চন্ডীদাস সমস্যা বাংলা সাহিত্যে একটি অতি পরিচিত বিতর্কিত সমস্যা।চন্ডীদাসের পদাবলি দীর্ঘদিন যাবত প্রচলিত একাধিক চন্ডীদাস সম্পর্কিত চন্ডীদাস সমস্যার উদ্ভব হয়েছে ১৯১৬ সালে বসন্তরঞ্জন রায় সম্পাদিত শ্রীকৃষ্ণকীর্তন প্রকাশের পর থেকে।১৮৯৬ সালে দীনেশচন্দ্র সেনের “বংগভাষা ও সাহিত্য” গ্রন্থে একাধিক চন্ডীদাসের কথা বলা হয়েছিল।তার মন্তব্য ছিল এমনঃ ‘কৃষ্ণ কীর্তনে জানা যাইতেছে যে, চন্ডীদাসের নাম অনন্ত,তিনি বড়ু উপাধি ব্যবহার করিতেন এবং বাসলী দেবীর আজ্ঞায় পদ রচনা করিতেন। চন্ডীদাসের প্রচলিত পদের বহু পূর্বে তাহার অনন্ত নাম পাওয়া গিয়াছিল,তাহার বড়ু উপাধি ও বাসুলীর আদেশ সম্বন্ধে পাঠকবর্গের সকলেই নিশ্চয়ই অবগত আছেন।সুতরাং কবি চন্ডীদাস এবং শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি তাতে কোন সন্দেহ নেই।পরে চন্ডীদাসের ভণিতাযুক্ত কিছু পালাগান ও বিচ্ছিন্ন পদ সংগৃহীত হয়।শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য রচিত হবার পর একাধিক চন্ডীদাস সমস্যা আরো দৃঢ় হলো।১৩৪১ সনি মনীন্দ্রমোহন বসু কর্তৃক দীন চন্ডীদাসের পদাবলি প্রকাশিত হলে সমস্যা আরো জটিল হয়ে পড়ে।

চন্ডীদাস সমস্যার রহস্যের বেড়াজালে যে সব প্রশ্ন বিবেচনা করা দরকারঃ

১/শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কবি চন্ডীদাস ও পদাবলীর কবি চন্ডীদাস একই ব্যক্তি নাকি আলাদা?

২/তারা এক ব্যক্তি না হলে চন্ডীদাস কত জন?

৩/একাধিক চন্ডীদাস হলে আদি কে?

৪/বিভিন্ন চন্ডীদাসের কাল কখন?

৫/চৈতন্যদেব কোন চন্ডীদাসের রচনা আস্বাদন করতেন।

৬/চন্ডীদাস চৈতন্য পূর্ববর্তী না পরবর্তী?

৭/চন্ডীদাসের জন্মভূমি দুই স্থানে দাবির কারণ কি?

৮/চন্ডীদাসের সাধনসংগিনী রামী রজকিনী কোন চন্ডীদাসের?

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন প্রকাশের পর দেখা গেল এ কাব্যের ভাষা রুচি ও রসের ধারার সাথে পদাবলীর চন্ডিদাসের বিরাট পার্থক্য। বাসুলী সেবক বড়ু চন্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের রচয়িতা এবং চৈতন্যপূর্ব কবি।পদাবলির চন্ডীদাসের সাথে তার কোন সামঞ্জস্য নেই।তাই শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের বড়ু চন্ডীদাস এবং দ্বিজ চন্ডীদাস ভিন্ন কবি বলে ধারণা জন্মে।মণীন্দ্রবসু দেখালেন যে, পদাবলির চন্ডীদাস বড়ু বা দ্বিজ চন্ডীদাস নয়,তিনি দীন চন্ডীদাস। বড়ু চন্ডীদাস চৈতন্যদেবের আবির্ভাবের পূর্বে ভাগবত অবলম্বনে পান্ডিত্য ও কবিত্ব রাধাকৃষ্ণলীলা বিষয়ক আখ্যান কাব্য শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচনা করেন।শ্রীচৈতন্যদেব কোন একজন চন্ডীদাসের পদ আস্বাদন করতেন।

