শিক্ষা একটি সচেতন ও সুপরিকল্পিত সামাজিক প্রক্রিয়া। বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব স্বীকার করে নিয়েছে যে, ব্যক্তিকে সার্থকভাবে জীবনযাপন করতে হলে তার ন্যূনতম শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়ােজন, অন্যথায় সে নিজের দায়দায়িত্ব, অধিকার, কর্তব্য সম্পর্কে যথাযথভাবে অবহিত হয় না। এই ন্যূনতম শিক্ষাই হল প্রাথমিক শিক্ষা। তাই পৃথিবীর প্রতিটি দেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে আবশ্যিক করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। শিশুর বিকাশে এই শিক্ষার গুরুত্বগুলি হল一

(১) প্রাথমিক শিক্ষা শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ সমাজের একজন স্বনির্ভর ও দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে গড়ে তােলে। বর্তমান সভ্য সমাজে বাস করতে হলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাই ন্যূনতম প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

(২) সাধারণভাবে লিখতে পারা, পড়তে পারা এবং দৈনন্দিন। জীবনে হিসাবপত্র করার জন্য প্রত্যেক মানুষের প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়ােজন হয়।

(৩) শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশ এবং ভবিষ্যৎ জীবনে জীবিকা অর্জনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অপরিহার্য।

(৪) রাষ্ট্রের প্রশাসনে প্রার্থী নির্বাচনের জন্যও এবং গণতন্ত্র সম্পর্কে মৌলিক ধারণা গঠনের জন্যও প্রতিটি মানুষের প্রাথমিক শিক্ষালাভ করা দরকার।

(৫) বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে প্রাথমিক শিক্ষা না পেলে, কোনাে নিম্নস্তরের কাজও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। নিম্নমানের যে-কোনাে বৃত্তি অবলম্বন করতে গেলেও প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়ােজন হয়।

(৬) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রয়ােগের মাধ্যমে ব্যক্তির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা প্রয়ােজন।

(৭) ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার, দায়দায়িত্ব, সুযােগসুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা প্রয়ােজন।

(৮) পরবর্তী উচ্চতর শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করাও প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

উপরিউক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে প্রাথমিক শিক্ষা ছাড়া আজকের দিনে সার্থকভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়।

Rate this post