারের ভদ্রার্জুন নাটকে নানাদোষগুণ পরিলক্ষিত হয়। এ নাটকটি সব মিলিয়ে সার্থক নয়। বলদেব ছাড়া কোনো প্রধান চরিত্রই এ নাটকে বিশেষভাবে ফুটে উঠেনি। তবে অপ্রধান চরিত্রগুলো মোটামুটি ফুটে উঠেছে। বিশেষকরে ভীম, দুঃশাসন এবং রোহিনী।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।