এ সম্পর্কে ‘চৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থে বলা আছেঃ

১/বিদ্যাপতি জয়দেব চন্ডীদাসের গীত।

আস্বাদয়ে রামানন্দ স্বরুপ সহিত।।

২/বিদ্যাপতি চন্ডীদাস শ্রীগীতগোবিন্দ।

এই তিন করয়ে প্রভুর আনন্দ।।

মনে করা হয়,রাধাকৃষ্ণের উদ্দাম দেহসম্ভোগজনিত অনাবৃত আকাংখার উত্তপ্ত ফেনোচ্ছাস চৈতন্যদেবের কাছে আস্বাদনযোগ্য ছিল না।তিনি হয়তো অন্য কোন চন্ডীদাসের পদ উপভোগ করেছিলেন।আবার পদাবলির চন্ডীদাস সম্পর্কেও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।পদের উৎকর্ষ,অপকর্ষ বিবেচনা করে এখানেও একাধিক চন্ডীদাসের কল্পনা করা হয়েছে।ড.সুকুমার সেন এবং মনীন্দ্রমোহন বসু দুজন চন্ডীদাসের কথা বলেছেন।হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও সতীশচন্দ্র রায়ের মতে চন্ডীদাস তিন জন।ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও তিনজন চন্ডীদাসের কথা উল্লেখ করেছেন।ড.আহমদ শরীফ ও এই ব্যাপারে সহমত পোষন করেছেন।

১/অনন্ত বড়ু চন্ডীদাস সর্বপ্রাচীন চন্ডীদাস।

২/চন্ডীদাস-চৈতন্য পূর্বকালের বা জ্যেষ্ঠ সমসাময়িক।

৩/দীন চন্ডীদাস আঠার শতকের শেষার্ধ।

সকলের মতামত অনুসারে তিনজন চন্ডীদাসের কথা জানা যায় তারা হলেনঃ

১/প্রাকচৈতন্য যুগের বড়ু চন্ডীদাস।

২/প্রাক চৈতন্যযুগের উৎকৃষ্ট শ্রেনির পদাবলি চন্ডীদাস।

৩/চৈতন্যত্তোর যুগের পালাগান রচয়িতা দীন চন্ডীদাস।

এগুলোর উৎস হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন,বড়ু,দ্বিজ,আদি চন্ডীদাসের ভণিতাযুক্ত আদি পদাবলি,মনীন্দ্রমোহন বসু আবিষ্কৃত দীন চন্ডীদাসের পালাগানের পদাবলি,ড.শ্রীকুমার ব্যানার্জির রচিত বন পাশ থেকে সংগৃহীত দীন চন্ডীদাসের বৃহত্তর পালাগান।এ থেকে যে কজন চন্ডীদাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়ঃ

১/শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা বড়ু চন্ডীদাস।

২/পদাবলির দ্বিজ,দীন,বড়ূ, আদি প্রভৃতি ভণিতাযুক্ত চন্ডীদাস।

৩/পালাগানের দীন চন্ডীদাস।

৪/সহজিয়াপন্থী রাগাত্মিকা পদের চন্ডীদাস।

তবে সব মিলিয়ে ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তিন জন চন্ডীদাস ছিলেন বলেই মনে করেন।(বড়ু,দ্বিজ,দীন)।

পন্ডিতগণের আবিষ্কৃত তথ্যাদি থেকে যে কজন চণ্ডীদাসের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে তাদের মধ্যে বড়ু চন্ডীদাস সবচেয়ে প্রাচীন। ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যে প্রাচীনত্ব লক্ষ করেছেন তা মধ্যযুগের অন্য কোন কাব্যে নেই।সে সব হলো, উত্তম পুরুষের এক বচন ও বহুবচনে দুই পৃথক রুপ,উত্তম পুরুষের অনুজ্ঞায় ইউ প্রত্যয় স্ত্রীলিংগ কর্তার অকর্মক ক্রিয়ার অতীতকালে স্ত্রীপ্রত্যয় ইত্যাদি।ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৩৭০ সালে বড়ু চন্ডীদাসের জন্ম ও ১৪৪৩ সালে মৃত্যু বলে ধারণা করেন।বড়ূ চন্ডীদাস শ্রীচৈতন্যদেবের পূর্বে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য রচনা করেছিলেন।শ্রীচৈতন্যদেব যে চন্ডীদাসের কাব্য আস্বাদন করেছেন তিনি বড়ু চন্ডীদাস নন।শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকে চৈতন্যপূর্বকালের রচনা প্রমাণ করে মণীন্দ্রমোহন বসু কতিপয় বৈশিষ্ট্য দেখিয়েছেন।

তা হলোঃ

১/শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে রাধা লক্ষ্মী স্বরুপা।কিন্তু চৈতন্য পরবর্তী বৈষ্ণব ভাবনা অনুসারে রাধা হল কৃষ্ণের হাদিনী শক্তি স্বরুপা,প্রেমসাধনার অবলম্বন।

২/শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে রাধা ও চন্দ্রাবলী এক, কিন্তু চৈতন্যত্তোর পদাবলিতে পৃথক।

৩/শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে বড়ায়ী রাধাকৃষ্ণের একমাত্র প্রণয়সাধিকা, কিন্তু চৈতন্য পরবর্তীকালে পদাবলীতে ললিতা,বিশাখা একাধিক সখীর কথা বলা আছে।

