প্রশ্নঃ কি কি কারণে রিভিশনের জন্য দরখাস্ত সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দাখিল করা যায়? ১৯৭৮ সালের আইন সংস্কর অধ্যাদেশ প্রণয়নের পূর্বে এবং পরে রিভিশন সংক্রান্ত বিধানগুলি আলোচনা কর। আপীল আদালতের ক্ষমতাগুলি কি?

রিভিশনের কারণঃ দেওয়ানী কার্যবিধির ১১৫ ধারা অনুযায়ী নিম্নোক্ত কারণে হাইকোর্ট বিভাগে দরখাস্ত দাখিল করা যায়, যদি প্রতীয়মান হয় যে কোন অধঃস্তন আদালত-

(ক) আইনত তার যে এখতিয়ার নেই তা প্রয়োগ করেছেন; অথবা

(খ) এখতিয়ার প্রয়োগে অপারগ হয়েছেন; অথবা 

(গ) এখতিয়ার বেআইনীভবে বা অনিয়মিতভাবে প্রয়োগ করেছেন।

উপরিউক্ত কারণ ছাড়াও নিম্নোক্ত শর্তাবলী পূরণ না বলে হাইকোর্ট বিভাগ রিভিশন ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন নাঃ

(১) মামলাটি অবশ্যই আদালত কর্তৃক নিষ্পত্তিকৃত হতে হবে;

(২) উক্ত আদালত অবশ্যই হাইকোর্ট বিভাগের অধীনস্থ হতে হবে;

(৩) কোন আপীল আইন অনুযায়ী সমর্থনীয় হবে না; রিভিশন এখতিয়ার প্রয়োগ করতে গিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ সাক্ষ্যের গুণাগুণ বিচার করবেন না। উক্ত আদালত দেখবেন যে, সে আদালতের আদেশ রিভিশনের অধীন সে আদালত যথারীতি ও যথাযথভাবে আইনের প্রয়োজন আদালত যথারীতি ও যথাযথভাবে আইনের প্রয়োজন পূরণ করেছেন কিনা এবং এখতিয়ার প্রয়োগে ব্যর্থতা বা অনিয়ম এমন যে তা আদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ ন্যায়সঙ্গত করে।

এ ধারার অধীন রিভিশন এখতিয়ার প্রয়োগ সুবিবেচনামুলক এবং নিম্ন আদালত যদি অধিক্ষেত্র ছাড়াই “কোন কাজ করে থাকে অথবা অধিক্ষেত্র প্রয়োগে অবৈধ কাজ করে তবুও হাইকোর্ট বিভাগ সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন না যদি না এর ফলে ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন হয়ে থাকে।

১৯৭৮ সালের সংস্কারের পূর্বে ও পরে ও বিধান অধ্যাদেশ দ্বারা ১১৫ ধারাটি সম্পূর্ণরূপে সংশোধন করা হয়েছে।

সংশোধিত ধারাটি নিম্নরূপঃ

(১) উপধারাতে বলা হয়েছে যে, হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন কোন আদালত যে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন এবং যে নিষ্পত্তির ব্যাপারে কোন আপীল চলে না, সেক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত মামলার নথী তলব করতে পারেন এবং যদি প্রতীয়মান হয় যে, অধস্তন আদালত আইনগত বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং সেই ভুলের কারণে বিচারে ত্রুটি হয়েছে তবে তা রদ করতঃ হাইকোর্ট বিভাগ যথোপযুক্ত আদেশ দান করতে পারবেন।

সংশোধনীর পূর্বে, ১১৫ ধারার (২) উপধারায় বলা ছিল যে, জেলা জজ আদালতে অধস্তন কোন আদালত যে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন এবং যে নিষ্পত্তির বিরুদ্ধে কোন আপীল চলে না, সেক্ষেত্রে জেলা জজ আদালত উক্ত মামলার নথী তলব করতে পারবেন এবং যদি প্রতীয়মান হয় যে, অধঃস্তন আদালত আইনগত বিষয়ে স্পষ্টতঃ ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তবে তা রদ করতঃ সেই মামলায় জেলা জজ আদালত যথোপযুক্ত আদেশ দান করতে পারবেন।

এই ধারার (৩) উপধারায় বলা ছিল যে জেলা জজ আদালত (২) উপধারানুযায়ী রিভিশনকালে যদি আইনগত বষয়ে কোন গুরুতর ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন, তবে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে জেলা জজ আদালতের উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আবার রিভিশনের আবেদন করা যাবে এবং হাইকোর্ট বিভাগ এ বিষয়ে যথোপযুক্ত আদেশ দিতে পারবেন।

সংশোধনী দ্বারা এই দু’টি উপধারা বাদ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জেলা জজ আদালতে কোন রিভিশনের মামলা চলে না, একমাত্র হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশনের দরখাস্ত দাখিল করা যাবে।