“এই ক্ষুদ্র মেয়েটি একটি দুর্ভেদ্য প্রহেলিকা”

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘অতিথি’ গল্পে কাঁঠালিয়ার জমিদার মতিলাল বাবুর একমাত্র কন্যা চারুশশী। সে তার পিতামাতার একমাত্র সন্তান। পিতৃমাতৃস্নেহের একমাত্র অধিকারিণী। তার খেয়াল ও জেদের অন্ত ছিল না। খাওয়া, কাপড় পরা, চুল বাঁধা ইত্যাদি সম্বন্ধে তার স্বাধীন মত ছিল। কিন্তু সে মতের কিছুমাত্র স্থিরতা ছিল না। যেদিন কোথাও নিমন্ত্রণ থাকত সেদিন তার মায়ের ভয় হতো পাছে মেয়েটি সাজসজ্জা সম্বন্ধে একটা অসম্ভব জেদ ধরে বসে। যেদিন তার চুলবাঁধা মনের মতো হয় না- সেদিন যতবারই চুল বেঁধে দেওয়া হোক না কেন তার মন পাওয়া যেত না। অবশেষে কান্নাকাটি আরম্ভ করতো। তারাপদ তাদের নৌকায় উঠলে তার মাতা ও পিতার ভালোবাসা দেখতে পায় তারাপদর প্রতি। আর তাই সে তারাপদকে ঈর্ষা করে। চারুর মন যখন ভালো থাকে তখন কিছুতেই তার আপত্তি থাকে না। তখন সে অতিমাত্রায় ভালোবাসা প্রকাশ করে এবং তার মাকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করে হেসে-বকে একেবারে অস্থির করে তোলে। তারাপদ তাদের গ্রামের সকলের মন জয় করলেও শুধু চারুশশীর মন জয় করতে ব্যর্থ হয়। তার কাছে চারুশশী দিন দিন কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই গল্পকার তাকে দুর্ভেদ্য প্রহেলিকা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।