৪/শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে রাধা মানবী নায়িকা অজ্ঞাত যৌবনা মুগ্ধাবস্থা থেকে প্রগলভ অবস্থায় য়ার বিবর্তন।

ভণিতার ব্যাপারেও বড়ু চন্ডীদাসের স্বাতন্ত্র্য রয়েছে।তিনি কোথাও দ্বিজ ও দীন ভনিতা ব্যবহার করেননি।ভাব ও ভাষাগত দিক থেকে বড়ু চন্ডীদাস অন্যদের থেকে পৃথক।শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের লিপিকাল পদাবলির তুলনায় প্রাচীন বলেই প্রমাণিত।এতে বড়ু চন্ডীদাসের স্বাতন্ত্র্য ও প্রাচীনত্বই স্বীকৃত হয়।বড়ু চন্ডীদাসের সাথেই মিথিলার কবি বিদ্যাপতির সম্মিলন ঘটেছিল বলে অনুমান করা যেতেই পারে। ড.অসিতকুমার ব্যানার্জী বড়ু চন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন,”এই কাব্যের সাথে চৈতন্যদেবের কোন সম্পর্ক নেই,তবে মনে রাখতে হবে ইনি প্রায় সর্বত্রই বড়ু ভণিতা দিয়েছেন,বাসলীকে প্রণাম নিবেদন করিয়াছেন,কিন্তু কোথাও রামী রজকিনীর উল্লেখ করেন নাই,এ কাব্যের কোথাও সহজিয়া মতের ইংগিত মাত্র নেই।সুতরাং,বড়ু চন্ডীদাস রামী চন্ডিদাস কাহিনীর নায়ক নন।”

চন্ডীদাস সমস্যা সমাধানে দ্বিজ চন্ডীদাস নামে অন্য একজন চন্ডীদাসের অস্তিত্ব স্বীকৃত হয়েছে।ভাব ও ভাষা বিচারে দ্বিজ চন্ডীদাস একজন স্বতন্ত্র কবি।ড.সুকুৃমার সেনের মতে এই চন্ডীদাসের জীবনকাল ১৫২৫ সালের এদিকে হইবে না।দ্বিজ চন্ডীদাস রাধাকৃষ্ণবিষয়ক বিচ্ছিন্ন পত্রাবলি রচনা করেছিলেন। তার পূর্বরাগ আক্ষেপানুরাগ ও ভাবসম্মিলনের পদগুলো উৎকর্ষপূর্ন।এসব পদের ভাব ও আদর্শ থেকে প্রমাণিত হয় যে,শ্রীচৈতন্যদেব হয়তো তার পদ আস্বাদন করেছিলেন।বড়ু চন্ডীদাসের মতো দ্বিজ চন্ডীদাস ও যে বাসলী দেবীর সেবক ছিলেন তা তার ভণিতা থেকে জানা যায়।দ্বিজ চন্ডীদাসের তারা নাম্নী রজকী সাধন সংগিনী ছিল।বড়ু চন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে কয়েকটি মাত্র আরবি ফরাসি শব্দ আছে,কিন্তু দ্বিজ চন্ডীদাস এর পদাবলিতে আরবি ফারসি শব্দের প্র‍য়োগ অনেক।এতে দ্বিজ চন্ডীদাস যে পরবর্তীকালের তা প্রমাণিত হয়৷তার একটি পদের ভণিতায় শ্রীরুপের নাম পাওয়া যায় যায় বলে ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বলেছেন,”মনে হয় তিনি চৈতন্য শিষ্যরুপ গোস্বামীর শিষ্য ছিলেন।

এরপর দীন চন্ডীদাসের কথা উল্লেখযোগ্য।মনীন্দ্রমোহন বসু মনে করেন দীন চন্ডিদাসের পদগুলো দ্বিজ চন্ডীদাসের ভণিতায় রয়েছে।প্রকৃতপক্ষে তারা পৃথক কবি।মুহম্মদ শহীদুল্লাহ মনে করেন,দীন চন্ডীদাসের প্রামাণিক ভণিতায় বাসলী দেবীর কোন উল্লেখ নেই,রজকিনী রামী বা নান্নুরেরও উল্লেখ নেই।দীন চন্ডীদাস একতি ধারাবাহিক কৃষ্ণযাত্রা রচনা করেন,কিন্তু দ্বিজ চন্ডীদাস বিক্ষিপ্ত পদাবলীর ভিন্ন কোন ধারাবাহিক কৃষ্ণলীলাকাব্য রচনা করেন নি।তিনি ব্রজবুলিতেও কিছু পদ রচনা করেছেন।মনীন্দ্রমোহন বসুর মতে ১৭০০ থেকে ১৭৫০ এর মধ্যে দীন চন্ডীদাসের পদাবলি প্রসিদ্ধি লাভ করে।মুহম্মদ শহিদুল্লাহ দীন চন্ডীদাসকে সপ্তদশ শতকের প্রথমার্ধের লোক মনে করেন।হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় প্রমান করেছেন,দীন চন্ডীদাস নরোত্তম ঠাকুরের শিষ্য ছিলেন এবং খুব সম্ভব শতের শতকের গোড়ার দিকের কবি।ড.অসিতকুমার বন্দোপাধ্যায়ের মতে দীন চন্ডীদাস সমপর্কে শুধু এতটুকু বলা যায়,সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে দীন চন্ডীদাস নামে এক স্বল্প প্রতিভার কবির আবির্ভাব ঘটেছিল,যিনি রাধাকৃষ্ণলীলা অবলম্বনে বিরাট পালা রচনা করেছিলেন। কিন্তু তাহার রচনা অতিশয় নীরস,কবিত্ব প্রতিভা বর্জিত সাধারণ স্তরের লেখনী কুন্ডয়ন মাত্র।মণীন্দ্রমোহন চন্ডীদাস ভণিতাযুক্ত যাবতীয় পদকে দীন চন্ডীদাসের ক্ষীন স্কন্ধে আরোপ করিয়াছেন,ইহা কখনোই যুক্তিযুক্ত নহে।

