আকরিক থেকে কোবাল্ট নিষ্কাশন কয়েকটি ধাপে করা হয়। 

গাঢ়ীকরণঃ  আকরিককে প্রথমে বিচূর্ণ করে তেলফেনা ভাসমান পদ্ধতিতে গাঢ়ীকরণ করা হয়। 

তাপজারণঃ গাঢ়ীকৃত আকরিককে তাপজারিত করলে আকরিকের মধ্যস্থ সালফার জারিত হয়ে SO₂ এবং আর্সেনিক জারিত হয়ে As₂O₃ হিসেবে দ্রবীভূত হয়। আবার FeS জারিত হয়ে FeO উৎপন্ন হয়। 

S + O₂ —–> SO₂

4As + 3O₂ —–> 2As₂O₃

2FeS + O₂ ——> 2FeO + 2S

বিগলন পদ্ধতিঃ তাপজারিত আকরিকের সাথে সিলিকা ও চুনাপাথর মিশ্রিত করে বাত্যাচুল্লিতে বিগলিত করা হয়। গলিত স্তুপের উপরিভাগে CaSiO₃ ও FeSiO₃ উৎপন্ন হয়। 

CaO + SiO₂ —-> CaSiO₃

FeO + SiO₂ —–> FeSiO₃

অন্যদিকে গলিত তরলের নিচে Co,  Ni, Cu এর সালফাইড সমূহ জমা হয়। এই সালফাইড মিশ্রণকে স্পাইস বলে।

NaCl এর সাথে তাপজারণঃ এরপর স্পাইসকে বের করে এবং বিচূর্ণ করে একটি পরাবর্তক চুল্লিতে তাপ জারিত করলে As ও S যথাক্রমে As₂O₃ ও SO₂ রূপান্তরিত হয়। অবশিষ্ট অংশের অধিক NaCl সাথে মিশ্রিত করে পুনরায় তাপ জারিত করলে  Co, Ni, Fe, Ca প্রভৃতি ধাতুর যৌগ সমূহ ক্লোরাইডে পরিণত হয়।

Fe ও Cu পৃথকীকরণঃ ধাতুসমূহের ক্লোরাইড মিশ্রণকে ফুটন্ত পানিতে দ্রবীভূত করা হয়। পরিস্রুত দ্রবণে চুনাপাথর যোগ করলে আয়রন ক্লোরাইড FeCO₃ হিসেবে অধঃক্ষিপ্ত হয়। অধঃক্ষেপ পৃথক করার পর প্রাপ্ত পরিস্রুতের মধ্যে সোডিয়াম কার্বনেট ( NaCO₃) দ্রবণ যোগ করলে কপার ক্লোরাইড CuCO₃ হিসেবে অধঃক্ষিপ্ত হয়। এরূপে প্রাপ্ত পরিস্রুত এর মধ্যে দ্রবণে Co ও Ni ক্লোরাইড অবিকৃত অবস্থায় থাকে। 

Ni ও Co পৃথকীকরণঃ Ni ও Co ধাতুর ক্লোরাইডের দ্রবণকে সাবধানতার সাথে কলিচুন ও ব্লিচিং পাউডার সহযোগে উত্তপ্ত করলে সমস্ত CoCl₂ অদ্রবণীয় Co(OH)₃ হিসেবে অধঃক্ষিপ্ত হয় এবং NiCl₂ দ্রবণে থেকে যায়। 

CoCl₂ + Ca(OH)₂ —-> Co(OH)₂ + CaCl₂

2Co(OH)₂+Ca(OCl)Cl+H₂O —->   2 Co(OH)₃ + CaCl₂

প্রাপ্ত Co(OH)₃ এর অধঃক্ষেপকে শুকানোর পর পোড়ালে Co₃O₄ উৎপন্ন হয়। 

12Co(OH)₃ —–> 4Co₃O₄ + 18H₂O + O₂

বিজারণঃ  Co₃O₄ কে কোক কার্বনসহ চুল্লিতে উত্তপ্ত করলে এটি বিজারিত হয়ে কোবাল্ট ধাতুতে পরিণত হয়।

Co₃O₄ + 4C —–> 3Co + 4CO