বাংলা গদ্যের বিকাশে সবুজপত্র পত্রিকার অবদান মূল্যায়ন কর

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের বিকাশে সাময়িক পত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলা গদ্য প্রচলনের পর পরই সাময়িক পত্র প্রকাশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। বলাবাহুল্য, সকল সাময়িক পত্রের উপযোগিতা সমান ছিল না। কিছু সংখ্যক পত্রিকা ছিল যা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে যুগান্তর ঘটাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। প্রমথ চৌধুরীর ‘সবুজ পত্র’ তেমনি একটি অসাধারণ সাময়িক পত্র। ১৯১৪ সালে ‘সবুজ পত্র’ প্রথম প্রকাশিত হয়।

পত্রিকাটি প্রকাশের ব্যাপারে সম্পাদকের মন্তব্য হলো “আমাদের বাংলা সাহিত্যের ভোরের পাখিরা যদি আমাদের প্রতিষ্ঠিত সবুজপত্র মণ্ডিত সাহিত্যের নব শাখার উপর এসে অবতীর্ণ হন, তাহলে আমরা বাঙালি জাতির সবচেয়ে যে বড় অভাব তা কতকটা দূর করতে পারব। সে অভাব হচ্ছে আমাদের মনের ও চরিত্রের অভাব।” একটা নতুন কিছু করার জন্য নয় বা বাঙালির জীবনে যে নতুনত্ব এসে পড়েছে, তাই পরিষ্কার করে প্রকাশ করার জন্য সবুজ পত্রের প্রতিষ্ঠা করা হয়।

সবুজ পত্রের পাতায় প্রমথ চৌধুরী ‘বীরবল’ ছদ্মনামে তাঁর অনবদ্য রচনাগুলো প্রকাশ করেছিলেন। এ পত্রকে ঘিরেই বাংলা গদ্যের চলিত রীতির বিকাশ ও প্রচলন ঘটে। বস্তুত বাংলা চলিত রীতিকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং প্রতিষ্ঠা করার পিছনে সবুজ পত্রের অবদান অনস্বীকার্য। ‘সবুজ পত্র’কে ঘিরে একটি লেখকগোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এতে নিয়মিত লিখতেন। পত্রিকাটি বুদ্ধিজীবী পর্যায়ের সাহিত্যিকদের কেন্দ্রস্বরূপ বিবেচিত হতো। এ পত্রিকায় প্রমথ চৌধুরী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাড়াও যাঁরা লিখতেন তাঁদের মধ্যে অতুলচন্দ্র গুপ্ত, ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, সতীশচন্দ্র ঘটক, ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী, বিশ্বপতি চৌধুরী প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।

5/5 - (3 votes)