অথবা, আত্মসুখবাদ ও পসুখবাদের মধ্যেকার বৈসাদৃশ্যগুলাে তুলে ধর।
ভূমিকাঃ নৈতিক সুখবাদ নৈতিক আদর্শ সম্পৰ্কীয় একটা মতবাদ। এই মতবাদ অনুসারে সুখই মানব আচরণের চরম কাম্য। সুখই একমাত্র গুণ, যার মাধ্যমে একটা অভিজ্ঞতা ভাল বা মূল্যবান হয়ে থাকে। সব মানুষেরই সুখের অন্বেষণ ও দুঃখকে পরিহার করা উচিৎ। নৈতিক সুখবাদের প্রধানত দুটি রূপ রয়েছে। যথা- ক, আত্মবাদী সুখবাদ ও খ. পরার্থবাদী সুখবাদ।
আত্মসুখবাদ ও পরসুখবাদের মধ্যে পার্থক্যঃ নিম্নে আত্মসুখবাদ ও পর সুখবাদের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলোঃ
প্রথমত, আত্মসুখবাদ অনুসারে প্রতিটি মানুষের কেবল তার নিজের সর্বাধিক পরিমাণ সুখ কামনা করা উচিৎ।
অপরপক্ষে, পরসুখবাদ অনুসারে সর্বাধিক সংখ্যক লােকের জন্য সর্বাধিক পরিমাণ সুখ আমাদের কামনা করা উচিৎ।
দ্বিতীয়ত, সুখের প্রকৃতি সম্পর্কে মতভেদের ফলে আত্ম সুখবাদের প্রাচীন রূপের মধ্যে দুটি ভিন্ন ধারা পরিলক্ষিত হয়। যথা- ১. সিরেনিকবাদ ও ২. এপিকিউরীয়বাদ।
পক্ষান্তরে পরসুখবাদ সুখের পরিমাণ নির্ধারণ করতে গিয়ে তিন রকমের পরসুখবাদের সৃষ্টি হয়েছে। যথা ১. স্কুল পরসুখবাদ, ২. সংকত পরসুখবাদ ও ৩. বিবর্তন সম্মত পরসুখবাদ।
ততীয়ত, আত্মসুখবাদের প্রবর্তক প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক এপিকিউরাস এবং আধুনিক যুগের সমর্থক হবস, ম্যান্ডেভিলে।
অপরপক্ষে, পরসুখবাদের প্রবর্তক জেরেমী বেনথাম, জন স্টুয়ার্ট মিল ও হেনরী সিজউইক।
উপসংহারঃ সবশেষে বলা যায় যে, নৈতিক সুখবাদ নীতিবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি কাজ তখনই ভাল হয় যদি তা সুখের সহায়তা হয় এবং একটি কাজ তখনই মন্দ হয় যদি তা সুখকে ধ্বংস করে। তাই ভাল-মন্দ নির্ণয়ের জন্য নৈতিক সুখবাদ বিশেষ ভূমিকা রাখে।
Leave a comment