প্রশ্নঃ গণতন্ত্র কী?
অথবা, গণতন্ত্র কাকে বলে?
অথবা, গণতন্ত্র বলতে কী বুঝ?
অথবা, গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও।
ভূমিকাঃ গণতন্ত্র আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে সমাদৃত শাসনব্যবস্থা। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রিসে সর্বপ্রথম গণতন্ত্র শব্দটি ব্যবহৃত হয়। গণতান্ত্রিক সরকার বিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিক থেকে শুরু করে বিশ্বের সর্বত্র জনপ্রিয়তা অর্জন করতে থাকে। তাই অনেকেই আধুনিক যুগকে গণতান্ত্রিক যুগ বলে অবহিত করেছেন।
গণতন্ত্রঃ গণতন্ত্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ Democracy। শব্দটি এসেছে Demos এবং Kratos থেকে। Demos শব্দের অর্থ জনগণ এবং Kratos শব্দের অর্থশাসন যা কর্তৃত্ব। সুতরাং বুৎপত্তিগত অর্থে গণতন্ত্র হলাে জনগণের শাসন। সাধারণত যে শাসনব্যবস্থায় শাসনক্ষমতা এক বা মুষ্টিমেয় লােকের হাতে ন্যস্ত না থেকে সমগ্র জনসাধারণের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং অধিকাংশ জনগণকে মতামত প্রকাশ করার সুযােগ দেওয়া হয় তাকে গণতন্ত্র বলে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন। নিম্নে, কতিপয় সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলাে-
অধ্যাপক লিন্ডসে (Prof Lindsay) এর ভাষায় “Democracy is a theory of society as well as a theory of government.”
প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন (Abraham Lincoln) এর মতে, “Democracy is the government of the people, by the people, for the people.”
লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) তার ‘Modern Demoracies’ গ্রন্থে বলেছেন, “যেখানে শাসনব্যবস্থা কোন শ্রেণির উপর ন্যস্ত না থেকে সমগ্র সমাজের সদস্যদের উপর ন্যস্ত থাকে তাই গণতন্ত্র।”
জে. এস. মিলের মতে, “রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতায় সকলের প্রবেশাধিকার হচ্ছে গণতন্ত্র।”
অধ্যাপক সিলির (Prof. Selley) মতে, “গণতন্ত্র হলাে এমন এক শাসনব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেকেরই অংশগ্রহণ রয়েছে।”
উপসংহারঃ উপযুক্ত আলােচনা শেষে বলা যায়, গণতন্ত্র হচ্ছে সেই শাসনব্যবস্থা যেখানে সরকার গঠন ও পরিচালনায় জনগণের অংশগ্রহণ থাকে এবং এখানে সরকার তার কাজের জন্য জনগণের নিকট দায়ী থাকে।
Leave a comment