অথবা, গ্রুপ বলতে কী বুঝ?
ভূমিকাঃ রাজনীতি অধ্যয়নে বা বিশ্লেষণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতি স্বীকৃত হয়েছে। এক সময়ে, গতানুগতিক পদ্ধতিকে সর্বোত্তম পদ্ধতি বলে স্বীকার করা হতাে। কিন্তু বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের অন্যতম আধুনিক পদ্ধতি হলো গ্রুপ তত্ত্ব। অবশ্য অনেক পূর্বে আরব চিন্তাবিদ ইবনে খালদুন তার ‘মুকাদ্দমা’ গ্রন্থে গ্রুপ সম্পর্কে আলােচনা করেছেন। মূলত আমেরিকান সমাজের দ্বন্দ্ব ও প্রতিযােগিতা থেকেই আধুনিক গ্রুপ তত্ত্বের উদ্ভব ঘটেছে।
গােষ্ঠতিত্ত্ব বা গ্রুপ তত্ত্বের সংজ্ঞাঃ প্রচলিত অর্থে গ্রুপ হচ্ছে একটি জনগােষ্ঠী, যারা কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একত্রে মিলিত হয়। আর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধনে যে জনসমষ্টি একত্রে মিলিত হয় তাদেরকে রাজনৈতিক গ্রুপ বলে। গ্রুপ তত্ত্বের প্রবক্তা A. Bently-এর মতে ব্যক্তির স্বতন্ত্র কোনাে অস্তিত্ব নেই। তারা গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যক্তি যে গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত সে গ্রুপই তার স্বার্থ সংরক্ষণ করে। আবার কোনাে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও গবেষক বিভিন্নভাবে গ্রুপের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা করা হলােঃ
আর্থার এফ. বেন্টলি (Arthur. F. Bently)- এর মতে, “A group is a mass of activity that tends to more for some definite course of conduct.” [The process of Got]
Bill and Hard Grave-এর মতে, “A group may be defined as an aggregate of individuals who interact in varying degrees pursuance of a common interest.”
বারট্রাম লোথাম (Bertram Lotham) বলেন, সমাজ হলাে একটি গােষ্ঠিজগৎ। এখানে গােষ্ঠিসমূহ একত্রিত হয়, ভেঙে যায়, বিরামহীন অবস্থায় ক্ষমতার জোট গঠন করে এবং একত্রে অবস্থান করে। গােষ্ঠীর বিরােধ ও প্রতিরােধের মাধ্যমে সমাজের গতি অক্ষুন্ন থাকে।
অর্থাৎ গােষ্ঠী বলতে ঐসব ব্যক্তিবর্গের সমষ্টিকে বুঝি যারা একই ধরনের স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, গােষ্ঠী হলাে এমন ব্যক্তিদের সমষ্টি যাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একই ধরনের এবং যাদের কর্মকাণ্ডে একই মনােভাব প্রকাশ পায়।
Leave a comment