Stream of conciousness বা চেতনা প্রবাহরীতি এক দার্শনিক প্রত্যয়, আত্মসমাহিত চেতনা থেকে উৎসারিত এক দার্শনিক প্রজ্ঞা। এই ধারায় মুক্তির শৃঙ্খলার চেয়ে অনুষঙ্গই প্রধান। প-ট ও চরিত্রাবলি প্রবাহিত হয় প্রধান চরিত্র পাত্রের মানসের ভিতর দিয়ে এবং তারই চেতনা প্রবাহে আভাসিত হয় সমস্ত, চুম্বন করে চলে সমস্ত কিছু এক মুহূর্তে একটি খাইরের ঘটনা মনোলোকে যেসব ভাষা অনুষঙ্গ ও স্মৃতিচূর্ণ গড়ে তোলে তারই সমাকৃতি। এই ধরনের উপন্যাস আধুনিক কালেরই আবিষ্কার প্রায় মনোবিদ্যা থেকেই পরিগৃহীত ‘অবাধ অনুষঙ্গ’ এর প্রধান চরিত্র। এই জাতীয় তত্ত্বের প্রথম স্রষ্টা একজন ফরাসি ঔপন্যাসিক ‘এদুয়ার্দ দুজাঁদা’। তাঁর উপন্যাসের নাম ‘অরণ্যে আর না’ (১৮৮৭)। পরবর্তীতে ‘জেমস জয়েস’ এবং ‘ভার্জিনিয়া উলফ’ এ ধারার আরো সফলতার দাবিদার। বাংলা উপন্যাসে চেতনা প্রবাহরীতি আসে আরো একটু পরে, তিরিশের ঔপন্যাসিকদের মধ্য দিয়ে। সর্ব প্রথম বাংলা উপন্যাসে এ ধারার প্রয়োগ দেখান ‘ধূর্জটি প্রসাদ মুখোপাধ্যায়’ তাঁর অন্তশীল উপন্যাসে ১৯৩৫ সালে এবং প্রায় সমকালে এ ধারার প্রয়োগ দেখায় ‘বুদ্ধদেব বসু’ তাঁর ‘তিথিডোর’ (১৯৪৯), ‘নির্জন স্বাক্ষর’ (১৯৫১) এবং ‘কালো হাওয়া’ (১৯৪২) প্রভৃতি উপন্যাসে।
Leave a comment