এসব আলোচনা থেকে বড়ু,দ্বিজ,দীন এই তিনজন চন্ডীদাসের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়।অনেক অখ্যাত কবি চন্ডীদাসের ভণিতা প্র‍য়োগ করে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন তাতে জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।চন্ডীদাস সমস্যা সম্পর্কিত এই জটিলতাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ সহজিয়া চন্ডীদাস নামে চতুর্থ চন্ডীদাসের পরিকলপনা করেন।তিনি সহজিয়া মতের রাগাত্মিকা পদের লেখক ও পিরীতিমন্ত্রের সাধক।তার সম্পর্কে নানা ধরনের গল্পকাহিনি প্রচলিত আছে।

চন্ডীদাস সমস্যা সম্পর্কিত মতবাদগুলো সংক্ষেপে এমন হয়, ড.দীনেশচন্দ্র সেন অভিন্ন চন্ডীদাস মনে করেন।রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী এই মতের সমর্থক।বসন্তরঞ্জন রায় ও একই ব্যক্তি বলেছেন।ড.সুকুমার সেন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ছাড়া দ্বিতীয় কোন চন্ডীদাসের অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দিহান। মণিন্দ্রমোহন বসু চৈতন্যপূর্ব বড়ু চন্ডীদাস ও চৈতন্যপরবর্তী দীন বা দ্বিজ একজনকে মানেন।ড.মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ও বিমানবিহারী মজুমদার তিনজন চন্ডীদাস মানেন।এ ধরনের আরো অনেক মতামত র‍য়েছে।তবে ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ র মতানুসারে

চৈতন্যপূর্ব যুগের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা বড়ু চন্ডীদাস, পদাবলির দ্বিজ চন্ডীদাস, চৈতন্যপরবর্তী দীণ চন্ডীদাস এই তিনজনকে স্বীকার করতে হয়।

চন্ডীদাস সমস্যার সম্পর্কে পন্ডিতরা মতানৈক্য দূর করতে সক্ষম হন নি।যথাযথ সমাধান দেওয়ার মত উপাদানের এখনো যথেষ্ট অভাব।মধ্যযুগের চারশো বছরের বিশাল পরিসরে চন্ডীদাস নামধারী কবিগন কবিতা রচনা করেছেন এবং তাদের পদ সর্বদাই সমাদৃত হয়েছে।কবিতার রসের দিকে পাঠকের যত মনোযোগ ছিল, কবি পরিচয় জানার দিকে পাঠকের এতটা মনোযোগ ছিল না।তাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহে জটিলতা এই সমস্যা বাংলা সাহিত্যে এক রহস্যজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে।

(সংগৃহীত পোস্ট)

লেখক :- আল হাসান

তথ্যসূত্রঃ

১/বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস,ড.মাহবুবুল আলম,খান ব্রাদার্স প্রকাশনী,ঢাকা,২০১৩, (পৃষ্ঠাঃ১২৭-১৩১)

২/বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ),সৌরভ শিকদার,ঢাকা,২০১৪,(পৃষ্ঠাঃ১১৫-১৩২,১৩৮,১৪৩)

৩/লাল নীল দিপাবলি বা বাংলা সাহিত্যের জীবনী,হুমায়ূন আজাদ,আগামী প্রকাশনী,২০০৮,(পৃষ্ঠাঃ৫৭,৫৮)

৪/বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস মধ্যযুগ,সৈয়দ আলী আহসান,বাতায়ন প্রকাশন,ঢাকা,২০১৪,(পৃষ্ঠাঃ৭১-৭৫)