প্রশ্নঃ আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য আলােচনা কর।

অথবা, আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য লিখ।

ভূমিকাঃ আমলাতন্ত্র একটি সর্বজনীন ধারণা। বিশ্বের প্রায় সব সরকারি ব্যবস্থাই কোনাে না কোনাে রকম আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা। উন্নয়নশীল দেশগুলােতে আমলাতন্ত্রকে প্রশাসনের হৃদযন্ত্র হিসাবে অভিহিত করা হয়। আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষের যুগে জনমনে চিন্তা-চেতনা, আশা-আকাঙ্খা ও চাহিদার ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তা মূলত আমলাতন্ত্রের প্রভাবেই।

আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যঃ নিম্নে আদর্শ প্রকৃতির আমলতান্ত্রিক সংগঠনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আলােচনা করা হলাে-

(১) আমলাতান্ত্রিক সংগঠনের উদ্দেশ্যঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠনের উদ্দেশ্য অর্জনের নিমিত্তে প্রয়ােজনীয় কার্যকে অফিসের দৈনন্দিন কর্তব্যরূপে নির্দিষ্ট করে বন্টন করে দেয়া হয়।

(২) কর্ম-পরিধিঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠনে একটি সুনির্দিষ্ট কর্ম-পরিধি বিদ্যমান থাকে। এতে প্রতিটি কর্মচারি তার স্ব-স্ব নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কার্য সম্পাদন করে। আইনের মাধ্যমে এই কর্ম-পরিধি নির্ধারিত হয়।

(৩) পদক্রম নীতিঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠন পদক্রম নীতি (Prinicple of Hierarchy) অনুসরণ করে। সহজ কথায় এর অর্থ হচ্ছে এই সংগঠনে ঊর্ধ্বতন অধস্তন সম্পর্ক বিরাজ করে।

(৪) মেধা ও যােগ্যতার মূল্যায়ণঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠন কর্ম বিভাগ এবং কর্ম বিশেষীকরণের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।

(৫) টেকনিক্যাল জ্ঞানঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠনে কর্মচারীদের টেকনিক্যাল জ্ঞানের ভিত্তিতে নিয়ােগ করা হয়। কর্মচারিদের এই জ্ঞান লিখিত পরীক্ষা বা টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেটের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। আমলাতান্ত্রিক সংগঠনে টেকনিক্যাল জ্ঞান ও যােগ্যতার ভূমিকা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

(৬) নিয়ােগ নীতিঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠন নিয়ােগ নীতির দ্বারা পরিচালিত হয়। এতে কর্মচারিদের নির্বাচন করা হয় না; তাদের নিয়ােগ করা হয়।

(৭) প্রশাসনিক কর্মচারীঃ যেসব নিয়মাবলি আমলাতান্ত্রিক সংগঠনের ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে সেগুলাে টেকনিক্যাল নিয়মাবলি বা আইন।

পরিশেষঃ পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, উন্নয়নশীল দেশগুলােতে আমলাতন্ত্রকে প্রশাসনের হৃদযন্ত্র হিসাবে অভিহিত করা হয়। আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষের যুগে জনমনে চিন্তা-চেতনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদার ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তা মূলত আমলাতন্ত্রের প্রভাবেই।